"সকাল তখন ৮.৩৫,আমি ভার্সিটি বাসে রয়েলের মোড়ে।প্রতি দিন এই সময়টা আমি উপভোগ করার চেষ্টা করি। ৩০মিনিট এর জার্নিটাকে মনের আপেক্ষিকতা দিয়ে টেনে লম্বা করে লঙ জার্নির স্বাদ নেয়ার চেষ্টা করি যেন। জানালা দিয়ে বাইরে দেখতে দেখতেই হঠাৎ অসঙ্গতিটা চোখে পড়ল। হোটেল রয়েল,এরপর আরেকটা হোটেল-নামটা ঠিক পড়া যাচ্ছেনা...লেটারগুলো খুলে পড়ে গেছে যেন আগেই। একটু সামনে এগোতেই দেখলাম কোয়ার্টারগুলোকে সব যেন পরিত্যাক্ত মনে হচ্ছে।অদ্ভুত ব্যাপারটা তখনই খেয়াল করলাম। আমি আকাশে প্রচণ্ড মেঘ করতে জীবনে বহুবার দেখেছি, কিন্তু এমন হলুদাভ ঘোলাটে কুয়াশা আর মেঘ আমি জীবনে কখনো দেখিনি। দেখে মনে হচ্ছে যে এই পৃথিবী যেন কখনো সূর্যের মুখ দেখেনি। কোনো বিশেষ গ্যাসে যেন আজন্মের আলো-আঁধারী তৈরি করেছে পৃথিবী তে। ময়লাপোতা মোড়ের সামনের লাল বাড়িটার রঙ বিবর্ণ হয়ে যেন কালের সাক্ষী দিচ্ছে। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর মতন নিজের দিকে তাকালাম!! আমার হাতের আঙটির মুক্তোটা তখনো মরা মাছের চোখের মতন আমার দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে আছে।আমার রিস্ট ব্যান্ডটা বলছে আমি এখনো আমার বন্ধুদের ভালবাসি। কিন্তু আমার কোলের উপর চোখ পড়তেই এড্রেনালিন এর শীতল স্রোত যেন মৃদু বয়ে গেল আমার শিরদাঁড়া বেয়ে। ভার্সিটি ব্যাগের জায়াগায় সেখানে শুয়ে আছে সাপের মত ঠাণ্ডা একটা টাটকা মেশিনগান!!! আমার শোরগোল শুনে কোত্থেকে যেন শক্ত চোয়ালের এক পেশিবহুল লোক এসে রাগী রাগী গলায় অজানা এক্সেন্টে যা বলল আমায়, তা হল...ফর্মার জিরোপয়েন্ট নাকি এখন ফন্টেয়ারে পরিণত হয়েছে আর আমি যদি এখনই দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ না করি তাহলে আমাকে ডেথ পেনাল্টি দেয়া হবে। আমি হতবাকের মতন চেয়ে রইলাম কিছুক্ষণ আগ্নেয়াস্ত্রটার দিকে,তারপর চোখবুঁজে একটা চিৎকার দিয়ে ওটাকে তুলে নিলাম দু'হাতে।
.
পাশ থেকে কে যেন মৃদু ধাক্কা দিচ্ছে আমায়। অনবরত বলে চলেছে,"ভাইয়া,নামবেন না? ৯টায় ক্লাস আছে আমার।"
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৭