সে এসে আমাদের ভালোবাসার মজবুত বাঁধের ফাটল ধরায়। যে ফাটল বন্ধ করার কোন উপায় ছিলনা তাই সে আমাকে অশ্রুতে ভাসিয়ে চলে যায় তার সাথে। আমি আজ একেবারেই একা তবুও মাঝ মাঝে তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি। যে স্বপ্ন শুধু তাকে আর আমাকে ঘিরে ওখানে কোন তৃতিয় ব্যক্তি নেই।
যে ফাটল সে আমার জীবনে ধরায়ে গেছে সে ফাটল পূর্ণ করার মতো কেউ আর আমার জীবনে আসবেনা। ভালো থেকো ভালোবাসা।
গল্পঃ গলে যায় বরফ
লেখঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
এম সি কলেজ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
কে আপনি? বার বার ফোন দেন কেন? আপনার গায়ে কি বেহায়ার চামড়া লাগানো?
কে আমি সেটা জানা আবশ্যক নয়। জানাটা আবশ্যক হলো, আপনার মেজাজ কি সব সময় মরুভূমির বালির মতো চওড়া থাকে।
মিতু ফোন কেটে দিল।
তিসান এক গাল হাসল। প্রতিদিন মিতুকে ফোন দিয়ে তার চটাং চটাং কথা শুনতে তার ভালো লাগে। মিতুর চটাং চটাং কথাগুলো তার ভীষণ ভালো লাগে।
মিতুকে সে খুব ভালো করে চেনেনা। একদিন একটা ফ্লেক্সিলোডের দোকানে গিয়ে দেখে খুব সুন্দরী একটা মেয়ে কার্ড চাইছে। দোকানদার বলল, কার্ড নেই। পরে মেয়েটি ফোন নাম্বার দেয় লোড দেওয়ার জন্য। তিসান সুযোগ হাতছাড়া করল না। টুপ করে গিলে নিল মিতুর ফোন নাম্বার। কিন্তু সাথে সাথে ফোন দিলনা। ফোন দিল তিনদিন পর কারন মিতু যাতে না বুঝে লোডের দোকান থেকে তার নাম্বারটা স্পাই হয়েছে।
এর পর থেকে যতবার ফোন দিয়েছে তত বারই মিতু তাকে কড়া ভাষায় ফোন দিতে মানা করেছে। কিন্তু তিসান বার বার ফোন দিয়েই যাচ্ছে।
তিসান জানে সে যেটা করেছে সেটা খুব খারাপ কিন্তু কি করার মিতুকে দেখে সে নিজেকে সংযত রাখতে পারেনি। মিতুর সাতে কথা বলার লোভ তাকে বার বার পিড়া দিচ্ছিল।
তিসান আবার ফোন দিল।
আপনি আবার ফোন দিয়েছেন?
কেন আমি ফোন দিতে পারিনা?
কেন পারেন?
বন্ধু ভাবতে কি খুব অসুবিধে?
জ্বি অসুবিধা আছে।
কি অসুবিধা জানতে পারি?
জ্বি জানতে পারেন। আমার বি এফ আছে।
হাহাহাহা তো কি হয়েছে? আমি তো আপনার বি এফ হতে চাচ্ছিনা।
তাহলে কি চান?
কি চাই বলব?
জ্বি বলার জন্যই বলছি।
আমি আপনার বন্ধু হতে চাই।
আমার তো কারো সাথে নতুন করে বন্ধুত্ব করার দরকার নাই।
আপনার না থাকতে পারে কিন্তু আমার তো আছে। দেখেন আমি আপনাকে খুব ডিস্টার্ব করব না। দিনে এক বার রাতে এক বার ফোন দিব। দুই বারে দশ মিনিট করে বিশ মিনিট আমাকে দিবেন আর বাকি সময়গুলো আপনার বি এফ কে দিবেন।
জ্বি না আমি কাউকে সময় দিতে পারব না।
দেখেন আমি তর্ক করতে চাচ্ছিনা আমি শুধু একটু সময় চাইছি।
আপনি আসলে একটা পাগল। কেন শুধু কষ্টকে বহন করতে চাইছেন?
কিছু কিছু সুখ আছে যেটা নিতে হলে কষ্টকে হাসি মুখে বরণ করে নিতে হয়। আমি না হয় সে রকম একটা সুখ গ্রহণ করার জন্য কিছু কষ্ট সহ্য করলাম।
আপনার সাথে কথায় পারা যাবেনা। আপনি না আসলেই একটা টেলেন্ট।
এর পর কথা শুরু হয় মিতু আর তিসানের। বিশ মিনিট চুক্তিবদ্ধ হয়েও কথা হয় চার পাঁচ ঘন্টার মতো। মিতু আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে তিসানের প্রতি। তিসান ক্খনো রাগ দেখায় না। মিতু রাগ করলে তিসান খুব অভিনব ভঙ্গিতে মিতুর রাগ ভাঙ্গিয়ে দেয়। এভাবে চলতে চলতে একদিন মিতুই নিজ থেকে বলে দেয়, তিসান আমরা কি এক হতে পারিনা?
তিসানে যেন হাতে আকাশ পেয়েছে।
সে বলল, তোমার মতো কেউ যদি আমার জীবন সাথি হয় তবে আমার মতো গাদার জীবন যে ধন্য হয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৯