নয়াদিল্লি, ১ অক্টোবর- মন্দিরে গোমাংসখণ্ড ছোড়ার অভিযোগে হাতেনাতে ধরা পড়ল বোরখার আড়ালে থাকা আরএসএস কর্মী। আজমগড়ের ঘটনায় বিফ বিতর্কে যোগ হল নয়া মাত্রা।
হিন্দু মন্দির চত্বরে গোমাংস ছুড়ে ফেলে সাম্প্রদায়িক বিভেদ উস্কে দেওয়ার ঘটনা সাম্প্রতিক কালে দেশের নানা প্রান্তে দেখা দিচ্ছে। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মন্দিরের ভিতর মাংসখণ্ড ছুড়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে বোরখা পরা এক ব্যক্তি। আবরণ উন্মোচনের পর পোশাকের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে এক তরুণ। টুইটারে সেই ছবি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
টুইট-এ দাবি করা হয়েছে, ওই ব্যক্তি কট্টর আরএসএস সমর্থক ও কর্মী। সংখ্যালঘুর ভেক ধরে হিন্দুদের পবিত্র স্থান কলুষিত করার চেষ্টার পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। ধৃত যুবককে নিযে আজমগড়ের রাস্তায় মিছিল বের করা হয় বলেও সোস্যাল মিডিয়ার বার্তায় জানানো হয়েছে।
বাড়িতে গো-হত্যা করেছেন, এই মিথ্যা রটনার জেরে গত সোমবার রাতে গ্রেটার নয়ডার দাদরি-তে গণপিটুনির জেরে খুন হন বিসরাখা গ্রামের বাসিন্দা বছর আটান্নর মুহাম্মদ এখলাক। ঘটনার জেরে তীব্র সমালোচনায় তোলপাড় হয় সোশ্যাল মিডিয়া। তদন্তে জানা গিয়েছে, স্থানীয় মন্দিরের ঘোষণার জেরেই এখলাকের বাড়িতে চড়াও হয় উন্মত্ত জনতা। পুলিশের দাবি, জেরায় মন্দিরের পুরোহিত কবুল করেছেন যে তাঁকে ওই ঘোষণা করতে বাধ্য করেছিল দুই যুবক।
জানা গিয়েছে, গণপিটুনি ও তার জেরে হত্যার অভিযোগে নিহতের পরিবারের তরফে যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তাতে বিফের উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশের দাবি, খুনের পিছনে গো-হত্যার কারণ দর্শিয়েছিল মারমুখী জনতা। ঘটনায় মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বুধবার এর মধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলাশাসকের দাবি, ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য এলাকায় সক্রিয় রয়েছে শান্তি কমিটি।
এদিকে, মর্মান্তিক ঘটনার জেরে গ্রাম ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিহতের পরিবার। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামের আরও ৫০টি সংখ্যালঘু পরিবারও। তাঁদের দাবি, পুলিশি পাহারায় আপাতত এলাকা শান্তথাকলেও প্রহরা তুলে নেওয়ার পর অনিশ্চয়তার আতঙ্কে গ্রামে বসবাস করা সম্ভব হবে না।
আজমগড়ের ঘটনাসূত্রে বিচ্ছিন্নতাকামী রাজনীতির পিছনে গেরুয়া শিবিরের সক্রিয় ভূমিকার প্রমাণ মিলেছে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বোরখাধারী আরএসএস সমর্থক সংক্রান্ত পোস্টটি এর পর মুছে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি সত্যি হলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুয়ো অভিযোগের জেরে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর জন্য হিন্দু মৌলবাদীদের দিকে আঙুল ওঠা স্বাভাবিক। তেমনই, যদি তা শুধুমাত্র রটনা হয়ে থাকে তা হলে মিথ্যা রটনা ছড়িয়ে বিদ্বেষ প্রচারকারীদের কাঠগড়ায় তোলাই বিধেয়।
- See more at: Click This Link