২০১১ সালে বিবিসিতে প্রচারিত হয় মহানবীর (সা) জীবনীভিত্তিক ডকুমেন্টারি ‘দ্য লাইফ অব মোহাম্মদ’। তিন পর্বের এই ডকু-ফিল্মটি সম্প্রচারের পর পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাপক আলোচিত হয়। এই প্রথম কোনো পাশ্চাত্য মিডিয়া মহানবীর (সা) জীবনীর উপর পূর্ণাঙ্গ কোনো অনুষ্ঠান সম্প্রচার করলো। ডকুমেন্টারিটির স্ক্রিপ্ট লিখেছেন ব্রিটিশ স্কলার জিয়াউদ্দীন সরদার। উপস্থাপনা করেছেন ব্রিটিশ সাংবাদিক রাগেহ ওমর। ক্রিসেন্ট ফিল্মস নির্মিত ডকুফিল্মটির পরিচালনা করেছেন ফারিস কেরমানী। মহানবীর (সা) জন্মস্থান মক্কা, হেরা গুহাসহ ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে উপস্থাপক দর্শকদের নিয়ে গেছেন। পক্ষ-বিপক্ষের স্কলারদের প্রচুর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। মহানবীর (সা) জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে পাশ্চাত্য একাডেমিয়াতে সাধারণত যেসব প্রশ্ন তোলা হয়, এখানে ধরে ধরে সেসব ‘আপত্তি’ বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আজ এর দ্বিতীয় পর্ব দেয়া হল।
পর্ব-১
তৎকালীন আরবের সমাজ কাঠামো
আমরা জানি, তিনি কোরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই গোত্রটি মক্কা নগরী শাসন করতো। আমরা এটিও জানি, তাঁর পরিবার ছিলো গরিব। জন্মের আগেই তাঁর বাবা মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি মোহাম্মদের (সা) মা আমেনার কাছে খুব সামান্য অর্থই রেখে যেতে পেরেছিলেন। তৎকালীন আরব ঐতিহ্য অনুযায়ী জন্মের মাত্র কয়েক মাস পরেই তাঁকে শহরের প্রান্তে এক বেদুইন পরিবারের কাছে লালন-পালনের জন্যে দেয়া হয়। তিনি জীবনের প্রথম চার বছর একজন বেদুইন ধাত্রীর কাছে যাযাবর হিসেবে পালিত হন।
বসবাসের জন্য তৎকালীন আরব ছিল অত্যন্ত প্রতিকূল একটি জায়গা। সেখানে কোনো আইন ছিলো না, কোনো রাষ্ট্রব্যবস্থা ছিলো না। শান্তি ছিল সুদূর পরাহত। গোত্রীয় আনুগত্য এবং সামাজিক রীতিনীতিই ছিল নিরাপত্তার একমাত্র উপায়। ন্যায়বিচার ছিল দুর্লভ ব্যাপার। কদাচিৎ হয়তো এ ধরনের সুবিধা পাওয়া যেতো। অপরাধের শাস্তি ছিল নৃশংস। যেমন, রুটি চুরি করে কেউ ধরা পরলে প্রায় সময় তাকে মেরে ফেলা হতো। বেঁচে থাকার জন্য নিত্যদিনের কঠোর সংগ্রাম মানুষকে কতটা নিষ্ঠুর করে তুললে এমনটি করা সম্ভব! অধিকাংশ মানুষের ভালোভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ বলতে গেলে ছিলোই না। এই সময়ের বাস্তবতাকে বুঝানোর জন্য মুসলমানরা একটা বিশেষ শব্দ ব্যবহার করে থাকে– ‘জাহেলিয়াত’ তথা অজ্ঞতার যুগ।
সেই সমাজেরও একটি কাঠামো তথা বিশ্বাসব্যবস্থা ছিল। তবে ধর্ম বলতে আমরা এখন যা বুঝি, সে ধরনের সুসংগঠিত কোনো ধর্ম তখন সেখানে ছিলো না। ড. আমিরা বেনিসনের মতে,
আরবের লোকেরা ছিল বহু-ঈশ্বরবাদী। তারা অসংখ্য দেবদেবীর পূজা করতো। সাধারণত প্রত্যেক গোত্রের ভিন্ন ভিন্ন নিজস্ব দেবদেবী ছিলো। পুরো আরব জুড়ে ছিলো একই চিত্র।
মোহাম্মদের (সা) জন্মস্থান মক্কা এই বহু-ঈশ্বরবাদী পূজা-অর্চনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিলো। ‘মোহাম্মদ: অ্যা বায়োগ্রাফি অব দ্যা প্রফেট’ বইয়ের লেখিকা ক্যারেন আর্মস্ট্রং বলেন,
