somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জয়ন্ত'র গল্প

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমি সাধারণত মানসিক ভারসাম্যহীন কাউকে দেখলে তাকে অন্তত ২-৫ মিনিট সময় দেয়ার চেষ্টা করি। এটা বলতে পারেন আমার একটা কৌতুহলী অভ্যাস বা গবেষণার অংশ।

এর ধারাবাহিকতায় গত ২১/০৯/২০১৯ইং তারিখ সন্ধার পর দিয়ে ছবির ছেলেটির দেখা পাই আমাদের স্থানীয় বাজারে, তখন ব্যস্ততা থাকায় চিন্তা করলাম পরে এসে তার সাথে একটু আড্ডা দেবো যদি পাই।

রাত ০৯-১০ টার মাঝে হঠাৎ কাজ শেষ করে মনে পরলো ছেলেটির কথা সাথে সাথে বড়ভাই দীন-ইসলাম ভাইকে নিয়ে ছেলেটির খোঁজে বের হলাম। তাকে সন্ধায় দেখা স্থানেই পাওয়া গেল। তার কাছে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলাম।
কিন্তু, সে কোন কথা বা আমাদের কথা শুনতে নারাজ বুঝাচ্ছিল! আমাদের থেকে দুরে সরে যেতে চাইছিল। চিন্তা করলাম দেখি সে কি করে বা কোথায় যায়। ধীরে ধীরে বাজারের এক কোনে গিয়ে বসে রইলো। আমিও তার পাশে গিয়ে বসে তার সাথে একটু ভাব জমানোর চেষ্টা করলাম। হুম সেও ভাবে মজে যাওয়া শুরু করলো। সে কথা বলতে পারছে না তারপরও কিছু বুঝানোর চেষ্টা করছে। কয়েক মিনিট তাকে সময় দেয়ার পরে সে আমার ভক্ত বনে গেলো। আমিও সেই সুযোগে তাকে আমার সেন্টারে নিয়ে আসলাম এবং কিছু খাবার এনে খাওয়ালাম। সেও তৃপ্তি নিয়ে খাবার খেয়ে নিলো।

আমি মানসিক ভারসাম্যহীন বা পাগলদের সাথে কথা বা সময় দিয়ে তাদের মধ্যে যে কিছু খুজেঁ পাচ্ছি বা আমিযে তাদের নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি তা বোঝানোর জন্য আমার ফেইসবুক টাইমলাইনে ছেলেটির দুটি ছবি পোস্ট করি এবং ক্যাপশন দেই "সুখী মানুষের সাথে আড্ডা চলছে"। আর আমার সেই ফেইসবুক স্ট্যাটাস দেখে প্রথম আলো পত্রিকার আমাদের জেলা প্রতিনিধি সত্যজিৎ দা আমাকে জানালেন ছেলেটি কয়েকদিন আগে হারিয়ে গেছে ওর আত্মীয় স্বজনরা খুব খুঁজছে। শুনে সাথে সাথে সত্যজিৎ দা'র দেয়া তথ্যমত তাকে বাড়ীতে পৌছে দেয়ার স্বীদ্ধান্ত নিলাম। এর মধ্যে ছেলেটি আমার খুব ভক্ত হয়ে গিয়েছে, যা বলছিলাম তাই শুনছিল। আমার সাথে কলিজার ভাইগুলা দীন-ইসলাম, সাগর, সজিব, তুমন সবাই একাত্মতা প্রকাশ করলো। পরিচিত এলাকার ভাই-বন্ধু অটো চালক রাসেল কে ফোন দেয়া হলো। বিষয়টি শুনে রাসেল সাথে সাথে স্বাদের ঘুম রেখে রাত প্রায় ০১ টার দিকে অটো নিয়ে বেরিয়ে আসলো। আরকি যেই ভাবনা, সেই কাজ। রওয়ানা দিলাম ছেলেটির বাড়ীর ঠিকানায় এবং ওর এক পড়শীর মোবাইল নম্বরে ফোন দিতে থাকলাম। অনেক রাত হওয়ার কারনে বুঝতে পারলাম ঘুমে থাকার কারনে ফোনটি রিসিভ করছে না তবে, অর্ধেক পথ পারি দেয়ার পরই ফোনটি রিসিভ করলেন সুধির ঘোষ ভাই। আমি যখন বললাম ভাই ছেলেটি আমার কাছে আছে, আমি ওকে নিয়ে আসতেছি। তিনি সাথে সাথে ছেলেটির পরিবারকে জানালেন এবং আমাকে জানালেন স্থানীয় বাজারে ছেলেটির মামা ও মামাত ভাই অপেক্ষা করছে।

আমরা পৌছে গেলাম তথ্য অনুযায়ী স্থানীয় বাজারে এবং ছেলেটির মামা ও মামাত ভাইকে সাথে নিয়ে চলে গেলাম ছেলেটির মামা বাড়ী। বাড়ী পৌছানোর সাথে সাথে ছেলেটি অনেক বেশী পুলকিত হয়ে উঠলো, দেখে মনে একটা শান্তির হাওয়া বয়ে গেলো।

তারপর জানার চেষ্টা করলাম ওর সম্পর্কে এবং জানলাম...
ছেলেটির নাম- জয়ন্ত, বয়স-২০-২২ বছর হবে, ছেলেটি বাকপ্রতিবন্ধী তার বাবা নেই, মা আছেন কিন্তু সেও খুব সহজ-সরল মানুষ, নিজের ছেলেকে দেখাশোনা করার মত অবস্থায় নেই তিনি। মামার পরিবারই তাদের মা-ছেলেকে দেখাশোনা করে।

অবশেষে সবার উদ্দেশ্যে একটি কথাই বলতে চাই পাগল হলেও তারাও একটি পরিবারেরই সদস্য। হতে পারে তাকে হারিয়ে তার পরিবার খুবই হতাশ হয়ে আছে। আপনার আশেপাশে ঘুরতে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলোর সাধ্য অনুযায়ী একটু খোঁজ নিন। হতে পারে আপনার দ্বারা ফিরে পেতে পারে কোন মা তার আদরের সন্তানকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৫২
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×