যে কবিতার জন্য তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান জেলে গিয়েছিলেন
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
কবিতাটি জানার আগে এরদোগান সম্পর্কে একটু জেনে নিই। তুরস্কের টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯২৩ সালে তুর্কি প্রজাতন্ত্র যাত্রা শুরুর পর তিনি হলেন ১৮তম প্রেসিডেন্ট । রাজনীতিতে আসার আগে এরদোগান পেশাদার ফুটবলার এবং একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিতে চাকরি করেন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় নাজমুদ্দিন আরবাকানের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল সালভেশন পার্টির (মিল্লি সালামত পার্টি) মাধ্যমে।
এরদোগান ১৯৮৫ সালে রাফাহ পার্টির ইস্তাম্বুল প্রদেশের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ইস্তাম্বুল প্রদেশ থেকে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ সালের ২৭ মার্চ তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচনে রাফাহ পার্টি সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এ নির্বাচনে এরদোগান ইস্তাম্বুলের মেয়র এবং গ্রেটার মেট্রো ইস্তাম্বুল মেট্রোপলিটন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
তার জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির কারণে মেয়র হিসেবে তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯৯৭ সালের ১২ ডিসেম্বর দক্ষিণ তুরস্কে এক জনসভায় তুর্কি জাতীয়তাবাদী কবি জিয়া গোকাল্পের একটি কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে আলোচনায় ঝড় তোলেন। কবিতাটি ছিল এ রকম Mosques are our barracks. domes our helmets, minarets our bayonets, belevers our soliders. এ কবিতা আবৃত্তির দায়ে তুর্কি সেকুল্যর সরকার তাকে দণ্ডিত করে।
এরদোগানের দল ২০০২ সালের নভেম্বরে পার্লামেন্ট নির্বাচনে জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। বিজয়ী হয়েও আইনগত নানা প্রক্রিয়ার কারণে এরদোগানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া বিলম্বিত হয়। অবশেষে ২০০৩ সালের ১৪ মার্চ তিনি তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কারণ মেয়র থাকা অবস্থায় কবিতা পড়ার কারণে তিনি শাস্তি ভোগ করছিলেন।
আর এ কারণে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। তার শাস্তির মেয়াদ শেষ হলে এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ গুল তার আসন থেকে পদত্যাগ করলে সে আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থী হন এরদোগান। নিবাচিত হয়ে তিনি পার্লামেন্টে আসেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে আরো দুদফায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে একে পার্টি তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বার বার বিজয়ী হয়ে আসছে। যে কবিতাটি আবৃত্তি করে তিনি জেলে গিয়েছিলেন তা এখানে তুলে ধরা হলো:
সেনাবাহিনীর জন্য দোয়া
জিয়া গোকাল্প
১
হাতে হাতিয়ার, অন্তরে ঈমান
আমার চাওয়া দু’টি, দ্বীন এবং ওয়াতান
আমার ঘর সেনা ক্যাম্প, আমার নেতা মহান সুলতান
সুলতানকে রক্ষা করো হে ইয়া রব
তার হায়াত দীর্ঘায়িত করো হে রব
২
আমাদের পথ গাজীর, শেষ ইচ্ছা শাহাদাত
আমাদের ধর্ম সততার সাথে সেবা করা
ওয়াতান আমাদের মা, বাবা আমাদের মিল্লাত
ওয়াতানকে সমৃদ্ধ করো হে রব
মিল্লাতকে সুখি করো হে রব
৩
তোমার পতাকা তাওহিদের, আমার পতাকা হেলাল
একটি সবুজ, একটি অন্যটির পরিপূর্ণ
ইসলামের ব্যথায় ব্যথিত করো, দুশমন থেকে প্রতিশোধ নেয়ার তাওফিক দাও
ইসলামকে রক্ষা করো হে রব
দুশমনদের ধ্বংস করো হে রব
৪
যুদ্ধের ময়দানে দাও সাহসী বীর ও সেনাপতি
যে দ্বীন এবং দেশের জন্য শহীদ হবে
যে হবে অগ্নিশিখা, যুদ্ধের ময়দানে থাকবে শেষ পর্যন্ত
শহীদদের কবুল করো হে রব
পরিবারদের দুর্বল হতে দিয়ো না হে রব
৫
কমান্ডার, অফিসার আমাদের পিতা
সার্জেন্ট, ওমবাস আমাদের নেটওয়ার্ক
শৃঙ্খলা এবং সম্মান আমাদের কানুন
সেনাবাহিনীকে শক্তি দাও হে রব
পতাকা সুউচ্চ রাখো হে রব
৬
মিনার আমাদের বেয়োনেট, গম্বুজ হেলমেট
মসজিদ আমাদের ব্যারাক, মোমেনরা আমাদের সৈন্য
আমরা দ্বীনি যুদ্ধের জন্য অপেক্ষায়
আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর
আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর
বাংলাদেশের জন্য এরকম একজন ভাল নেতা দরকার যাকে নিজের দেশ ও সারা বিশ্ব সম্মান করবে।
তথ্য সূত্র: জানুন
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।
পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন
একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়
সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।
সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?
সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঘুষের ধর্ম নাই
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।
হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।
পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন