ডিজিটাল যুগে সবাই যার কর্ম নিয়ে ব্যস্ত। এত সময় কোথায় যে আশেপাশের মানুষের সুখ-দূঃখ দেখার বা শেয়ার করে নেওয়ার। তবুও যেটা সত্য সেটা স্বীকার করতে বা বলতে হবে। যেমন আমরা সামাজিক জীব। সমাজের প্রতি এবং সমাজে বসবাসকারী সকলের প্রতি আমাদের একটা দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। তা সে যে অবস্থানে অবস্থান করুকনা কেন। সে তার অবস্থান থেকে তার দ্বায়িত্ব পালন করবে। এর জন্য বিখ্যাত, শিক্ষিত, অথবা স্পেশাল কিছু হওয়ার দরকার নেই। যারা তা হবেন তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা সাধারন মানুষের চেয়ে বহুলাংশে বেশি। যেমন ডাক্তার, মাষ্টার, ইন্জিনিয়ার, সাংবাদিক। যদিও আমার জানি আমাদের সমাজে দু-চার জন ছাড়া অধিকাংশই কর্তব্য কর্মের ধারে কাছে নেই। প্রত্যেকটা পেশার যে একটা সামাজিক দ্বায়ীত্ব থাকে তা আমরা ভূলে যাই টাকা রোজগারের নেশায় পড়ে। এক্ষেত্রে সাধারন মানুষের চেয়ে আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থা আরও খারাপ। আমরা সম্ভবত বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেদেশে বাস্তবে সেবা খাত বলে কোন খাত নেই।
ছোট বেলায় একটা গল্প শুনেছিলাম। রাজপ্রাসাদের এক নাইট গার্ড খুব ভোরে এসে রাজাকে বললো, "হুজুর আমি গত রাতে স্বপ্নে দেখলাম, প্রাসাদে দূঃষ্কৃতিকারীরা হামলা করছে"। একথা শুনে রাজা নিরাপত্তা ব্যাবস্থা জোরদার করলো। পরদিন সত্যিই কিছু দূঃষ্কৃতিকারী হামলা করতে এল। কিন্তু সুরক্ষা ব্যবস্থা ভাল থাকায় কোন প্রকার ক্ষতি হলনা। সবাইতো গার্ডের প্রশংসা করতে লাগলো। নাইটগার্ডের কারণে এত বড় বিপদের হাত থেকে প্রাসাদ রক্ষা পেল। এর পর রাজা তাৎক্ষনিক গার্ডকে প্রাসাদে ডেকে পাঠাল। সবাই ধারনা করলো যে, এত বড় কাজের জন্য রাজা গার্ডকে অবশ্যই পুরষ্কৃত করবে। কিন্তু কিছুক্ষন পর সবার ভূল ভাঙ্গলো। দ্বায়িত্বে অবহেলার দায়ে রাজা গার্ডকে চাকুরী থেকে বহিঃষ্কার করলো। তার অপরাধ সে নাইটগার্ড হয়ে রাতে পাহারা না দিয়ে ঘুমিয়েছিল।
মূল বিষয়ে আসি। দেশের প্রধান খবরের কাগজের মধ্যে অন্যতম হল, বহুল প্রচারিত এবং প্রকাশিত প্রথম আলো (বিজ্ঞাপনের সূত্রে)। এই প্রত্রিকায় কোন খবর প্রকাশিত হলে তা প্রসাশন তথা সর্বস্তরে এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। এই সত্যটা আমরা যেমন জানি তেমনি প্রথম আলো কর্তৃপক্ষও জানেন। এই প্রত্রিকার একটা শ্লোগান হল, " বদলে যাও বদলে দাও"। কিন্তু অত্যন্ত দূঃখের বিষয় যে তারা নিজেদেরকে বদলাতে পারেননি। একটা প্রত্রিকা যে শুধু মাত্র পয়সা ইনকামের মাধ্যম নয়। এর একটা সামজিক দায়বদ্ধতা বয়েছে তা তারা ভূলে গেলেন। অন্তত গত কালকের এই সংবাদটি পড়ে। "ভন্ড পীর ভয়ঙ্কর চিকিৎসা"।
মাননীয় সাংবাদিক ও সম্পাদক সাহেব, আমি অত্যন্ত দূঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আপনারা অন্যায় করেছেন অত্যন্ত জগন্যভাবে কান্ডজ্ঞানবিবর্জিত একটা কাজ করেছেন। হয়তো অনেক প্রশংসা আনেক ভালো ভালো কথা আমাদের তোষামোদপ্রিয় জাতির কাছ থেকে এরই মধ্যে শুনে ফেলেছেন। বিশেষ করে যখন আপনার নিউজ পড়ার পর উক্ত চিকিৎসক গ্রেপ্তার হল। কিন্তু অত্যন্ত দূঃখের বিষয় এই যে, সাংবাদিক সাহেব এই সংবাদটি সংগ্রহ তথা সরজমিনে তৈরী করেছেন গত ৬ই এপ্রিল (আপনার রিপোর্টে উল্লেখ আছে)।কিন্তু সাংবাদিক সাহেব কেন আপনি এই খবরটি পাঁচ দিন পর প্রকাশ করলেন? এই পাঁচ দিনে যে লোকগুলো অত্যাচারিত হল তাদের দায়ভার কি আপনি এড়াতে পারেন?
কেন আপনি এতদিন এই রিপোর্টটি প্রকাশ করেননি? আপনারা জাতির বিবেক। আপনি কি করে পারলেন সহ্য করতে এই দৃশ্য। আপনার সামনে ২ মাসের ২টি শিশুর উপর দাঁড়াতে দেখে কেন আপনি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলেন না। কিভাবে আপনি পারলেন দেখতে শিশুগুলোকে পা বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা। ওই মুহুর্তে আপনি কি পারতেন না স্থানীয় প্রশাসনকে জানাতে? সাংবাদিক সাহেব শুধুমাত্র আপনার সামান্য বিচক্ষনতা এই মাসুম শিশুদের মত অনেককে অত্যাচার থেকে বাঁচাতে পারতো। সাংবাদিক সহেব...........একটু জানাবেন কি? কি সেই কারন যার জন্য পাঁচ দিন আপনি এবং আপনার কতৃপক্ষ এই সংবাদটিকে ধামা চাপা দিয়ে রাখলো। এখানে কোন কিন্তু নাই তো????????????