মানুষ অনেক রকম হয়। তারমধ্যে অন্যতম বিবেকবান মানুষ। বিবেক সবারই থাকে কম বেশি। নিজের স্বার্থ নিয়ে প্রশ্ন আসলে বিবেক একটু আড়ালে যাবে এটায় বাস্তব। বাস্তব কেন বললাম জানেন? আপনি পূর্ণ বিবেক দিয়ে কাজ করলেও আপনার পাশের জন তা করবেনা। দিন শেষে তাতে আপনি বা আপনার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
সৃষ্টির শুরুতে আধিপত্যটা ছিল বল পূর্বক। গোত্রে যে যত শক্তিশালী সেই হবে দলের প্রধান। সেদিক দিয়ে নারী স্বভাবতই তুলনামূলক ভাবে ছিল নমনীয়। কাজেই তারা নিজেদের ভাবতেই পারেতো না সমাজের প্রধান হিসেবে। ক্ষমতায়নটা ছিল পুরোটায় পুরুষ কেন্দ্রিক। এই শারীরিক সবলতার জোর একসময় যখন বুদ্ধি দিয়ে পরাজিত হয় তখন থেকেই ঘটে শিক্ষার প্রসার। শিক্ষার ক্ষেত্রে নারী পুরুষ সবার ধারন ক্ষমতা এক। কাজেই আধিপত্যের প্রতিযোগিতাটা এখন হয় অনেক বেশি।
নারী চাই পুরুষের উপর আধিপত্য আবার পুরুষ চাই তার পুরানো ঐতিহ্য। এই দুই এর বৈষম্য সৃষ্টির শেষ পর্যন্ত থাকবে।
অনেক অনেক নারীবাদী জন্মাবে। অনেক অনেক পুরুষবাদী জন্মাবে। অনেক কাদা ছুঁড়াছুঁড়ি হবে। তারপরও নারী পুরুষে ভালবাসা হবে। মায়া থাকবে। ত্যাগ থাকবে। প্রেমের উপন্যাস রচনা হবে। তাজমহল গড়বে আবার কোনো শাজাহান। এটায় সৃষ্টির ইকোসিষ্টেম।
এই ইকোসিষ্টেমের প্রধান উপদান হচ্ছে বিশ্বাস। একটা নারী একজন পুরুষকে পুরোটা বিশ্বাস করে নিজ ঘর ছেড়ে আসে অকপটে। অনেক পুরুষই তার মুল্যায়ন না করতে পারার কারনে নারীর অন্তরে জন্মে পুরুষ বিদ্বেষী ভাবনা। আবার পক্ষান্তরে একজন পুরুষ যখন সত্য কোনো নারীর প্রেমে পড়ে তখন হাজার বাধা উপেক্ষা করেও সে তাকে পেতে চাইবে এটাই তার বৈশিষ্ট। আর কিছু ক্ষেত্রে নারীর বিশ্বাসঘাতকতা পুরুষের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। এই দুই শ্রেনীর বিশ্বাসঘাতকতায় তারা উভয়েই হয়ে উঠে কঠোর, বিবেকহীন বা ভালোবাসাহীন।
এ মানুষগুলো আর কখনো কাউকে পুরোপুরি বিশ্বাস করেনা। পরবর্তীতে তাদের কাছে আসা ভালো মানুষগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাদের প্রতি থাকে সঙ্গীদের সারা জীবনের অভিযোগ। ভালোবাসতে জানেনা, হাসতে জানেনা, মায়া বুঝে না, অভিমান বুঝে না ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু, একসময় সে এ সব গুনেই হয়তো গুণান্বিত ছিল। কিন্তু এখন নাই।
বিশ্বাস কি তবে মরে যায়? নাকি ভালোবাসা হেরে যায়? নাকি মানুষ বদলে যায়?
আসলে এর কোনটিও নয়। এর উত্তর হচ্ছে- ক্ষমাহীনতা।
ক্ষমা এমন একটা জিনিষ যা করতে পারাটা সহজ কিন্তু অবস্থান-কাল-পাত্র ভেদে আবার অনেক কঠিন।
একসময় বিশ্বাসঘাতক প্রেমিকা বা প্রেমিক কখনো নিজের ভুল বুঝে ফিরেও আসে হয়তো। হয়তো জিজ্ঞেস করবে আমাকে অভিশাপ দাওনি? আমার প্রতি প্রতিশোধ নিতে ইচ্ছা হয় না? আমাকে আর মনেও পড়ে না??
কি বলবেন আপনি? খুব ঘৃনা হবে তার উপর? খুব রাগ করবেন? লণ্ডভণ্ড করে দিতে ইচ্ছা হবে সব?
না এর কিছুই দরকার নাই। বরং তাকে তার সবচেয়ে বড় শাস্তিটায় দিতে পারবেন।
তাকে উত্তরে বলে দিবেন- "না"। এর কনোটাই হয় না। কারন তোমাকে আমি মন থেকে ক্ষমা করে দিয়েছি। এর চাইতে বড় প্রতিশোধ আর কি হতে পারে। এমন ভাবে ক্ষমা করে দিয়েছি যে তোমার কোনো অস্তিত্বই আমার কাছে আর নেই এখন। এর চাইতে বড় প্রতিশোধ আর কি হতে পারে ভালবাসায়?
আর এবাভেই বিশ্বাসের ইকোসিষ্টেম টিকে থাকে অনন্ত!
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:০৪