somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিক হবার প্রধান কারণ সমূহ

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


------------পর্ব-২--------------
পূর্বে নাস্তিক হবার কিছু প্রধান শর্ত সমূহ তুলে ধরা হয়েছিল যার মাধ্যমে একজন সাধারন ব্যাক্তিও খুব সহজে ছুপা নাস্তিকদের চিনতে পারবে। এবারে আলোচনা করা হবে আসলে কি কি কারনে একজন ব্যাক্তি নাস্তিকে পরিনত হয়। মোটামুটিভাবে নাস্তিক হবার কারণ সমূহকে বর্ননার ভিত্তিতে দুই ভাগে ভাগ করা যায় । যেমনঃ- ১) সংক্ষিপ্তভাবে এবং ২) বিস্তারিত বা বিশদভাবে । এখানে ১মেই সংক্ষিপ্তভাবে কারণগুলো আনা হবে। এর পরবর্তীতে ইনশাহ আল্লাহ বিস্তারিত বা ডিটেইলস কারনগুলোও বর্ননা করা হবে।
১) কারও মস্তিস্কে ধর্মীয় শিক্ষার তুলনায় সেকুলার শিক্ষার আধিক্য যদি তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে ।
২) সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার এর সংগে ধর্মকে গুলিয়ে ফেলা।
৩) ধর্মীয় মুখোস পরা কুলাংগার কিছু ব্যাক্তিদের কর্মকান্ডকে ধর্মীয় নীতি ভেবে ধর্মের প্রতিই প্রচন্ড ঘৃনার জন্ম নেয়া।
৪) কাঠমোল্লাদের বানীকেই ধর্মীয় চুরান্ত বানী মনে করা।
৫) নিজের পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধবদের ধর্মীয় ব্যাকগ্রাউন্ড দূর্বল হলে অথবা তারা নাস্তিক বা ধর্মবিরোধী হলে ।
৬) নিজের কাছে প্রচন্ড ভাল লাগার বিষয়বস্তু যদি দেখা যায় ধর্মে চরমভাবে নিষেধ থাকে।
৭) বিভিন্ন ধার্মিক ব্যাক্তিত্ব যেমনঃ- নবী-রাসুল বা অবতারগনের স্বভাব চরিত্র নিজেদের স্বভাব চরিত্রের মতই হবে ভেবে সেই দৃষ্টিভংগিতেই ধর্মকে দেখে থাকলে অর্থাৎ- উনাদের চালাক, লোভী ইত্যাদি ভাবা।
৮) ধর্ম এবং বিজ্ঞান সম্পর্কে সত্যিকারের স্বচ্ছ জ্ঞানের অভাবে ধর্ম ও বিজ্ঞান এ দুয়ের মাঝে সমন্বয়ে ব্যার্থতা ।
৯) পূর্ব থেকে ধর্ম সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান অর্জন না করে বিভিন্ন ধর্মবিরোধী বই বা নাস্তিকদের লেখা বই পড়া এবং যা লিখা আছে তাই অন্ধভাবে বিশ্বাস করা আর পরবর্তীতেও এগুলো নিয়ে কোনরকম বাছ বিচার করার চেষ্টা একেবারেই না করা।
১০) সত্যিকারের সৎ চিন্তাশীল না হওয়া আর জীবন-মরণ এসব মৌলিক বিষয় নিয়ে সবচেয়ে কম ভাবা ।
১১) পূর্বে আস্তিক থাকাবস্থা হতেই পরজনমের লোভ সুখ ইত্যাদির চাইতে বর্তমান দুনিয়ার সুখ, ভোগ বিলাসকেই বড় করে দেখা অর্থাৎ নগদে বিশ্বাসি হওয়া বা দুনিয়া লোভী হওয়া ।
১২) না বুঝে ঈশ্বরের কাছে আজগুবি অনেক কিছু চেয়েও না পাওয়া এবং বিভিন্ন ভাবে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করা অর্থাৎ ঈশ্বরই তার কাছে আগে ধরা দিক এমন মনোভাবে থাকা।
১৩) সৃষ্টির নিজেদের ভুলের কারনে স্রষ্টাকে দোষারব করা। মনে মনে বা প্রকাশ্যে ঈশ্বরকে গালি দেবার পর কখনই আর এজন্য ক্ষমা না চাওয়া।
১৪) সরাসরি বা গোপনেও কোন কারনে ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে।
১৫) পশ্চিমা কালচারের প্রতি মন থেকে আকৃষ্ট হলে বা ধর্মকে সেকেলে মনে হয় কিন্তু বর্তমান এই ইহুদী খ্রীষ্টানদের সভ্যতাকে আধুনিক মনে হয় এবং এটাই মানব মুক্তির একমাত্র উপায় ভাবলে।
১৬) নিজেই নিজেকে ভালভাবে বুঝতে না পারা এবং সত্যিকারের নিরপেক্ষতার অভাব অর্থাৎ কারও অর্জিত নিজস্ব জ্ঞানের ভান্ডারে যদি ধর্মীয় জ্ঞান এর তুলনায় সেকুল্যার জ্ঞান অনেক বেশী হয়ে থাকে তবে সে নাস্তিকতাকে পছন্দ করবে আর ধর্মকে অপছন্দ করা শিখবে কিন্তু এমনটি সে করবে কারন তার নাস্তিকতার জ্ঞানের পাল্লা বেশি ভারি কিন্তু পাশাপাশি সে যদি ধর্মীয় জ্ঞানের পাল্লাটাও সমান রাখত বা কাছাকাছি মাপেও রাখত তবে সে সত্যিকারের নিরপেক্ষতার সাথে যাচাই বাছাই করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারত কিন্তু সে এই অন্তর্মুখি নিজস্ব জ্ঞানের ব্যাপারে নিরপেক্ষতার অভাবে নাস্তিক হয়ে থাকে অথচ সে নিজেও জানে না।
