somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

:|*~ সাদা পান্জাবীতে রহস্যময় লিপস্টিক চিহ্ন ~*//:|

১১ ই মে, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজকে আম্মুর সাথে ফোনে এটা সেটা নিয়ে কথা বলছিলাম, এমন সময় হঠাৎ আম্মু জিজ্ঞেস করলো - সামনের ঈদে কি পান্জাবী পরবা ? ... আমি বললাম - এখানে যে শীত তাতে করে পান্জাবী পরে ঈদ করা সম্ভব না , আর অনেক দিন না পরার কারনে এখন কেমন জানি পরার ইচ্ছাটাও হারিয়ে গেছে ... আম্মু বললেন - যদি ইচ্ছা হয় তাহলে বলো, একটা পাঠিয়ে দিবো ... আমি বললাম -- আচ্ছা ... আবার আম্মু বললেন -- কি রং এর চাও সেটাও জানিয়ে দিও ....... এইবার পড়া গেল মহা ফ্যাসাদে ...যখন ছোট ছিলাম তখন পরতাম রং বেরং এর পান্জাবী, একটু বড় হয়ে পরতাম শুধু সাদা, আবার কখনো কখনো শখ করে অন্য রং এর পান্জাবীও পরেছি, কিন্তু এখন তো মাথায় ই আসছে না কি রং এর কথা বলি ... ঘুরে ফিরে মাথায় খালি সাদা রংটির নাম ই আসছে ... সেই সাথে কতশত স্মৃতি .... এর মাঝে একটি ছিল একটু অন্যরকম :| .....

একবার এক খুব কাছের বন্ধুর বড় ভাই বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম সেদিন .... আমরা সবাই একসাথে বিয়ে বাড়ি পৌছে দেখি বিশাল আয়োজন, চরম এলাহী কান্ড ... গেটে পৌছে যথারীতি দেখি উনার শালা শালীরা সব গেট ধরে দাড়িয়ে আছে .... টাকা না দিলে নাকি গেট ছাড়বে না .... আমরা গেট মানি হিসেবে ২৫,০০০ এর মতো ধরে রেখেছিলাম... প্রথমে ওরা ডিমান্ড করছিল ২০,০০০ না দিলে কোন মতেই ছাড়বে না ... আমাদের আইডিয়া থেকে ওদের ডিমান্ড কম দেখে আরো কমানোর জন্য আমার বন্ধুরা সবাই চাপাচাপি শুরু করলো কত কম টাকা দিলে গেট ছাড়বে ..... একসময় সেটা কমতে কমতে ১০,০০০ এ নামলেও আমাদের ফ্রেন্ডরা আরো কমানোর জন্য চাপাচাপি করছিল ...

বেশ খানিক্ষন এমনে চলতে থাকলে, এক পর্যায়ে আমি ওদেরকে জিজ্ঞেস করলাম --- টাকা দিলে আপনারা কি করবেন ?
উত্তর এলো -- আমরা এই কেঁচি জামাই বাবুর হাতে দিবো এর পরে উনি ফিতা কেটে ভিতরে ঢুকবেন,
আমি বললাম --- কেঁচি দিয়ে ফিতা কাটলেই সব ঝামেলা শেষ তো ?
ওরা বললো --- হ্যা ... এর পরেই আপনাদেরকে আমরা ভিতরে ঢুকতে দিবো, এর আগে না ...

আমি এক হাতে টাকা নিয়ে আরেক হাত পকেটে ঢুকায়ে , আগে থেকে পকেটে রাখা একটা কেঁচি বের করে বললাম বড় ভাইয়াকে বললাম --- নেন ভাইয়া, ঝামেলা শেষ করেন, ফিতা কাটেন তো ....
অমনি শুরু হলো হট্টগোল --- না না না .... জামাইকে ঐ কেঁচি দিয়ে ফিতা কাটতে দেয়া হবে না ....
আমি বললাম -- আচ্ছা ঠিকাছে, জামাই এর পক্ষ থেকে আমি কেটে দিচ্ছি ....

এটা বলেই আর দেরি না করে হাতে ধরা কেঁচি দিয়ে দিলাম ঘ্যাচ করে ফিতা কেটে .... ব্যাস আর কৈ যায় ... রিতিমত কুরুক্ষেত্রের মত অবস্হা তৈরী হয়ে গেল .... ওদিকের ভিতরে থাকা মুরুব্বিরা এত দেরী আর হট্টগোল শুনে এসে দেখে এই কান্ড, উনারা হাসতে হাসতে আমাদের ভিতরে নিয়ে গেলেন, আর আমরা ভাইয়ার শালা শালীদের অগ্নি দৃষ্টির উপরে ভেংচি কেটে বীর দর্পে ঢুকে পড়লাম বিয়ে বাড়ীতে ...একদিকে এই কান্ড তার উপরে বরের ছোটভাই এর ক্লোজ ফ্রেন্ড হিসেবে আমি সবটুকু সময় বেশ সমাদর আর নিরাপত্তা দুটোই পেয়েছিলাম ও বাড়ীর মুরুব্বিদের কাছে ...

যাই হোক, রাতের খাবার দাবারের পর আমরা আবার একটু ধোয়া উৎসব করার জন্য ওই বাড়ীর ছাদে উঠে একটু অন্ধকার কোনে গিয়ে বন্ধুরা সবাই একসাথে মশাল জ্বালিয়ে নিজেদেরকে গরম করে নিচ্ছি ... এমন সময় দেখি আমাদের চারপাশে বড়ভাই (জামাই) এর কয়েকজন শালা শালীর হাজির হয়েছে ...সামনে পিছনে সব জায়গাতেই ওরা আর আমরা মাত্র কয়েকজন .... এদের সাথেই সেই সময় ঝামেলা করার কারনে বাটে পেয়ে কিছু করে কিনা চিন্তা করছি, এমন সময় দেখি তারা চরম ভাল ব্যবহার করছে , হাসি মুখে মজার মজার কথা বলছে , আনন্দ করছে ..... ব্যাপারটা কেমন জানি খটকা লাগতেই সেখান থেকে কেটে পড়লাম আবার আলো ঝলমল স্টেজের দিকে ... এরপর থেকে ওখান থেকে ফেরা পর্যন্ত অনেকেই দেখি আমার দিকে তাকায়ে কেমন একটা মুচকি হাসি দিচ্ছে ... ঘটনা কিছু না বুঝেই এক দোস্তরে আসকাইলাম ঘটনা কি রে ? .... হারামজাদা নিজেও মুচকি হেসে বলে কিছু না দোস্ত, এভরিথিং ইজ ওকে ....


আসল ঘটনা বুঝতে পারলাম পরের দিন যখন আম্মু আমার রুম থেকে পান্জাবী নিয়ে যাচ্ছিলেন ধোয়ার জন্য ... ঘর থেকে বেরোনোর সময় হঠাৎ উনি জিজ্ঞেস করলেন --- কিরে পান্জাবীর পিছনে এত গুলো লম্বা লম্বা চুল ক্যান ?

আমি বললাম -- কৈ ?

আম্মু বললো -- এই যে এত্তোগুলো ...

আমি আরো ম্যুডের সাথে বললাম -- নিজের চুল সব মাথা থেকে ঝরে আমার পান্জাবীতে ফেলে এখন আমাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে এগুলো কার চুল ?

আম্মু খানিক্ষন পরে পান্জাবীটার পিছনের সাইড উঁচু করে ধরে বললেন --- তাইলে কি এই লিপস্টিকের দাগ গুলোও আমি দিসি নাকি ? X(

:| :| :|


সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪৪
৪৮টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×