প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দেশের ভেতরে এক স্বর্গীয় সুন্দর দ্বীপ। পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ কোরাল দ্বীপ। যে কেউ দ্বীপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ২ ঘন্টায় হেটে যেতে পারে।
সৌভাগ্য ক্রমে ৪ বার যাবার সময় হয়েছে এখন পর্যন্ত। ১৯৯৩(ট্রলারে, আব্বার সাথে), ২০০১ (ট্রলারে, পুরো পরিবারের সাথে), ২০০৮(শিপে বন্ধুদের সাথে), ২০১৭ সালে (আরও বড় শিপে, পরিবারের সাথে)।
এ্যাডভেন্চার ছিল প্রথম দুবার যখন ট্রলারে গিয়েছি। জীবন নিয়ে ফিরতে পারব কিনা সন্দেহ ছিল। তখন অসাধারণ সুন্দর ছিল সেন্টসার্টিন। এখন থাকার ব্যবস্থা ভাল, কিন্তু সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যটুকু বহু অংশে কমে গেছে। আমরা এর জন্যে দায়ী।
যাই হোক, আমরা সাধারন মানুষ। হয়ত, খুব শীঘ্রই এই দ্বীপটি ভ্রমনের সুযোগ হারাতে যাচ্ছি। কেননা এবার দ্বীপটির উপর কুদৃষ্টি পড়েছে খুব গভীর ভাবে।
যাদের হাতে দেশের শাষন ক্ষমতা, তারা যদি লোভে না পড়েন, রাজনৈতিক যাতাকলে না পড়েন, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপে না পড়েন, দেশকে সত্যিকার অর্থে ভালবাসেন, বা দূরদর্শী হন, তাহলে ভ্রমনের সুযোগ সাধারন মানুষ হয়ত আরও কয়েক বছর পাবে। আপনি কি মনে করেন, কোন শাসক দলের এর সব কয়টা ছিল?
হয়ত ভাবছেন কেন বলছি। বহু আগে থেকেই সেন্টমার্টিন পাবার জন্যে হা করে ছিল বহু পরাক্রমশালী দেশ। এর প্রধান কারন হল ভৌগলিক অবস্থান। কাছাকাছি দেশগুলোকে আক্রমনের জন্যে এবং ঘাটি গাড়ার জন্যে অনন্য জায়গা। তারওপর আমরা দুর্বল নীতিগত ভাবে, চারিত্রকভাবে, দেশ চালনায় এবং অর্থনৈতিক ভাবে। জানেন তো, গরীবের বউ সবার ভাবী। না চাইলেও সবাই ভাবীর হাতের মোয়া থেতে চায়।
তালিকায় প্রথম ছিল "C" অক্ষরের একটি দেশ, যারা এখন কোকো আইল্যান্ডে সামরিক ঘাটি স্থাপনের সুযোগ পেয়েছে, যেটা কিনা সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে পেরেছে আপাতত। কিন্তু নতুন করে থাবা দিয়েছে "U" আক্ষরের একটি দেশ, যে কিনা সারা বিশ্বে অশান্তি সৃষ্টিতে পারদর্শী। যুদ্ধ যাদের ব্যবসা। এবার বোধায় শেষ রক্ষা আর হলো না। হায়েনার থাবায় দ্বীপে ভ্রমন চিরতরে শেষ। দেশ দুটির নাম পুরোপুরি লিখলে এখানে ব্যান্ড খাবো। হয়ত উসকানি মুলোক পোস্ট হিসেবে সরিয়েও দিতে পারে।
আপনারা শিক্ষিত - জ্ঞানী, তাই বুঝে নিবেন। তাছাড়া হয়ত ভাবছেন, কোথায় পেলাম এই খবর? বিভিন্ন অনলাইন নিউজে এমন খবর সার্চ দিলেই পাবেন।
অচিরেই ভ্রমন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে সর্বসাধারনের জন্যে। টেকনিক্যালি শুরুতে হয়ত, স্বস্তার জাহাজ বন্ধ করবে, তারপর অল্প সংখ্যাক ব্যয়বহুল জাহাজ চলবে, তারপর হয়ত বলবে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ-পরিবেশ বিপর্যয়, ইত্যাদি বলে পুরোপুরি বন্ধ। তারপর স্থানীয়দের অন্য দ্বীপে ঘর বাড়ি দেবে সরকার, বাকিটা ইতিহাস।
হারানো দিনের ছবি বের করে নাতি পুতি কে বলবেন... এটা সেন্টমার্টিন ছিল...