somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোজা কথা, সহজ কথা

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে এই কথা নিশ্চয়ই সত্য! যদি সত্য হয় তাহলে পাকসেনাদের দোসর ছিল রাজাকার, আলবদর, আলশামস সেটাও তো সত্য। তাহলে তারা অপরাধী আর সে অপরাধের বিচার হওয়া দরকার। এখন আমি খুব সিম্পলি একটা ব্যাপার জানতে চাই-পূর্বপাকিস্তানের মানুষ স্বাধীনতা চাইল কেন? পশ্চিমপাকিস্তানের শাষনের কারনে পূর্বপাকিস্তানীগণ নাস্তিক জীবনযাপন করতে পারছিল না বলে নাকি আর্থসামাজিক ভাবে পশ্চিমপাকিস্তান কর্তৃক শাষনের নামে শোষিত হচ্ছিল বলে? যদি আর্থসামাজিক শোষনের জন্য হয় তাহলে মুক্তিযুদ্ধ নিঃসন্দেহে যৌক্তিকভাবে অবধারিত ছিল! এই যুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল যারা তারা কী কারনে সেটা করেছিল? ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের অখন্ডতা বিনষ্ট হবে সেই ভয়ে? কিন্তু পাকিস্তানের অখন্ডতা নষ্ট হয়েছে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে-ইসলাম কী নষ্ট হয়েছে? বরং প্রাক্তন পশ্চিম পাকিস্তান অর্থাত বর্তমান পাকিস্তানে তো শিয়া-সুন্নির প্রতিহিংসা পরায়নতায় অশান্তি লেগেই আছে। সেই তুলনায় আমরা বাংলাদেশে যথেষ্ট সহনশীলতায়, শান্তিতে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে অনেক ভাল আছি। ৯৫ শতাংশ মুসলিম মানুষের এই দেশে ইসলাম অন্য যে কোন মুসলিম দেশের চাইতে খারাপ অবস্থায় নেই, এ দেশেই তো সৌদি আরবের মত ইসলামী শাষন ব্যবস্থা না থাকা সত্বেও র্নিবিঘ্নে বিশ্ব এস্তেমার মত বিশ্বের দ্বিতীয় মুসলিম জমায়েত হয় প্রতি বছর। আর মুক্তিযুদ্ধপূর্ব পাকিস্তানে কী ইসলামী শাষন ব্যবস্থা কায়েম ছিল? তাহলে মুক্তিযুদ্ধের সময় এর বিরোধীতা করে নিজের দেশের মানুষের সাথে গাদ্দারী করে পাকসেনাদেরকে সহযোগীতা এবং নির্বিচারে মানুষ খুন, লুটপাট আর ধর্ষন বা এ জাতীয় কর্মে সংগঠিত ভাবে মদদ দানের মানে কী? মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থেকে ইসলামিক চেতনায় জগ্রত হয়ে ভ্রাতৃপ্রতিম শক্তি হিসেবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বাধীনতায় সহযোগীতা করলে দেশে কী অনেক কম লোক শহীদ হতো না! এবং যুদ্ধপরবর্তি স্বাধীন দেশে বুক ফুলিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা আরো সহজতর হতো না? ৯৫% সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে আমি খারাপ ভাবে দেখিনা যদি তা না হয় ধর্মের নামে কপটতা আর গোড়ামী। বরং সত্যিকারের 'ইসলাম' বা 'শান্তি' প্রতিষ্ঠায় আমার কাম্য। আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারি, আমার কর্মস্থলে অফিস চলাকালিন প্রত্যেক ওয়াক্তেই জামাতে নামাজ আদায় করা হয় এবং প্রায় প্রত্যেকটা সহকর্মী নিয়মিত নামাজ আদায় করেন কিন্তু তারা কেউই তো কোন ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের অংশ নন!
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখা গুলো পড়লে নিজেকে অস্থির লাগে। অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে শুধু রাজনৈতিক ভাবে পশ্চিমপাকিস্তানের পক্ষ সমর্থন না করে দেশপ্রেমের জন্য হত্যা করা হয়েছে। যে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য পাকিস্তান বর্বরাচিত হত্যা আর নিপীড়ন চালিয়েছিল বাঙালীদের উপর সে ফায়দা তারা লুটতে পারেনি আর সেই অপরাজনৈতিক উদ্দেশ্যের যারা বাঙালী হয়েও বেঈমানী করেছে বাঙালীদের সাথে তাদের শাস্তি অবশ্যই কাম্য। আওয়মীলিগ নির্বচনী মেনিফেস্টোতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আশ্বাস দিয়েছিল বলে নতুন প্রজন্মের বিপুল ভোট পেয়েছিল। যখন এ সরকারের গঠিত ট্রাইবুনাল থেকে দায়সারা গোছের রায় আসতে শুরু হয়েছিল তখন সেই নতুন প্রজন্ম রাস্তায় নেমে এসেছিল অথচ আওয়ামীসরকার বেহায়ার মত এই প্রজন্মকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। যে সরকার বিশ্বজীত খুনের মত প্রকাশ্য দিবালোকে ছাত্রলীগের মানুষ খুন করার বিচার করতে গড়িমসি করে, সাগর-রুনির খুনিদের ধরতে টালবাহানা করে তাদের কাছ থেকে এই তরুন প্রজন্ম শুধু আবেগের বশেই হয়তো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আশা করে। আর বিরোধীদল 'আওয়মীলিগের ভেতরের রাজাকারদের দিয়ে বিচার শুরু করা'র ধুয়ো তুলে যুদ্ধাপরাধীদেদর প্রশ্র্রয় দেয়ার বিতর্কে নেমে পানি ঘোলার চেষ্টা করছে নিরন্তর। জামাত-শিবিরের সোনার ছেলেদের মিথ্যাচার আর খেটে খাওয়া অতি-সাধারন মানুষকে ভুলভাল বুঝিয়ে পুলিশের গুলির মুখে ঠেলে দিয়ে গনহত্যার ইস্যু তৈরির মাধ্যমে মুক্ত করতে চায় তাদের মহান(!) নেতাদের। জানিনা কী ঘটবে। তবে নিরন্তর আশা সমস্ত পলিটিক্যাল ফায়দা লুটার উর্দ্ধে গিয়ে একদিন যুদ্ধাপরাধীর বিচার হবেই না হলে মুছে যাবে সোনার বাংলার জন্মক্ষনের ত্যাগ আর মহিমান্বিত ইতিহাস। আওয়মীলিগ যদি পক্ষপাত দুষ্ট হয়ে তাদের ভেতরে থাকা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নাও করে আমি আশা করি বিএনপি যেন ক্ষমাতায় আসলে সেই কাজটুকু করে। আজ অথবা কাল নতুবা পরশু অপরাধীরা সাজা পাবেই। ধর্ম এবং ধর্মীয় সহনশীলতা, মার্জিত আধুনিকতা, নিজস্ব সংস্কৃতি আর অপার দেশপ্রেমের সম্মিলনে নিশ্চয়ই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে আমার মাতৃভূমিতে্। প্রার্থনা করি যেন বন্ধ হয় পলিটিক্যাল হিসু করে টিস্যু ছোড়াছুড়ির সব নোংরামী।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×