somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশ সচল রাখতে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেয়া নয় কেন?

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশ সচল রাখতে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেয়া নয় কেন?
ভোরের কাগজ >বুধবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, http://www.bhorerkagoj.net/
সরকারের এমপি, মন্ত্রী, পুলিশ, বিজিবি সবার ডাক-হাঁকতো অনেক শুনলাম/শুনছি; আর বোমার আগুনে আমরা বারবার পুড়লাম/পুড়ছি। টিভিতে যাদের দেখছি প্রতিদিন আগুন দিচ্ছে, বোমা ছুড়ছে, ইটপাটকেল মারছে, রাস্তায় আগুন জ্বালাচ্ছে, গাড়িতে ভাঙচুর চালাচ্ছে তাদের কাউকেই তো এরেস্ট করে মিলিয়ে দেখাতে পারেনি সরকারের কোনো বাহিনী! তাদের কাউকেই তো করতে পারছে না স্পট এরেস্ট। সাধারণ মানুষ তো এখন তা-ই চায়। রাতের আঁধারে ক্রস ফায়ারের সুযোগ দিয়ে কেন তৈরি করছে এত বিতর্ক? তাহলে কিসের জন্য এত ডাক-হাঁক। এত ফালতু কথাবার্তা বলে কেন বারবার ক্ষেপিয়ে দেয়া হচ্ছে সন্ত্রাসীদের। কেন সরকারি দলের বাচাল নেতারা বলছে বিএনপির কিছুই করার মুরদ নেই। কেন বলা হচ্ছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব ঠাণ্ডা হয়ে যাবে? কেন এখনো হামলা হচ্ছে সাধারণ মানুষের ওপর? কেন বারবার পেট্রলবোমার আগুনে পুড়ে মরতে হচ্ছে আমাদেরই? তাহলে কি বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী এবং তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থক আঁতেলদের সেই কথাই সঠিক যে এ সব হামলাকারীরা সরকারেরই এজেন্ট? তা না হলে হামলাকারীদের প্রতি স্পটে এত মায়া দেখাচ্ছে কেন সরকারি বাহিনী? তা না হলে এমনটি মিলিয়ে দেখানো হচ্ছে না কেন যে, পুলিশ যাকে এরেস্ট করেছে সে-ই হচ্ছে টিভিতে বারবার দেখানো হামলাকারী ব্যক্তি? স্পট এরেস্টেড কোনো ব্যক্তি কি বলেছে, সে কার আদেশে পেট্রলবোমা মারছে নিরীহ মানুষের গায়ে? তাহলে কাদের সাক্ষাতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হবে, কে কে এই ফৌজদারি অপরাধের হুকুমের আসামি?

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক/অপরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামায়াত জোট বারবার হরতাল দেবে, অবরোধ দেবে, অসহযোগ দেবে এবং এসবকে কেন্দ্র করে যদি পারে তো অশান্তি দেবে, বিশৃঙ্খলা দেবে, সন্ত্রাস দেবে, আগুন দেবে, পেট্রলবোমা দেবে, স্কুল কলেজ মসজিদ মন্দির গাড়িঘোড়া অফিস আদালত কলকারখানা সব বন্ধ করে দেবে, এমনকি চাষাবাদও বন্ধ করে দেবে; এটাই যেন স্বাভাবিক মনে করছে বেশকিছু মানুষ। এ সব সন্ত্রাস প্রতিরোধে ব্যর্থ হলে এই সরকার টিকে থাকতে পারবে না কোনোভাবেই। এই ব্যর্থতাকে অবশ্যই সরকারের চরম ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হবে; এর পেছনে যেই থাকুক না কেন। বর্তমান সরকার ও সরকারি দলসমূহ কী ভাবছেন যে, কেবল বিএনপি-জামায়াতের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে তাদের নেতানেত্রীদের বকাবাদ্য করলে, হেনস্তা করলে, আটক করলে; দেশ ও মানুষের অপূরণীয় ক্ষতির এই দায় থেকে তারা মুক্তি পাবেন বা এর কোনো সমাধান পাবেন? নিশ্চয়ই না। অতি আঁতেলরা যাই বলুক; মনে রাখতে হবে, এ দেশের অধিকাংশ মানুষ শক্তের ভক্ত, নরমের জম। খারাপের সংখ্যা ও সমর্থক কিন্তু কম জন্মায়নি এতদিনে এই বাংলায়। তাইতো আজ সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের পক্ষেও অনেক লোক। তাদের আটক করে সময়, শক্তি, শান্তি ও জনপ্রিয়তা কমানোর কোনো প্রয়োজন নেই। কেবল সন্ত্রাসীদের শায়েস্তা করলে অবশ্যই ব্যর্থ হবে সন্ত্রাসী নির্ভর সব কর্মসূচি। কিছু সন্ত্রাসী দমন করতে যদি সরকার ব্যর্থ হয়, তো আসল আন্দোলন হলে টিকে থাকবে কেমন করে? প্রয়োজনে পরিমিতভাবে নিয়োজিত করা উচিত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের। কোনো আঞ্চলিক বা সাময়িক (পাহাড়ি, বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, দুর্ঘটনা ইত্যাদি) সমস্যা মোকাবেলায় যদি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা নেয়া যায়, তো দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার জন্য, দেশের উৎপাদন ঠিক রাখার জন্য, আমদানি-রপ্তানি চালু রাখার, যানবাহন সচল রাখার জন্য, পরীক্ষা ও শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা নেয়া যাবে না কেন?