বর্তমানে পৌত্তলিকতা বলতে আমরা যেমনটা বুঝি, তৎকালীন আরবের অধিকাংশ শহর ও অঞ্চলে কার্যত তেমন ধরনের পৌত্তলিকতাই দীর্ঘদিন সুপ্রতিষ্ঠিত ছিলো। ঘরের মাঝখানে এক ধরনের বর্গাকার বেদি থাকতো। বেদির চারপাশ ঘিরে বিভিন্ন ধরনের দেবদেবীর মূর্তি দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। বিশেষ করে শহর ও কৃষিনির্ভর অঞ্চলগুলোতে এই প্রবণতা কিছুটা বেশি ছিলো। আল্লাহকে তারা সর্বোচ্চ খোদা মনে করতো। বেশিরভাগ আরবই অবশ্য খুব একটা ধার্মিক ছিলো না।
মুসলমানদের প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, আদমের (আ) সময় স্বয়ং আল্লাহ কর্তৃক কাবাঘর নির্মিত হয়েছিলো। তবে ঘরটির প্রকৃত নির্মাণকাল সম্পর্কে কোনো প্রত্মতাত্ত্বিক বা ঐতিহাসিক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় না। মোহাম্মদ (সা) যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন দীর্ঘকাল ধরেই মক্কা ছিলো আরবের লোকদের পৌত্তলিকতা চর্চার কেন্দ্র। তীর্থস্থান বিবেচনা করে লোকেরা সেখানে ভ্রমণ করতো। ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটরের আরব অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক সাজ্জাদ রিজভী বলেন,
মুসলিম বর্ণনা মতে, আল্লাহর ইবাদতের জন্য প্রধান প্রার্থনাগৃহ কাবার অস্তিত্ব স্মরণাতীত কাল থেকে বিদ্যমান। তাই ধারণা করা হয়, আল্লাহর ঘর কাবার প্রথম নির্মাতা ছিলেন আদম (আ)। সেই থেকে পরবর্তীতে অনেক নবী-রাসূল ঘরটির দেখাশোনা করেছেন। কিন্তু ধীরে ধীরে মানুষ এক আল্লাহর ইবাদত করা থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। তারপর ইবরাহীম (আ) ও তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আ) কাবাঘর পুনর্নিমাণ করেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে কাবা নির্মাণের প্রকৃত উদ্দেশ্যটি লোকেরা ভুলে যায়।
মক্কার সাথে ইবরাহীমের (আ) সম্পর্ক নিয়ে কোনো অমুসলিম সূত্রের বর্ণনা পাওয়া যায় না। তবে এটুকু জানা যায়, মোহাম্মদের (সা) জন্মের সময় কাবা ঘরে ৩৬০টিরও বেশি দেবদেবীর মূর্তি ছিলো। তবে এগুলোর মর্যাদার তারতম্য ছিলো। প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হতো, যাতে বিরোধী গোত্রগুলো নির্ভয়ে মক্কায় এসে কাবা প্রদক্ষিণ করতে পারে এবং নিজ নিজ দেবতাদের উপাসনা করতে পারে। এখানে বার্ষিক তীর্থযাত্রাকে কেন্দ্র করে ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছিলো। মোহাম্মদ (সা) কোরাইশ গোত্রে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যাদের হাতে ছিলো কাবার নিয়ন্ত্রণ। ফলে তারা ছিলো ধনী ও ক্ষমতাবান। অবশ্য মোহাম্মদ (সা) স্বয়ং এই সম্পদ ও ক্ষমতাবৃত্তের বাইরে ছিলেন।
________________________________________
শৈশবে নিঃসঙ্গ মোহাম্মদ
পাঁচ বছর বয়সে মুহাম্মদকে (সা) মক্কায় তাঁর মা আমেনার কাছে ফিরিয়ে আনা হয়। কিছুদিন পর আমেনা মনস্থির করলেন, ইয়াসরিবে নিজের পরিবারের সাথে দেখা করতে যাবেন। শহরটি মক্কা থেকে প্রায় তিনশ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। ফিরতি পথে তিনি ছিলেন বেশ অসুস্থ। তার উপর মরুভূমিতে উটের কাফেলার সাথে চলার কারণে তার অসুস্থতা আরো বেড়ে যায়। এরমধ্যে আবুয়া নামক এক ছোট্ট মরুদ্যানে কাফেলা থামলো। তারা সেখানে মোহাম্মদ (সা) ও তাঁর মাকে রেখে যায়। তারা ভেবেছিলো, এখানে কিছুদিন বিশ্রাম নিলে তিনি হয়তো সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু আসলে তা হওয়ার ছিলো না। এর কয়েকদিন পরই আমেনা মারা যান। মা-বাবা দুজনকেই হারিয়ে মোহাম্মদ (সা) পৃথিবীতে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। মাত্র ছয় বছর বয়সে তিনি একজন এতিম বালকে পরিণত হন।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনা পরবর্তীতে মোহাম্মদের (সা) দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যক্তিত্ব গঠনে বিশাল ভূমিকা রেখেছিলো। ‘দ্যা প্রফেট মোহাম্মদ: এ বায়োগ্রাফি’ বইয়ের লেখক বারনাবি রজারসন বলেছেন,
