আমি মনে করি:
১. যতক্ষণ রাস্তায় যানবাহন থাকবে, ততক্ষণ জ্যাম থাকবে। তাই যত দ্রুত যানবাহন সরিয়ে দেয়া যাবে, ততই জ্যাম কমবে।
২. যতক্ষণ এলোমেলো পার্কিং থাকবে, ততক্ষণ গতির ধীরতা থাকবে। তাই পার্কিং স্পট তৈরী করতে হবে।
৩. যতক্ষণ বিভিন্ন গতির / ক্ষমতার বাহন থাকবে একই রাস্তায়, কম গতির বাহন, বেশি গতির বাহনের গতি কমিয়ে দেবে। ফলে গড় গতি কমে যাবে।
৪. চৌ রাস্তা বা ক্রস লেন গুলোতে সড়ক বাতি দিতে হবে। যে যার মত সোজাসুজি ক্রস করতে গেলে গিট্টু লেগে যায়।
৫. U ট্রান ঘন গন দিতে হবে।
৬. বামের লেনে যাবার জন্যে কোন ট্রাফিক বাধা রাখা যাবে না। বামের যাবার রাস্তার মোড়ে কেউই গাড়ি থামাতে পারবে না।
৭. সড়কে কোন ব্যবসা চলবে না। কেউ ভাড় রাখবে, কেউ বেলুন নিয়ে হাটবে, কেউ টেবিল মার্কেট বানাবে, সেটা চলবে না।
৮. সমস্ত সড়কে গতি প্রতিরোধক তুলে নিতে হবে...
উদাহরন হিসেবে আমি দুটি শহরের কথা বলব: সিলেট আর বগুড়া
১. সিলেটে ৩১ টি লিঙ্ক রোডের ঢোকার মুখে পাইপের বেরিকেট দেয়া হয়েছে। ওসমানী মেডিকেলে যেখানে ১০ মিনিটে ঢোকা যেত, এখন ৩০-৪৫ মিনিট লাগে, বিভিন্ন রোড দিয়ে ঘুরে ঘুরে যেতে, কারন লিঙ্ক রোডে ঢোকার মেইন রোডের মুখ বন্ধ। আবার যে কার/মা্ইক্রবাস ৫মিনিটে বাসায় গ্যারেজ করতে পারত লিঙ্ক রোড খোলা থাকলে, কিন্তু বর্তমানে তাকে ১ ঘন্টা জ্যামের ভেতর থেকে ঘুরে ঘুরে যেতে হয়। কখনও অন্য গাড়ি চিপা দিয়ে যাবার সময় চ্যাকা দিয়ে, আবার কখনও ঘোসা দিয়ে চলে যায়...
২. বগুড়াতে ৬টি লিঙ্ক রোডে Walton, Minister ইত্যাদির এ্যাডভিত্তিক বেরিকেট দেয়া হয়েছে। যেখান থেকে এ্যাডের বিপরীতে টাকা পায়। বিনিময়ে আমজনতাকে হাফ কিমি কখনও ১ কিমি দূরে গিয়ে U ট্রান নিয়ে ২০ হাত দূরের জায়গায় নামতে হয়। কারন হাটার রাস্তাও বন্ধ করা হয়েছে এই বেরিকেট দিয়ে। আর অসহনীয় জ্যাম তো আছেই।
৩. ট্রাফিক পুলিশ (৩-৬ জন) শুধু সেখানেই দাঁড়ায় যেখানে বাস ট্রাক পাস করে। তাদের সাথে হ্যান্ড সেক করে, পুরোনো বন্ধুর মত। এদিকে যেখান টায় দরকার একজন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রকের , সেখানে হাওয়া... সেখানে হ্যান্ড সেকের বন্ধুদের পাওয়া যায় না।
৪. শহরে নেই কোন স্কুল বাস (একটি স্কুল ছাড়া)। একটা বাচ্চাকে স্কুলে রাখতে ১ টা কার/সিএনজি/রিক্সা শহরে ঢোকে। কিন্তু কেন এটা প্রয়োজন? এক স্কুল শিক্ষক আমাকে বলেছেন, সিকিউরিটি ইস্যু আর সোসাল স্ট্যাটাস। একজন নির্বাহী / সরকারী কর্মকর্তার টাকার অভাব নাই। বিজনেজ ম্যান/ প্রাইভেট জব যারা করে তারা তো আছেই, সে কেন বাচ্চার রিস্ক নিবে? আবার ফ্রি তে সরকারী গাড়ি / অফিসের গাড়ি ব্যবহার করা যায়, সে কেন স্কুল বাসে বাচ্চাকে দেবে? বুজতেই পাচ্ছেন ব্যাপারটা...
৫. এদিকে টেবিল মার্কেট বলেন আর হকার মার্কেট বলেন, সবার কাছ থেকেই চা নাস্তার টাকা পায়। যদি এক মাস বন্ধ থাকে, তাহলে সাড়ে সর্বনাশ হয়ে যাবে। একটা ব্যাটারি রিক্সা বলুন আর টমটম, বা সিএনজি, সবার কিন্তু একটা টোকেন থাকে। দিনের টা দিনের, টাকার বিনিময়ে শহরে চলাচলের বৈধতা। কখনও প্রতিদিনের , কখনও বা মাসিক..। ওত ডিটেলস এ যাব না।
সে যাই হোক, নগর পিতা কিন্তু ইচ্ছে করলেই ব্যবস্থা নিতে পারেন... অবশ্য উনি তো জ্যাম কি জিনিস বোঝেন না। কারন সবসময় প্রোটোকল থাকে, ১৫মিনিট আগে থেকেই সব রোড ক্লিয়ার করা থাকে... আফসোস...
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:০৯