সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় ‘সুবজ কর’ আরোপের খসড়া তৈরি করেছে । উদ্দেশ্য হল, পরিবেশের ক্ষতি কমিয়ে আনা। তাই দৃষ্টি দেয়া হয়েছে গাড়ির বয়স ও ডিজেল ব্যবহারের উপর। এটা ঠিক আছে। সহমত। কিন্তু কাহিনী ভিন্ন জায়গায়...
১. কারন বলা হয়েছে, বাস, ট্রাক, হিউম্যানহলার বা ট্রাক্টর ছাড়া, শুধু প্রাইভেট বাহনের উপর অতিরিক্ত কর আরোপ হবে যদি ডিজেল ব্যবহার হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে শুধু প্রাইভেট বাহনের উপর কেন? আইন তো সবার জন্যে সমান হওয়া উচিত তাই না? তাছাড়া প্রাইভেট কার যদি রাস্তায় গড়ে ২+২=৪ঘন্টা থাকে, একটা পরিবহন বাস/ট্রাক রাস্তায় থাকে গড়ে ১৬ ঘন্টা। ইঞ্জিন সাইজ বড়, সিসি বেশি তাই জালানী পোড়ায়ও বেশি। তার মানে পরিবেশ দূষণ তো তারাই বেশি ঘটাচ্ছে। তাদের বাদ দিয়ে কেন তাহলে চুনোপুটি নিয়ে খেলা?
২. কারন বলা হয়েছে, ভারত ‘সুবজ কর’ আরোপ করেছে, দুনিয়ার অন্যান্য দেশেও আছে। ***ঘটনা সত্য।*** কিন্তু ঘটনা হলো, ভারত যা করতে পেরেছে, আমার দেশ কি তা করতে পরেছে, মানে ভারত যে নাগরিক সুবিধা দেয়, সেটা কি বাংলাদেশ দিচ্ছে বা দিতে পারবে? আমার দেশের সাংসদরা যাচ্ছে ভারতে, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে, কিন্তু কেন? আমি যে হাসপাতালে সার্ভিস নিচ্ছি, সেটাতেই নেয়া উচিত না? আমার পকেটের করের টাকায় মানে সরকারী খরচে যাচ্ছে ভাল চিকিৎসা নিতে, আমি কি দোষ করলাম? আমি কেন সেই ভাল চিকিৎসা পাবো না?
৩. যে খসরা করেছে সেটাতেও ভুল:
=>১০-১৫ বছরের পুরোনো গাড়ির জন্য ৫ শতাংশ,
=>১৫-২০ বছরের পুরোনো গাড়ির জন্য ১০ শতাংশ এবং
=> ২০ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ির জন্য ১৫ শতাংশ কর
১০-১৫ আবার ১৫-২০ যেটা হওয়া উচিত ১৬-২০বছর। যদি কারেকশান করা না হয়, তাহলে দুর্নিতি পরায়ন অফিসাররা ১৫ বছরের পাইপ লাইনে যারা পড়বে, সেই গাড়ি মালিকদের কাছ থেকে ৫ এর পরিবর্তে ১০ শতাংশ হারে কর নিবে। তখন তদবির শুরু হবে প্রথম ক্লাস্টারের ভেতর ফেলতে।
৪. যে দেশে ড্রাইভিং পরীক্ষা না দিয়েও লাইসেন্স পাওয়া যায়, গাড়ি না দেখিয়েও ফিটনেস পাশ করা যায়, ইঞ্জিন নাম্বার রদবদল করা যায়, সে দেশে এই ‘সবুজ কর’ হবে ঘুস বানিজ্য বাড়ানোর বৈধ্য প্রক্রিয়া, টাকা খাওয়ার পথ তৈরী করা, অন্য কথায় অপরাধ বাড়ানোর উদ্দ্যোগ নেয়া। রাস্তায় রাস্তায় ট্রাফিকরাও গাড়ি থামিয়ে হাজারবার ড্রাইভারদের সাথে হ্যান্ড করবে, কোলাকুলি করবে, খোজ খবর নিবে, তারপর হাতটা পকেটে ঢুকবে।
আরে ভাই, দূষণ যদি কমাতেই হয়, রাস্তায় বিআরটিসি / ভ্রাম্যমান আদাতের কর্তাদের নামালেই হয়। দৃশ্যমান গাড়ির (হোক বাস/ট্রাক/প্রাইভেট গাড়ি..) কালো ধোয়া, হাইড্রোলিক হর্ন, ব্রেক ঠিক আছে কিনা ইত্যাদি চেক করান। রাস্তায় খোড়াখুড়ি বন্ধ করুন।
এক মাসের জন্যে মমতা ব্যানার্জীর মত কঠোর হয়ে যান। সারা বছরের ‘সবুজ কর’ থেকে যা আসবে, এক মাসেই তা আসবে। মাঝখান থেকে সাধারণ মানুষ হেনেস্থা হবে না। পরিবেশ দূষণ তরতর করে কমে আসবে...
পুরো খবর এখানে: পুরোনো-গাড়ি-কমাতে-আসছে-সবুজ-কর
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:০৭