সেই নির্জন স্থানটিতে মোহাম্মদ কার্যত নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছিলেন। মায়ের মৃত্যু দেখা ছাড়া তাঁর আর কিছুই করার ছিলো না। একসময় এই পরিচিত যাত্রাপথটিতে আরেকটি কাফেলা আসলেই কেবল তিনি পুনরায় সমাজে ফিরে যেতে পেরেছিলেন। নিঃসন্দেহে এটি ছিল ভয়ংকর, মর্মন্তুদ ও দুঃসহ একটি অভিজ্ঞতা।
শিশু মোহাম্মদের (সা) সামনে আরো স্বজন হারানোর বেদনা অপেক্ষা করছিলো। মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর দাদা তাঁকে দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র দুই বছর পর তিনিও মারা যান। তারপর তাঁকে লালন-পালনের দায়িত্ব নেন চাচা আবু তালেব। তিনি ছিলেন মক্কার অভিজাতদের মধ্যে অন্যতম ক্ষমতাধর একজন ব্যক্তি। পেশায় ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক কাজে তিনি সিরিয়ায় বাণিজ্য কাফেলা পাঠাতেন।
ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে মক্কার গুরুত্ব
ব্যবসায়িক রুট হওয়ার কারণে প্রাচীনকাল থেকেই আশপাশের জনবহুল অঞ্চল ও সভ্যতাগুলোর সাথে আরব অঞ্চলের যোগাযোগ ছিলো। মক্কা ছিলো এই চেইনের একটি লিংক। বারনাবি রজারসনের মন্তব্য,
আমার ধারণা, ব্যবসায়ী কাফেলাগুলো ইয়েমেন থেকে মশলা, সিলভার ও চামড়া বোঝাই করে মক্কায় নিয়ে আসতো। মক্কার কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠী তাদের নিকট থেকে এসব কিনে নিতো। তারপর তারা সিরিয়া, গাজা, মিশর, ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এসব নিয়ে বিক্রি করতো। আপনি তখন সেখানে গেলে হয়তো দেখতে পেতেন, পবিত্র ঘরটির পাশেই ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের হই-হট্টগোল চলছে, উটগুলো জড়ো করে মালামাল বোঝাই করা হচ্ছে।
মুসলমানরা মক্কাকে তৎকালীন ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র এবং তাদের নবীর জন্মের জন্য উপযুক্ত একটি স্থান হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। তবে কোনো কোনো ইতিহাসবিদ মক্কার ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেন। এমন একজন হলেন লেখক ও ইতিহাসবিদ টম হল্যান্ড। তিনি বলেন,
মুসলমানরা আমাদের সামনে মক্কাকে একটি বিশাল বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে তুলে ধরে। তাদের মতে, মক্কা ছিলো পৌত্তলিকদের কেন্দ্রভূমি। কিন্তু সমস্যা হলো, এই দাবির পেছনে ওই যুগের দলিলপ্রমাণ ও প্রত্মতাত্তিক সমর্থন নেই। মক্কা তৎকালীন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে থাকলেও (যদি তা আদতেই হয়ে থাকে) সে বিষয়ে ইসলামী যুগের পূর্বেকার কোনো তথ্য আমরা একদমই জানি না।
অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদেল হালিম এ জাতীয় অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন,
তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সহজেই বলা যায়, মক্কা ছিলো মরু-আরবের কেন্দ্র। আমরা জানি, এইসব বিদেশী ঐতিহাসিকদের পক্ষে আরব মরুভূমির মতো প্রতিকূল ভূখণ্ড পেরিয়ে মক্কায় যাওয়া সম্ভব ছিলো না। তারা শুধু সমুদ্র ও উপকূলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছেন। তাই মক্কা নিয়ে তাদের ধারণা না থাকার বিষয়টি সহজেই অনুমেয়। যেমন ধরুন, এখানকার লোকজন সাধারণত টিম্বাকটুর কথা বলে না, আঠারো শতক বা তার আগের সময়ের প্রসঙ্গে সাধারণত কিছু বলে না। তারমানে এই নয়, এর আগে এসবের অস্তিত্ব ছিলো না।
কোনো কোনো ঐতিহাসিকের অভিযোগ, মোহাম্মদের (সা) মৃত্যুর পর মুসলিম ঐতিহাসিকরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মক্কার গুরুত্ব অতিরঞ্জিত করে বর্ণনা করেছে। তাদের মতে, এর মাধ্যমে মুসলমানরা দেখাতে চায় মুহাম্মদ (স) এমন একটি উন্নত এবং গুরুত্বপূর্ণ শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যে শহরটির নিজস্ব ধর্মীয় ঐতিহ্য ইহুদি-খ্রিস্টানদের প্রভাবমুক্ত ছিলো। এ ধরনের অভিযোগের পক্ষে ইমেরিটাস অধ্যাপক জেরাল্ড হটিং বলেন,
মক্কা নামে তখন কোনো স্থানই ছিলো না, এমনটি আমি বলবো না। তবে ইসলাম আসার আগে মক্কার অস্তিত্ব খুব ভালোভাবে প্রমাণিত নয়। আমার ধারণা, ইসলামে যে মক্কার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে, প্রাথমিক যুগের মুসলমানরা তা বুঝতে পেরেছিলো। ফলে ধীরে ধীরে এই ধারণাটি বিকাশ লাভ করেছে। প্রাথমিক যুগ বলতে আমি নবী কিংবা তাঁর তৎকালীন অনুসারীদের কথা বলছি না। ইসলামের উত্থানের সাথে সাথে মধ্যপ্রাচ্যে আরবদের বিজয়ের হাত ধরে যে সমাজ গড়ে ওঠেছিলো, তার কথা বলছি।
মহানবীর বাণিজ্য সফর
যাই হোক, তরুণ বয়সে বাণিজ্য সফরে অংশগ্রহণ ছিল মোহাম্মদের (সা) জন্য একটা বিশাল অভিজ্ঞতা। এ সফরের মাধ্যমে তিনি শুধু দারিদ্র্য থেকে মুক্তিলাভই করেননি, এর মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সাথে তাঁর যোগাযোগও ঘটেছিলো। বিস্তীর্ণ মরুভূমি, ছোট ছোট মরুদ্যান, আরব শহর এবং প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসপ্রাপ্ত বিভিন্ন নগরীর মধ্য দিয়ে বাণিজ্য কাফেলাটি ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতো। এসব নগরীর মধ্যে আরবের নাবাতীয় সভ্যতার রাজধানী পেত্রার কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ভয়াবহ ভূমিকম্পে শহরটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। এই সফর থেকে মোহাম্মদ (সা) হয়তো অন্যান্য জনগোষ্ঠী, সংস্কৃতি ও ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে জেনে থাকবেন। বারনাবি রজারসন এ ব্যাপারে বলেন,
অতি ধার্মিক মুসলমানদের সাথে কথা বলে দেখেছি, তারা এ ধরনের কোনো প্রভাব থাকার কথা একদমই মানতে চায় না। তারা মনে করে, মহানবী হলেন এমন এক সাদা কাগজ, যেখানে প্রতিটি শব্দ স্বয়ং আল্লাহ লিখে দিয়েছেন। কেউ চাইলে এ রকম ভাবতেই পারে। তবে আমি মনে করি, বাণিজ্য কাফেলার সাথে তাঁর সফরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিভিন্ন গোত্র সম্পর্কে জানা, ব্যবসা-বাণিজ্যের অভিজ্ঞতা লাভ, বিশ্বের কাছে মানুষের চাওয়া-পাওয়া ও বিশ্বের নানা ধরনের জটিলতা সম্পর্কে অবহিত হওয়া, পেত্রাসহ বড় বড় আরব সভ্যতাগুলোর ধ্বংসাবশেষ ও দামেস্কের ঐশ্বর্য প্রত্যক্ষ করাসহ দুনিয়ার বিবিধ বিষয়ে অভিজ্ঞতা লাভের মাধ্যমে তিনি আরব বিশ্বের তৎকালীন বাস্তবতাকে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।
(চলবে)
মূল লেখার লিঙ্কঃ https://cscsbd.com/2162