আবারো বলছি অবরোধ শব্দের অর্থ বা প্রতিশব্দ হচ্ছে- প্রতিরোধ, গতিরোধ, বাধাদান, বিরত রাখা, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা ইত্যাদি। যার ইংরেজি শব্দ Blockade, Blockading, Barricaded, Barricading. আর পিকেটিং (Picketing- The activity to stop/prevent people from doing job.) শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে- লোকজনকে কাজে বাধাদান করা। এই দুটি কাজই এক কথায় অগণতান্ত্রিক। কেননা বৈধ কাজ করার অধিকার থেকে কাউকেই বিরত রাখা কোনো যুক্তিতেই গণতান্ত্রিক হতে পারে না। শিক্ষার্থীকে লেখাপড়া করায় বাধাদান, শ্রমিককে উৎপাদন কর্মে বাধাদান, কৃষকের কৃষিপণ্য বিক্রয় তথা উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, যানবাহন ও পরিবহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও অগ্নিসংযোগ, মানুষকে চলাচলে বাধাদান ও হতাহত করা, দিনমজুরকে তার কর্ম থেকে বিরত রাখা, রোগীকে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ না দেয়া ইত্যাদি অপকর্ম যে শুধু অগণতান্ত্রিক তাই নয় বরং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই দেশপ্রেমিক মানুষ এখন আর দেখতে চায় না বারবার আগুন জ্বালিয়ে, ভাঙচুর চালিয়ে, হতাহত করে অপরাধীরা চলে যাওয়ার পর এসে পুলিশের এ সব বিতর্কিত একশন। অথচ এ সব ফৌজদারি অপরাধ দমনে পুলিশ সত্যিকারভাবে সক্রিয় হলে অন্যরকম হতে পারত এ সব দৃশ্য। যেমন : (ক) মারছে, ভাঙছে, আগুন দিচ্ছে এবং পুলিশ হাতেনাতে ধরে এরেস্ট করে নিয়ে যাচ্ছে সেই অপরাধীকে। অথবা (খ) মারছে, ভাঙছে, আগুন দিচ্ছে আর সেখানেই তৎক্ষণাৎ পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে সেই অপরাধীরা এবং সেখান থেকেই এরেস্ট করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের। এই দরকারী একশনগুলো নেয়ার সাধ্যতো আমাদের পুলিশের না থাকার কথা নয়। এমনটি করা গেলে নিশ্চয়ই নতুন করে আর কেউ সাহস পেত না যখন তখন এমনভাবে মারো কাটো জ্বালাও-পোড়াও করার জন্য। পুলিশকেও আর এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে হতো না মিছিলে। মরতো না কোনো নিরপরাধ মানুষ। নিতে হতো না তথাকথিত গণহত্যার অভিযোগ। রক্ষা পেত আমাদের জানমাল। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজনে এই অগণতান্ত্রিক অবরোধ ও পিকেটিং এর বিরুদ্ধে কঠোর আইন করে পুলিশকে দিতে হবে সেরূপ ক্ষমতা।

মো. রহমত উল্লাহ : কলাম লেখক।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭



ছবি সৌজন্য-https://www.tbsnews.net/bangla




ছবি- মঞ্চে তখন গান চলছে, মধু হই হই আরে বিষ খাওয়াইলা.......... চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গান।

প্রতি বছরের মত এবার অনুষ্ঠিত হল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪। গত ২৪/০৪/২৪... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

×