somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহানবীর (সা.) উদ্দেশে কটূক্তি : শিক্ষক মদন দাসের বিচার দাবিতে ধানমন্ডি স্কুলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ : ব্যবস্থা নিতে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ

৩১ শে জুলাই, ২০১১ বিকাল ৫:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ধানমন্ডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক মদন মোহন দাস। এবার সে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) এবং পবিত্র হজ নিয়ে কটূক্তি করার দুঃসাহস দেখাল! ২৬ জুলাই তার সহকর্মী শিক্ষকদের এক সভায় সে মন্তব্য করে, ‘এক লোক সুন্দরী মহিলা দেখলেই বিয়ে করে। এভাবে বিয়ে করতে করতে ১৫-১৬টি বিয়ে করে। মুহাম্মদও ১৫-১৬টি বিয়ে করেছে। তাহলে মুসলমানরা মুহাম্মদের হজ করা স্থান মক্কায় গিয়ে হজ না করে ওই ১৫-১৬টি বিয়ে করা লোকের বাড়িয়ে গিয়ে হজ করলেই তো হয়।’ অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ এবং কলেজের শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এমন কটূক্তির সত্যতা মিলেছে।
এমন মন্তব্যে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় ফুলের টব ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধরা। বিক্ষোভকালে শিক্ষক মদন মোহন দাসকে চাকরি থেকে অপসারণ ও তার বিচার দাবি করা হয়। কলেজ প্রশাসনের সহায়তায় প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিভাবকরাও দুপুরে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কলেজ গেটে এক ঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গতকাল দুপুরেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদফতরের ডিজিকে ঘটনা তদন্ত করে খুব দ্রুত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ওই কটূক্তিতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
২৮ জুলাই শিক্ষক ও অভিভাবকরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে মহানবীকে কটূক্তির বিষয়টি অবহিত করেন। এসময় তারা মদন মোহন দাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। ওইদিনও মদন মোহন দাস স্কুলে আসে, অফিসও করে। সহকর্মী কারও কারও সঙ্গে আঙুল উঁচিয়ে মদন ‘কলা’ দেখায় (তোমরা আমার কিছুই করতে পারবে না)। তার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ দেয়ায় তিনি তা পাত্তাই দেননি।
শুক্রবার ছুটির দিনের পর গতকাল সকাল থেকে ওই ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দুপুর ১টার দিকে শত শত শিক্ষার্থী মদন দাসের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে ব্যাপক বিক্ষোভ করে। শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশের সাহায্য নেয়া হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রওশন আরা আক্তার ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এসময় তিনি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরো ক্যাম্পাস ঘিরে রাখে পুলিশ। এমন পরিস্থিতি চলাকালে মদন মোহন দাস গতকালও তার কার্যালয়ে অফিস করে। প্রধান শিক্ষকও তার কার্যালয়ে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে সভা করেন। তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, শিক্ষামন্ত্রী, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদফতরের মহাপরিচালকের (ডিজি) কাছে বিষয়টি অবহিত করেন। তবে কলেজ প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ ব্যাপারে কলেজের প্রধান শিক্ষক রওশন আরা আক্তার বলেন, ‘আমরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়েছি। ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রী ও ডিজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গতকাল বিকালে আমার দেশকে বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ জানানোর আগেই আমি ঘটনা শুনে সঙ্গে সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাদের বলেছি, বিস্তারিত তথ্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদফতরের ডিজিকে জানাতে। আমি এ ব্যাপারে ডিজিকে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের অধিবাসী মদন মোহন দাস ২০১০ সাল থেকে ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। সে বিভিন্ন সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হজরত মুহাম্মদ (স.) এবং ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কটূক্তি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিভাবকদের উপরোক্ত কটূক্তির অভিযোগ ছাড়াও লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়—এর আগে বিদ্যালয়ে এই মদন মোহন দাস আরও অনেক অনৈতিক কার্যকলাপ করেছে। কোনো ছাত্র দাড়ি রাখলে তাকে ছাগল বলে ডাকে এবং মারধর করে। মদন মোহন মুসলিম ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী, অভিভাবক সবার সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করে। বিশেষ করে মুসলিম শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করে।
লিখিত অভিযোগে সরকার ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে অভিভাবকরা হুশিয়ার করে বলেন, যদি সঠিক বিচার না হয়, তাহলে আমরা অভিভাবকরাই এ বিচার করতে বাধ্য হবো।
প্রসঙ্গত, ১৫ জুলাই গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জিটি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক শঙ্কর বিশ্বাস মণ্ডল মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-কে নিয়ে কটূক্তি করে। দশম শ্রেণীর ক্লাসে শিক্ষক শঙ্কর মণ্ডল বিশ্বাস দাড়ি রাখা নিয়ে হজরত মুহাম্মদ (স.)-কে ছাগলের সঙ্গে তুলনা করেছিল। ওই ঘটনায় পুরো গোপালগঞ্জে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল।


Click This Link
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×