১৭) ভুল সোর্স হতে জ্ঞানার্জন । যেমন- নাস্তিকরা সাধারনত সেকুল্যার শিক্ষা গ্রহন করে সেকুল্যারদের কাছ থেকে আবার ধর্মের জ্ঞানও অর্জন করে সেকুল্যার নাস্তিকদের কাছ থেকেই যা চরম একটি বোকামী কারণ- একই ব্যাক্তিকে দেখা যাবে যে সে কখনও সাহিত্য শিক্ষার জন্য বিজ্ঞানের শিক্ষকের কাছে সরানপন্ন হয় না আবার গনিতের জটিল সমাধান জানতে বাংলা প্রভাষকের দরজাও নক করে না। তাই ধর্মের ব্যাপারে ধার্মিক ব্যাক্তি ভাল জানবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু তারা ধর্মের ব্যাপারে আজগুবি সব তথ্য বিভিন্ন ধর্মবিরোধীদের ভুল সোর্স হতেই জানে আর দু একটি জটিল প্রশ্ন এমন সব কাঠমোল্লাদের কাছে করে নিজেদের জয়ী ভাবে, যাদের বেশির ভাগই কিছু মাত্র ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করেছে নিজেদের পেট চালাবার জন্য ।
১৮) যদি কেউ এক চোখ দিয়ে দেখে যে, সেকুল্যার-নাস্তিক লোকেরাই মানব প্রেম এবং সততার বুলি আওরাচ্ছে আর মানব সেবামূলক কাজ করছে এমনকি জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, চিকিৎসা, আর্থ-সামাজিক, সামরিক-রাজনৈতিক সর্বদিক দিয়ে তারাই বেশী এগিয়ে পক্ষান্তরে ধর্মীয় লেবাসধারীরা শুধুই ধর্মের কথা বলে মানুষের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে জীবন ধারন করছে কিন্তু সমাজে তাদের সরাসরি কোন কর্মমূখী প্রভাব নেই।
১৯) কারও পরিবারের প্রধান কর্তা কর্তৃ যদি নাস্তিক হয় অথবা প্রচন্ড কঁড়া ধর্মীয় গোঁড়ামীপূর্ণ হয়ে ছেলে মেয়েদের প্রতি জোড় জবরদস্তিমূলক ধর্মীয় কার্যাবলি চাপিয়ে দেয় কিন্তু ধর্ম সম্পর্কে গভীর জ্ঞান না দেয়া হয় আবার আশপাশেই যদি চলে অধর্মীয় কৃষ্টি কালচার এর স্রোত।
২০) লোক সমাজের কাছে কি পছন্দনীয় তার উপর নির্ভর করে যারা জীবন পরিচালনা করে তারা যদি দেখে বেশিরভাগ মানুষই ধর্মকে গোঁড়া, ক্ষ্যাত, আনস্মার্ট, কুসংস্কারপূর্ন, বর্বর ইত্যাদি খারাপ কিছু ভাবে তবে তারাও ধর্মহীন হবার চেষ্টা করবে যদি তাদের ধর্মজ্ঞান ভাল না থাকে, এমনকি ধর্মজ্ঞান ভাল থাকলেও বাহ্যিকভাবে নিজেকে সেকুল্যার দেখানোর চেষ্টা করবে অনেক ক্ষেত্রে ধর্মীয় বড় বড় নিয়ম নীতিকেও বিষর্জন দিতে দ্বিধা করবে না।
২১) জেনেটিক্যালী বুদ্ধির পরিমান কম থাকলে বা বুদ্ধি যদি শুধুই নেগেটিভ দিকেই ধাবিত হয়। তাছারা ষ্টিফেন হকিংসের মত প্রতিবন্ধী হলেও নাস্তিক হতে পারে।
২২) পূর্বের বিভিন্ন ধর্মের মাঝে হিন্দু, বৌদ্ধ, অগ্নিপূজক , প্যাগান(মূর্তি পুজারী) এদের তুলনামূলক নাস্তিক হবার সম্ভাবনা বেশি ইহুদী খ্রীষ্টানদের চাইতে। অথচ সেকুল্যার শিক্ষিত মুসলিমদেরও কিন্তু আস্তিক থাকার পরিমান সবচেয়ে বেশি কারণ ইসলাম ধর্ম হল সর্বশেষ অবিকৃত ধর্ম।
২৩) আরবী ভাষা না শিখে সরাসরি অনুবাদের মাধ্যমে কুরান-হাদিস অধ্যয়ন করলে আর তা না হলেও অন্তত ব্যাকরণ সম্পর্কে ভাল ধারনা না রেখে শুধুই অনুবাদ নির্ভর হলে। এমনকি কেউ কুরানে ভূল বের করার উদ্দেশ্যে অধ্যয়ন করলেও।
২৪) মুসলিমদের ক্ষেত্রে ১মে ঈমান আক্বিদা শিক্ষা না করে মুত্তাকী(আল্লাহভীরু) নয় এমন কেউ কুরান শিক্ষা করতে গেলেও নাস্তিক হবার সম্ভাবনা থাকে।
২৫) প্রাপ্ত বয়স্ক হবার পরও দীর্ঘদিন বেনামাজী থাকা এবং ধর্ম এবং ধার্মীক লোকদের হতে দূরত্বে থাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ২:২৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×