somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিন্সপরা সুন্দরী তরুণী গণধর্ষণের স্বীকার।।

০৮ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খালুসাহেব সোফায় বসে চা খাচ্ছেন। আমাকে দেখেই ব্যস্থ ভঙ্গিতে হাতে পত্রিকা নিয়ে পড়া শুরু করে দিলেন। এই পত্রিকা পড়ার মানে হলো তিনি এখন ব্যস্থ আছেন তাকে যে আমি আর ডিস্টার্ব না করি।
আমি খালুর সামনের সোফায় বসতে বসতে বললাম, খালু কেমন আছেন?
আমার দিকে না তাকিয়ে খালু সাহেব বললেন, হুম আছি।
আসলে খালু সাহেব পত্রিকা পড়ছেন না। শুধু তাকিয়ে আছেন পত্রিকার দিকে। খালু যে পাশে তাকাচ্ছেন তার অপর পাশে বড় করে শিরোনাম লেখা “ জিন্সপরা সুন্দরী তরুণী গণ ধর্ষণের স্বীকার”। পত্রিকার রিপোর্টাররা ধর্ষণ জাতীয় খবর লিখতে খুব পছন্দ করেন এবং এ জাতীয় খবর তারা খুব্ সাজিয়ে গুছিয়ে লিখে পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করান।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ পাঠকরা ধর্ষণ জাতীয় খবর পড়তে পছন্দ করেন। যে পত্রিকা যত বেশি ধর্ষণের খবর ছাপা করে সেই পত্রিকা ততো ভালো চলে।
আমি খালু সাহেবকে বললাম, কালকে একটা ধর্ষককে হাতে নাতে ধরে গণধোলাই দিয়েছে শুনেছেন?
খালু কঠিন গলায় বললেন, আমি এ জাতীয় খবর পড়িনা এবং শুনিনা।
ধর্ষকরা ধর্ষণ করে যে তৃপ্তি পায় তা লেখায় পড়ে এক শ্রেণির মানুষ তৃপ্তি পায়, এটা কি আপনি জানেন?
না জানিনা। তুমি এ জাতীয় খবর নিয়ে আমার কাছে আসবেনা।
আসলে আমিও এ জাতীয় খবরে ইন্টারেস্ট না তবে ঘঠনা তো বেশ রহস্যজনক। রহস্যটা কি শুনতে চান?
আমি তোমার কাছ থেকে কোন গাজাখুরি কথা শুনতে চাই না।
না শুনতে চাইলেও শুনতে হবে। এটা শুনা আপনার জন্য খুব দরকারি।
খালু কিছু বললেন না। চুপচাপ পত্রিকা পড়া শুরু করে দিলেন।
আমি বললাম, কাল যে ধর্ষক ধরা পড়েছিল সেটা দেখতে একদম আপনার মতো।
খালু সাহেব মুখের সামনে থেকে পত্রিকা সরিয়ে চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকালেন।
আমি গলা বাড়িয়ে ফিশ ফিশ করে বললাম, কাল ঠিক এভাবেই ওই লোকটাও চোখ বড় বড় করে তাকাচ্ছিল। আপনার কি কোন জমজ ভাই আছে?
ইমু তোমার কথা শেষ হয়েছে?
আপনি আমার কথা বিশ্বাস করেছেন না তাইতো? না করারই কথা। আমিও নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না।
খালুসাহেবের ধৈর্যের একটা মাত্রা আছে আজ সেই মাত্রা অতিক্রম করতে চলেছে। ধৈর্যের মাত্রা অতিক্রম করলে খালুসাহেব হাতের কাছে যা পান তাই ছুড়ে ফেলেন। আজ হাতের কাছে পত্রিকা আর চায়ের কাপ আছে এর যেকোন একটা ছুড়ে মারবেন নিশ্চয়।
খালু সাহেব কিছুই ছুড়ে মারলেন না। তিনি অতি শান্ত গলায় বললেন, দেখ ইমু ধর্ষণ একটি অতি মারাত্মক অপরাধ এবং এখন এটা খুব স্বাভাবিক হয়ে গেছে। প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই এইসব খবর চোখে পড়ে কিন্তু আমি এই জাতীয় খবর পড়িনা কারন এই জাতীয় বিশ্রি খবর পড়ার সময় আমার হাতে নেই। তবে তোমাকে একটা উপদেশ দিচ্ছি ভালো লাগলে পালন করো, না লাগলে এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য কান দিয়ে বের করে দিও।
আমি খুব আগ্রহ নিয়ে বললাম, জ্বি খালু বলুন।
খালু সাহেব বলা শুরু করলেন, এই জাতীয় খবর বয়ে বেড়ানো ভালো নয়। যত পারো এই জাতীয় খবর গোপন রাখবা। এখনকার দিনে এই রকম কোন ঘঠনা ঘঠলে মিডিয়া কর্মিদের যেন ঈদ হয়ে যায়। সত্য মিথ্যা সব মিলিয়ে তারা একটি রিপোর্ট তৈরি করে ফেলে। এই রিপোর্ট তৈরি করার মানে হলো পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা, সত্যতা তুলে ধরা নয়। এই সব খবর পড়ে শিক্ষার্থীসহ দেশের সাধারণ জনগণ প্রতিনিয়তই বিব্রত হচ্ছে। সত্য মিথ্যা মিলিয়ে পাঠক আকর্ষনীয় খবর তৈরি না করে, সঠিক ও সত্য খবর প্রকাশ করে তার বিচার চেয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করানো যেন তাদের কর্ম হয় এই আহবান মিডিয়া কর্মিদের কানে পৌছে দিতে হবে। আর তুমি হচ্ছ ইমু। কিছু অসাধারণ ক্ষমতা যে তোমার আছে তা আমি বিশ্বাস করি। আমি মনে করে তুমি চাইলে এই ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নিতে পারো। আর তুমি উদ্যোগ নিলে এই রকম মারাত্মক অপরাধ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পাবে।
খালু সাহবের কথায় যুক্তি আছে। কঠিন যুক্তি আছে। এই যুক্তি কাজে লাগাতে হবে। আমি খালু সাহবের কথাগুলো ভাবতে ভাবতে নেমে পড়লাম রাস্তায়। রাস্তা দিয়ে অনেক মেয়েই হেটে যাচ্ছে কে কখন কিভাবে বিপদে পড়ে তা কেউ জানেনা। এই বিপদের হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করা ইমুদের কাজ। ইমু আমি একা নই ইমু বাংলাদেশের প্রতিটা নাগরিক।

লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
এম সি কলেজ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।


সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:১৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×