somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রম্যগল্প - একজন ধর্ষকের অভিযোগ

১৪ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুলিশের আইজিপি সাহেব গভীর ঘুমে। ঘুমে স্বপ্ন দেখছেন যে তিনি বিচিওয়লা কলা খাচ্ছেন । ঐ কলা না, মুন্সিগঞ্জের বিখ্যাত বিচিওয়ালা কলা। হেভভি টেস্ট। হঠাৎ উনার রুমে কাফনের কাপড় পড়া একজন উপস্থিত। খাটের কিনারায় বসতে গিয়ে শব্দ হয়ে গেল। বড় সাহেবের ঘুম গেল ভেঙ্গে। কাফনের কাপড় পড়া লোকটি লজ্জা পেয়ে বলল -
- সরি স্যার , শব্দ হইয়া গেছে , গুস্তাফি মাফ করবেন
আইজিপি সাহেব ঘুম ঘুম চোখে বলল -- তুমি কে ?
- স্যার , আমি লাশ। নাম শামিম । বয়স ৩৫।

আইজিপি সাহেবের ঘুম পুরোপুরি চটে গেল। স্বপ্নে দেখেছেন নাকি বুঝতে নিজের গালে নিজেই চড় বসিয়ে দিল , বাপরে বাপ । ব্যাথা লাগে । এরমানে ঘটনা সত্য সত্য ঘটছে। উনার হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসচ্ছে। তবে দীর্ঘদিন ট্রেনিং থাকায় ভয়কে তিনি কন্ট্রোল করতে শিখেছেন। বিরোধীদলের কতো মন্ত্রী এম্পিদের তিনি চুটতিতে নাকানিচুবানি দিয়েছেন আর এ তো লাশ! তার এখন উনার ভয় পেলে চলবে না। যথাসম্ভব পালটা আক্রমণ করে লাশকে ভয় দেখিয়ে দিতে হবে। এতদিনের ট্রেনিং, আজ কাজে লাগাতে হবে। তিনি গলার স্বর যথাসম্ভব কড়া মুডে রেখে বললেন -

--শামিম্মা , তোর সাহস তো কম না ! জানোস আমার লাইসেন্স করা পিস্তল আছে । দিমু গুল্লি কইরা , ভাগ হালারপুত

শামিম নাক ঝেড়ে বিছানায় হাত পরিষ্কার করে বলল --স্যার , কাউয়ারে যেমন আলকাতরার ভয় দেখাইয়া লাভ নাই তেমনি লাশরে পিস্তলের ভয় দেখাইয়া লাভ নাই। বুঝচ্ছেন নি?

পুলিশের বড় সাহেব , নিজের ভুল বুঝতে পারলো। সত্য কথা। লাশরে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে ফয়দা নাই , তাকে ভিন্ন লাইনে এগিয়ে যেতে হবে। সূরা কালাম পড়ে ফু দেয়া যায় , কিংবা রসূন আগুন দেখালেও একটা লাভ হতে পারে। কিন্তু এতো রাতে রসূন কই পাবে ? সমস্যা হল সূরাও ঠিক মতো মনে পড়ছে না। ভালো বিপদে পড়া গেল। লাইন নাম্বার দুই। উনাকে এখন যেতে হবে কনভিন্সিং লাইনে। কতো শত মিডিয়া কর্মীদের তিনি কেবলমাত্র কথার শক্তিতে কনভিন্স করে জাম্বুরা খাইয়িয়ে দিয়েছেন আর এ তো মামুলি লাশ। এই লাশকেও কথার যাদুতে কনভিন্স করে ফেলতে হবে। এইটাও উনার ট্রেনিং এর অংশ ছিল।

--শামিম ভাইয়া , চা কফি কিছু খাবেন ?
-- না স্যার , চা খাই না । খাওয়ার সাথে সাথে পিছন দিক দিয়া বের হয়ে যায়। মইরা এই হইছে এক বিপদ। কিছুই রাখতে পারি না। সঙ্গে সঙ্গে খালাস হইয়া যায়।
-- ও আচ্ছা।
-- স্যার , আমি একটা অভিযোগ নিয়া আইছি , যদি অনুমতি দেন তো পেশ করি
-- বিলকুল ,শামিম ভাইয়া । আপনি বলতে থাকেন , আমি নোট করে নিচ্ছি। কাল ভোরেই অ্যাকশনে যাবো ইনশা আল্লাহ্‌। বলুন ভাই
-- স্যার, আমি বেশ কিছুদিন আগে নেত্রকোনায় ১৫ বছরের এক কিশোরীকে আচ্ছামত ধর্ষণ করি। খেক খেক ( হাসি )
-- ও আচ্ছা।
--- সমস্যা হইল স্যার , আমারে তো ফাঁসি দিয়া দিল। ফাঁসি দিছে যখন তখন আমার আপত্তি ছিল না। বাচ্চা একটা মেয়েরে ধর্ষণ করছি , আমি অনুতপ্ত আছিলাম। ফাঁসি দিছে তখন খুশি হইছি। ফাঁসিতে থ্রিল আছে স্যার। যখন কালা টুপি মাথায় লাগায় , ওরে স্যার সেই কি জসিলা ঢেউ যে মন উঠে , মনে হয় আরেকটা মাইয়া খাইয়া দেই।
-- ও আচ্ছা
--কিন্তু আইজ আমার খুশি নাই , আইজ আমি বেজার।
-- বেজার কেন ?
-- ওমা , ধর্ষণের বিচার ফাঁসি ক্যামনে হয় ? আমার সাথে স্যার অবিচার হইছে। আমি এর বিচার চাই
-- বলেন কি !!! ধর্ষণ একটা অপরাধ। জঘন্য এই অপরাধের বিচার তো ঠিক ই আছে !
-- স্যার ঠিক নাই । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের TSC র পাশে নারীদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে ‘তিন-চারটা ছেলের দুষ্টামি ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা’ বলা হইলে , আমার ধর্ষণের বিচার ডিরেক্ট ফাঁসি ক্যামনে হয় ? আমি না হয় একটু বেশী দুষ্টামি করছি , তাই বলে ফাঁসি !! মানতে পারলাম না স্যার। আমি এর বিচার চাই । আমার ফাঁসি উইথড্র করতে হইবে , নাইলে আমরা সকল ধর্ষণ মামলার আসামিরা অসহযোগ আন্দোলনে নামবো। তখন কেউ রাতে ভয়ে ঘুমাতে পারবে না। ভয় দেখাইয়া সবাইরে বিছানায় মুতাইয়া দিমু। হুম, এই বলে আমি দিলাম স্যার !

পুলিশের আইজিপি, এইবার ঘামা শুরু করলেন। এই প্রথম তিনি অসহায় বোধ করছেন। হায় হায় , সত্যি সত্যি যদি তারা আন্দোলন শুরু করে , তবে রাতে ঘুমিয়ে তিনি কলা খাবেন কীভাবে !

খুব ই চিন্তার বিষয় !! চিন্তায় উনার পুটু ঘেমে যাচ্ছে

( প্রায় সকল চরিত্র কিন্তু কাল্পনিক ;) )
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৩২
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×