somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাকার ফিস/Devil fish/রিটা মাছ/ঘাঘট মাছ/গাগরা মাছ/আঁইড় মাছ

১৭ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাকার ফিস বা চোশক মাছ সম্বন্ধে কম বেশি সবাই জানে। এটা কোন কোন দেশে Devil fish নামেও ডাকা হয়। কিন্তু Devil fish আলাদা দেখতে। অনেকটা শাপলা পাতা বা স্টিং রের মত দেখতে। দক্ষিণ এশিয়া সাকার ফিস এখন গলার কাটা। তবে থাইল্যান্ড এবং চীন চমৎকার সমাধান বের করে ফেলেছে।

চীন নাগরিকদের সচেতন করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি ন্যাশনাল পার্ক এবং ট্যুরিস্ট প্লেসে সংরক্ষণ করে পরিচিত করছে। ব্যাখা করছে কেন এটা পরিবেশের জন্যে হুমকি। কেন আইন করে চাষ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেটা বোঝানো হচ্ছে।

অন্যদিকে থাইল্যান্ড কোন আইন জারি করেনি। তারা সাকার ফিস থেকে কুকুর বিড়ালের খাবার তৈরী করছে। আবার মানুষের খাদ্য হিসেবেও বিক্রি করছে। কারন তারা দেখেছে এটা প্রাণী শরীরের জন্যে ক্ষতিকারক নয়। পাপেট ফিস বা পটকা মাছের মত কোন বিষ নেই। কিন্তু জনগন নতুন প্রজাতি ভেবে খেতে কম আগ্রহী ।

যাই হোক বাংলাদেশে এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোন গবেষণা ছাড়াই। শুধু প্রচুর বংশ বৃদ্ধি করছে এবং অন্য প্রজাতির মাছের উপস্থিতি কমে গেছে তাই। বুড়িগঙ্গার মত সবচেয়ে দূষিত পানিতেও এর প্রচুর উপস্থিতি। কৈ বা শিং মাছ আগে কিছুটা ছিল, এখন নেই বললেই চলে। প্রজ্ঞাপন টা দেখুন কি ছিল:



আমি জানিনা রাষ্ট্রপতি মহোদয়কে কি কি উপাত্ত সরবরাহ করা হয়েছিল এ রকম একটা সিদ্ধান্ত নিতে। আমার মতে, যদি সরকার ঘোষনা করত, প্রতিটি সাকার ফিসের মাথার বিপরীতে ১ টাকা করে দেয়া হবে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে, কিন্তু কেউ চাষ করতে পারবে না। তাহলে খাল বিল নদী নালা সব সাকার মাছ শূন্য হয়ে যেত। কোটি কোটি টাকার অন্য প্রজাতির মাছ রক্ষা পেত। এখন যে সুচিবাই আইন জারি করা হয়েছে, তাতে সাকার মাছের বংশ আরও বাড়বে। কারন মাছটা কেউ স্পর্শই করতে চাইবে না।

ব্যক্তিগত আইডিয়া:
আমাদের পোল্ট্রি ফিডে প্রচুর শুটকি বা আমিষ লাগে। যে ফিডে চামড়া ফ্যাক্টরির গাদ পর্যন্ত মিশানো হয়, সেখানে সাকার ফিশ মেশালে ক্ষতি দেখি না। কোন ল্যাব রিপোর্টে, নেটের কোথাও পেলাম না যে, সাকার ফিস মানুষের শরীরের জন্যে টক্সিক। তাই আমরা সাকার ফিসের শুটকি পোল্ট্রি ফিডে ব্যবহারের কথা চিন্তা করতে পারি।

যদি সরকারী আদেশে বলা হত: চাষ ব্যতিরেকে উন্মুক্ত জলাধার থেকে ধরা সাকার ফিস শুধু পোল্ট্রি শিল্পে বিক্রয় হবে, তাহলেও কিছুটা বংশ বিস্তার রোধ করা যেত। আমার ধারনা, ২০৩০ নাগাদ আমরা আর নদীর কোন মাছ পাব না, যদি সাকার ফিস ছেকে তুলে ফেলা না হয়।

আমাদের দেশে সাকার ফিস এর সমগত্রীয় এবং একই শ্রেণীর আরও বহু মাছ আছে। যেমন, রিটা মাছ, ঘাঘট বা ঘাউরা মাছ, গাগরা মাছ। এদের সবার শ্রেণী: Actinopterygii এবং বর্গ: Siluriformes

