৯০ এর দশকে জন্ম নেওয়া মানুষদের সব সময় স্ট্যাটাস পড়া জাতি বলা হয়। বলা হয় তারা রবীন্দ্র নজরুল চর্চা করে না। বলা হয় তারা প্রতিবাদ করতে পারে না শুধু COC তেই যুদ্ধ করে সবাই। কথা গুলো একদিকে যৌক্তিক কিন্তু এটাও ভাবার বিষয় আমাদের এধরনের মানসিকতার জন্য কি বা কারা দায়ী ?
ছোটবেলা থেকে বাবা মা এবং সমাজ আশা করে শিশুটি বেড়ে উঠুক ইংরেজির জাহাজ হয়ে। ফলে প্রচুর ইংরেজি চর্চা করানো হয়। তাই তার মধ্যে বাংলার প্রতি ওভাবে দরদ গড়ে উঠে না। এছাড়া কার্টুন দেখিয়ে বাচ্চাকে খাওয়ানোর যেই অদ্ভুত নিয়ম আমাদের মায়েরা চালু করেছে তাতে করে শিশু কোনোভাবেই বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি আসক্ত হতে পারে না। নগরায়নের এই যুগে বঙ্কিম বা শরৎ এর সাহিত্যে আমরা নিজেদের খুঁজে পাই না। আমরা হারমোনিয়ামের আগে গিটারের সাথে পরিচিত হই ফলে আমাদের কাছে হারমোনিয়ামের আওয়াজ প্রচণ্ড সেকেলে মনে হয় । আর প্রতিবাদ? সেটা করতে যেই মানসিক শক্তির দরকার হয় তা আমরা ছোটবেলায় অর্জনই করতে পারি না কারণ বাবা মায়ের চাকুরীর খাতিরে আমাদের বড় হতে হয় গৃহ পরিচালিকার মায়া মমতায়। তাই এটা স্পষ্ট যে আমাদের সামগ্রিক সমাজ ব্যবস্থায় একটা অপসংস্কৃতির প্রভাব রয়েছে।
আমরা কিন্তু হুমায়ূন স্যারের উপন্যাস পড়ি। মাহতিম সাকিব রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে রাতারাতি ফেমাস হয়ে গিয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চ কিংবা কোটা আন্দোলনে বাংলার তরুণ সমাজ প্রমাণ করেছে তারা কতটুকু প্রতিবাদ করতে পারে। অর্থাৎ সমস্যাটা উপস্থাপনে। আমরাও বই পড়ি যদি সেখানে নিজেদের খুঁজে পাই। ভিঞ্চি কোড পড়তে আমাদের কেউ উৎসাহিত করা লাগে না। জাফর ইকবাল স্যারের বই গুলো বাচ্চারা লুফে নিচ্ছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত যদি হারমোনিয়াম দিয়ে গাওয়া হয় তাহলে আমরা ফিল পাই না। গিটার দিয়ে গাইলে আমাদের কাছে কুল লাগে ব্যাপারটা। এর প্রমাণ ইউটিউবে রয়েছে।, পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্র দিয়ে গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত গুলোর ভিউজ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে খ্যাতনামা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীদের গান খুব একটা ভিউজ পাচ্ছে না। নজরুলের গান বা কবিতা গুলোরও একই দশা।
সময় এসেছে উপস্থাপনা নিয়ে ভাবার। গিটার দিয়ে গাইলে যদি মানুষ তা শুনে তাহলে হারমোনিয়াম দিয়ে গাওয়ার কি দরকার? আশা করি পরিবর্তন হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৯