ইদানীং আব্দুল গণি'র অধিকাংশ সময় কাটে আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রী কলেজের সামনে চায়ের দোকানে বসে । গণি সাহেব মধ্যবয়স্ক তবে এই বয়সেই তিনি অবসরের ঘোষণা দিয়ে সংসার থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
তিনি তার ফার্মেসির দায়িত্ব বড় ছেলে লিয়াকতকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। লিয়াকত আগে ছোটখাটো অপদার্থ ছিল , ফার্মেসি পেয়ে বড়সর অপদার্থ বনে গেছে। কয়েকমাসেই সে ব্যবসা লাটে তুলে দিয়েছে। গণি সাহেব জিজ্ঞাস করেছিল - তোর সমস্যা কি ?
লিয়াকত হজমি ট্যাবলেট চুষতে চুষতে উত্তর দিয়েছিল - আব্বা , ডাক্তারগর লিহা বুঝি না ... হিজিবিজি।
ছেলে ডাক্তারদের লিখা না বুঝলেও গণি সাহেব বুঝে গেছে - লিয়াকতের আর হবে না। ছোট ছেলে আকবর। স্কুলে পড়ে , তবে স্কুলে যায় না। তার স্কুল ভালো লাগে না, তার ভালো লাগে মার্বেল খেলা। গণি সাহেব আকবরকে কিছু বলেন না। উনিও তার সময়ে মার্বেল খেলে পর পর দুইবার ম্যাট্রিক ফেল করেছিলেন। তৃতীয়বার আর পরীক্ষা দেননি। বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। তিনি জানেন তার ছোট ছেলে আকবরও পালাবে। রক্তের আঁচ , কাটানো কঠিন।
স্ত্রী রোকসানা প্রতি সকালে পুই শাকের ডাটা ছুলতে ছুলতে নিজের কপালকে দোষ দেন। গণি সাহেবের ঘরে এসে তিনি সব হারিয়েছেন। তার আব্বাজান তৎকালীন সময়ে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিল জামালপুর জেলা শহরের উকিলের সাথে। লোকটার বয়স বেশী ছিল তবে টাকাও বেশী ছিল। টাকা বয়স তরল করে দেয়। রোকসানা উকিল রেখে ফার্মেসিওয়ালার সাথে ভেগে গিয়ে যে ভুল করেছিল সুযোগ পেলে সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দেন।
আব্দুল গণি শুনেন , শুনতে শুনতেই ডালে রুটি চুবিয় মুখে পুড়ে নেন। দুটো রুটি গিলে তিনি বেরিয়ে পড়েন আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রী কলেজের উদ্দেশ্যে।
কলেজে পড়তে আসা মেয়েগুলো বুকের কাছে খাতা কিংবা বই জাতীয় কিছু জড়িয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। প্রায় একই বয়সের বিভিন্ন রকমের মেয়ে। কেউ শ্যামলা , কেউ কালো , কেউ শ্যামলার পরের ধাপ। কেউ হাসে , কেউ গম্ভীর থাকে , কেউ ক্যামন থাকে বোঝা যায় না। তাদের কেউ কেউ লম্বা ওড়না কেউ বা বোরকা আবার কেউ কেউ বা অথবা ডান পাশে ওড়না দিয়ে কলেজে আসে। গণি সাহেব মেয়ে দেখেন।তাদের দেহ চলন বেশ সব তিনি গভীর মনোযোগে দেখেন।
মাংস লোভী দৃষ্টি অবিরত মাংস দেখে চলে।
----------------------
ফেসবুকেও প্রকাশিত। লিংক - Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১০