রিটা মাছ/ঘাঘট মাছ/গাগরা মাছ যদি পপুলার খাবার মাছ হয়, সাকার মাছ না খাওয়ার পেছনে যুক্তিটা কোথায়? যদিও বলা হচ্ছে, এই মাছের গা অনেক শক্ত, মাংস আশ যুক্ত। চামড়া ছিলে অন্য মাছের মতই খাওয়া যায়।

আমি সিলেটে বেশ ক'বার পিরানহা মাছ বিক্রি করতে দেখেছিলাম। মাত্র ৯০টাকা কেজি ছিল। পাঙ্গাশের চেয়েও সস্তা ছিল। পরবর্তীতে লেখা লেখির পর ঘনঘন বাজার মনিটরিং হয়েছিল। গত ২ বছর আর দেখছিনা। সে সময় দেখেছি, মানুষ জানতই না যে পিরানহা পরিবশের জন্যে ক্ষতি কারক। পরে মানুষও পিরানহা কেনা ছেড়ে দিয়েছে।

এখন পর্যন্ত কোথাও সাকার ফিস বিক্রি করতে দেখিনি। দেখলে অবশ্যই মানুষকে সচেতন করব। আশাকরি আপনারও সচেতন করবেন। যারা মাছ ধরেন, তাদের জালে বা সিপে ধরা পড়লে মাছটি নষ্ট করে ফেলবেন। মনে রাখবেন, এই মাছ খুবই সারভাইব করতে পারে। এটা ফ্রিজে জমে গেলেও বেঁচে থাকে, রোদে ডিহাড্রেট হয়ে গেলেও বেঁচে থাকে। অক্সিজেন শূন্য পানিতেও অনেক দিন বাঁচে। কাজেই সাকার ফিসের মাথা কেটে / থেতলে ফেলতে হবে।

কয়েক বছর আগে কৃষি মন্ত্রানালয় ইঁদুরের প্রত্যেক লেজের পরিবর্তে টাকা দিত। এখন সে কার্যক্রম বন্ধ। সাকার ফিসের জন্যেও এ রকম উদ্দ্যোগ নিলে ভাল হত।

রিটা:



ঘাঘট বা ঘাউড়া:



গাগরা:



আইড় মাছ:



রেফারেন্স লিঙ্ক ১

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:২২
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিপ্লবের নিঃশব্দ মূল্য: অর্থনৈতিক বৈষম্য ও বাংলাদেশি ছাত্র আন্দোলন

লিখেছেন মুনতাসির, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

এ লেখাটি বেশ বড়ো। এখানে ছোট করে দেয়া হল। পুরো লেখাটি যদি কেও পড়তে চান, তবে নীচের লিঙ্ক থেকে পড়তে পারবেন।


সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন পর্যালোচনা চলছে। জাতিসংঘের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেঁচে থাকার প্রয়াস।

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৮




আমার ভেতরে জন্ম নেয়া বিভিন্ন চরিত্র আজন্ম যুদ্ধে লিপ্ত,যা বিশ্বযুদ্ধ থেকে ভয়াবহ। প্রতি সেকেন্ডে একজন মারছে,একজন উদযাপন করছে, এসব আটকানোর কোনো শান্তি চুক্তি নেই, নেই কোনো মোড়কে বেধে দেয়ে বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু কিছু মানুষ বলার শুরু করেছে, "আমরা আগেই ভালো ছিলাম"।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:০২



একাধিক কারণে মানুষ ইহা বলার শুরু করেছেন: (১) সাধারণ মানুষ কোমলমতিদের ক্রমেই চিনতে পারছেন, ইহা ভীতি ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করছে; কোমলমতিরা সরকারের গুরুত্বপুর্ণ অনেক পদে আছে ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি - একাল সেকাল

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮



টানা বৃষ্টির মধ্যে মরিচের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা কেজি । অন্যদিকে ফার্মের মুরগির এক পিছ ডিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা।শুধু মরিচ নয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কমলা যদি পরাজিত হয়, "দ্রব্যমুল্য"ই হবে ১ নম্বর কারণ

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭



দ্রব্যমুল্য হচ্ছে অর্থনৈতিক সুচকগুলোর মাঝে ১ টি বড় প্যারামিটার; ইহা দেশের অর্থনীতি ও চলমান ফাইন্যান্সের সাথে সামন্জস্য রেখে চলে; টাস্কফোর্স, মাস্কফোর্স ইহার মুল সমাধান নয়; ইহার মুল সমাধন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×