somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেষ পর্যন্ত টাকাই সব কিছুর চালিকাশক্তি...

১৫ ই মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনি ব্লগার, চিন্তায় ও মননে সচেতন। দেশের কথা ভাবেন, দেশ যে ঘুন পোকায় খেয়ে ফেলেছে সেটা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন লেখালেখির মাধ্যমে। কিন্তু আপনার টাকা নেই।

আপনি মনে মনে ভাবেন, দেশটাতে ঘুনপোকা ধরলেও 'জনগন' বলে একটা জিনিস আছে হয়তো যারা এক দিন না একদিন ঠিকই জাগ্রত হবে। ঘুনপোকাদের ফিনাইলে চুবিয়ে আবার হয়তো সোনার বাঙলায় ফিরে যাবেন।

দেশের জনগনের প্রতিচ্ছবি সরকার, সরকারের গায়ে প্রগতিশীলতার বিশাল তক্‌মা। আপনি তকমা দেখে সরকারের ওপর ভরসা করে দেশ, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলেন। আত্মপ্রসাদে ভোগেন, তবুও তো কিছু বলছি।

ওদিকে দেশ খেয়ে ফেলছে ঘুনে। ঘুনের হাতে অনেক টাকা, শত শত কোটি টাকা আসে নিকটবর্তী মরুভূমি থেকে, ঘুনের গলা বড়ো উচ্চ। ঘুন কিনে নিয়েছে, তৈরি করেছে একই রাবণের বহু মাথার মতো অসংখ্য পত্রিকা, মিডিয়া, টিভি, ব্লগ, ফেসবুক পেজ, দল, গোষ্ঠী, তেলজীবি, সুশীল। ঘুনে ঘুনে দেশ ঘুনময়। যাবেন কোথায়।

চার দশক আগে কি হয়েছিলো দেশে এ নিয়ে আপনার মাথাব্যথা থাকলেও, ঘুনের ওই অসংখ্য মুখে উল্টোবয়ান শুনে শুনে দেশের উঠতি প্রজন্ম, তরুণ প্রজন্ম ভুলে যেতে থাকে সবকিছু। তার ওপর আছে বিপুল সংখ্যক প্রথার প্রতি আবদ্ধ বুড়ো জনসংখ্যা, যারা সবার আগে পরকালকে প্রাধান্য দেয়। ওদিকে ঘুনের সাঙ্যাৎ মিছিল করে, অন্য জাতের ঘুনের গায়ে আগুন দেয়, খুন করতে থাকে অহরহ।

সরকার যেহেতু জনগনের প্রতিচ্ছবি, পরকালভীত দেশনেত্রীর প্রধান মনযোগ থাকে দেশ ও জনগনের পরকাল নিশ্চিত করবার লোভের দিকে। ওদিকে পরকাল ছাড়াও যে দেশের, জনগনের অন্য অনেক কিছু নিশ্চিত করবার মানসে এই রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিলো, তা ভুলে যেতে থাকে আমাদের সরকার। মুখে এক কথা, আর কাজে আরেক, সেই ঘুনপিয়াসী সরকার গাছে তুলে দেয় তরুণ প্রজন্মকে। সেই গাছের গোড়ায়ও যখন ঘুনে ধরে যায়, আস্তে করে মইটা সরিয়ে হিমাগারে পাঠিয়ে দেয় আমাদের 'ভেতরে ঘুনে ধরা' অথচ 'টোপরে প্রগতির পেখম লাগানো' সরকার ।

ওদিকে গাছের ওপর হতচকিত, অসহায়, হতাশ তরুণ প্রজন্ম শিখে নিতে থাকে কিভাবে ঘুনের সাথে বসবাস করতে হয়। ঘুনের হাত থেকে বাঁচতে কিভাবে নাম বদলে ফেলতে হয়, কিভাবে ফেসবুক একাউন্ট ডি-এক্টিভেট করে ফেলতে হয়।

তরুণের তারুণ্য এই ঘুনে ধরা পৃথিবীতে এক আপদের অপর নাম। মুক্তি'র চেতনা আজ এক অসহ্য অশ্লীল বেদাতের নাম। হাঁটুগেঁড়ে বসে পড়া তারুণ্য আজ মিটিঙের ভিখ মাগে ঘুনের কারবারীর কাছে, অতি অবশ্যই তরুণ লাথি সহযোগে বিতাড়িত হয়, অপমানিত হয়, ঘুনের কাছে বারবার পরাজিত হতে থাকে।

শতমুখী ঘুনের দানব তান্ডব করতে থাকে দেশজুড়ে। একই সাথে তান্ডবের ক্ষয়ক্ষতির দায় সরকারের ঘাড়েই চাপিয়ে পৃথিবীজুড়ে আর্তনাদ করতে থাকে বিশ্বঘুনের শতমুখী পত্রিকা/মিডিয়া/ব্লগ/ওয়েবসাইট/পেজ। পুরো বিশ্ব জেনে যায়, 'ঘরে আগুন দিতে আসা ঘুনের ওপর পুলিসের আত্মরক্ষার্থে করা গুলিতে' নাকি গনহত্যা চলছে। পরকালের ভয়ে আত্মবিস্মৃত সরকারও ঘুন বিষয়ে মুখে আঁটি বাঁধে, কানে দেয় তুলো।

প্রতিটি তরুণকে ধরে ধরে নতুন করে খাসি করানো হতে থাকে আতঙ্কের জং ধরা ব্লেড দিয়ে, নতুন করে খাসি হওয়া তরুণ প্রতিজ্ঞা করে আর কোনোদিন তারা মুক্তির কথা ভাববে না, ইতিহাসের হত্যাযজ্ঞ বিষয়ে মুখ খুলবে না, মায়ের ধর্ষনের কথা বলবে না, অর্থ ও শক্তিতে বলীয়ান হত্যাকারী ঘুনপোকাদের বিচার চাইবে না।

তারা প্রাণের উচ্চমূল্য দিয়ে তারপর জানতে পেরেছে, বুঝতে পেরেছে, কেন সেই হত্যাকারী ঘুনপোকারা বার বার বেঁচে যায়। তারা বুঝতে পারে ঘুনপোকা চরিত্র দেশজুড়ে ৯০ ভাগ নাগরিকের। তারা ঘুনপোকাদের শতকণ্ঠের চিৎকার ভেদ করতে চায় না।

ঘুনপোকারা যাই বলবে, নাগরিকের সরকার, পরকালের ভয়ে আহ্লাদী নেত্রীর সরকার, মুখে বাক-স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতার গান গাওয়া সরকার তা ই মেনে নিতে থাকবে। মরুভূমি থেকে ঘোড়ায় চড়ে তলোয়ারবাজি করে আসা ঘুনের দঙ্গলের সামনে দাঁড়িয়ে, বাঁজখাই গলার অশিক্ষিত ঘুনের সর্দারের সামনে নির্বাচিত-শক্তিশালী সরকার ম্রিয়মান হয়ে তরুণদের হত্যার দৃশ্য থেকে চোখ সরিয়ে নিতে থাকে।

একাত্তরে ঘুনের নখর থেকে মুক্তিপাগল বাঙালীর রক্ত-প্রাণ-মর্যাদার মূল্যে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ আজ ঘুনের খোয়াবে পরে ফিরিয়ে দিতে থাকে দেশটা, সেই একই ঘুনের থাবায়।

হা হতোষ্মি!
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×