somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউঃ What Happened to Monday (2017)

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মুভিটি শুরু হয়েছে ২০৪৩ সালের কল্পিত প্রেক্ষাপটে। পৃথিবীর জনসংখ্যা যেখানে দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। এত বিশাল সংখ্যক জনসংখ্যার জন্য খাদ্য ও বাসস্থানের যোগান দেয়া দিনকে দিন কঠিন হচ্ছে। বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে খাদ্যের যোগান কিছুটা দেয়া যাচ্ছে। জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড ফুড খাদ্যের চাহিদা তো মেটাচ্ছে, কিন্তু সাথে করে নিয়ে আসে আরেক সমস্যা। বেশিরভাগ নারী যমজ বাচ্চার জন্ম দিচ্ছেন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তা ৫ থেকে ৭ টি পর্যন্ত। জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড ফুড দিয়ে খাদ্যের সমস্যা কোনভাবে মেটানো গেলেও, এটিই আবার জনসংখ্যা হু হু বাড়িয়ে দিচ্ছে। শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়ে নতুন একটি আইন করা হয় এরকম- জমজ সন্তানদের মধ্যে থেকে মাত্র একজন সন্তান বাবা-মা লালন পালন করতে পারবেন। বাকিদের Child Allocation Beauro-এর অধীনে কৃত্রিমভাবে Cryosleep-এ রাখা হবে (হাইবারনেশনের মত অনেকটা), যতদিন পর্যন্ত পৃথিবী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসে। একজন সন্তানের বেশি কেউই নিজের কাছে কোনমতেই রাখতে পারবেন না, খুব কড়াকড়ি এ ব্যাপারে, জোর করে নিয়ে যাওয়া হয় সন্তান।

এরকমই এক অবস্থায় ক্যারেন সেটম্যান সন্তান জন্ম দেয়ার সময় মৃত্যুবরণ করেন। জন্ম দিয়ে যান সাতজন যমজ কন্যাসন্তান। এই সন্তানদের নিয়ে কি করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান নানা টেরেন্স। মেয়ের সাথে অনেকদিন ভালো সম্পর্ক ছিল না টেরেন্সের। তাই এই সন্তানদের বাবা কে তা নিয়েও কিছু জানেন না তিনি। এতগুলো নাতনীকে কিছুতেই তিনি হারাতে চান না। সাত নাতনীর নাম তিনি রাখেন সপ্তাহের সাত দিনের নামে- Sunday, Monday, Tuesday, Wednesday, Thursday, Friday, Saturday. নাতনীদের নিজের কাছে গোপনে রেখেই বড় করা শুরু করেন। তবে তাদের সবারই একটা কমন কেতাবী নাম ছিল। ক্যারেন সেটম্যান, তাদের মায়ের নামে তাদের কেতাবী নাম। এ নামেই তারা স্কুলে যায়, পরবর্তীতে চাকরিতে যোগ দেয়।

সবাই সপ্তাহে একদিন বাইরে যাওয়ার সুযোগ পেত। নিজ নিজ নাম অনুযায়ী বারেই তারা বাড়ির বাইরে বের হবার সুযোগ পেত। যেমন Sunday বাড়ির বাইরে বের হতো বরিবার, Monday বের হতো সোমবারে এভাবে। যে যেদিন বাইরে যেত, সে বাড়ি ফিরে বাকি সবাইকে সে বাইরে যা যা দেখল তার সব কিছু বিস্তারিত জানাত। একদিন একজন নিজ বারের বাইরে লুকিয়ে বাইরে গিয়ে দুর্ঘটনায় হাতের একটি আঙ্গুল হারায়। নানা টেরেন্সকে এরপর বাধ্য হয়ে বাকি সবারই একটি করে আঙ্গুল কেটে দিতে হয়। বেঁচে থাকার জন্য তারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের উপরে খুব বেশী মাত্রায় নির্ভরশীল।

এভাবে সপ্তাহে একদিন করে বাইরে গিয়ে তারা স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা শেষ করে চাকরিতে যোগ দেয়। যার যার নির্দিষ্ট দিনে একজনই অফিসে যায়। সবই ঠিকঠাক চলছিল। একদিন Monday অফিসে গিয়ে আর ফিরে আসে না। ডাটাবেজ খুঁজেও তার কোন হদিস বের করতে পারে না বাকি বোনদের কেউ। আশেপাশের সবাই জানে ক্যারেন সেটম্যান একজনই। একজনের আঙ্গুল কেটে যায় দেখে বাকি সবার আঙ্গুল-ও কেটে ফেলতে হয়। সুতরাং, তাদের একজন হারিয়ে গেছে মানে বাকি ছয়জনকেও হারিয়ে যেতে হবে। বেঁচে থাকার তাগিদে বাকি ছয় বোন একে একে হারিয়ে যাওয়া Monday-কে খুঁজতে থাকে।

ক্যারেন সেটম্যান ব্যাংকে চাকরি করত। সেই ব্যাংক থেকেই তারা একে একে খোঁজা শুরু করে। ক্যারেনের এক সহকর্মীকে প্রথমে তাদের সন্দেহ হয়। এরপর আবার Child Allocation Agency-ও টের পেয়ে যায় ক্যারেন সেটম্যান আসলে একজন নয়, একের অধিক। তাদের উপর হামলা হয়, কারণ এত লোকের পৃথিবীতে হেঁটে চলে বেড়ানোর অধিকার তখন নেই। এরপর জীবনের তাগিদে লুকিয়ে লুকিয়ে নানাভাবে তাদের হারানো বোনের হদিস খুঁজতে শুরু করে।

তো শেষ পর্যন্ত Monday-এর কি হল সেটি জানতে হলে আপনাদের দেখে ফেলতে হবে এই চমৎকার মুভিটি। ২০১৭ সালে Netflix এ মুক্তি পায় ছবিটি। প্রায় ২ ঘন্টার এই মুভিটি দেখার সময় আপনি এক সেকেন্ডের জন্যও বোরড হবেন না। টানটান উত্তেজনায় ভরপুর পুরো মুভিটিই। মুভির প্রত্যেকটা সেকেন্ডকে খুব ভালোভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। স্ক্রীনের উপর দর্শকের মনোযোগ কুব ভালোভাবে ধরে রাখতে পেরেছে এই মুভিটি।

IMDB তে মুভিটি ১০ এ ৬.৭ পেয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মুভিটিকে ১০ এ ৮ দেব।

ঘন্টাদুয়েক সময় হাতে নিয়ে দেখে ফেলতে পারেন চমৎকার এই সিনেমাটি। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৫৪
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×