somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খাবনামাঃ স্বপ্ন অথবা দুঃস্বপ্ন

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি দুঃস্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি! অনেকের
কাছে দুঃস্বপ্ন দেখতে ভালোবাসার কোন
যৌক্তিক কারন না থাকলেও আমি যথেষ্ট কারন
খুঁজে পাই। কারনটা দেখা যাক:
কোন কোন
রাতে আমি স্বপ্নে দেখি আমি দৌড়াচ্ছি আমাকে পিছু
ধাওয়া করছে এক বন্দুকধারী! প্রবল
বেগে দৌড়াচ্ছি কিন্তু পাঁচ হাত অতিক্রম
করতে আমার পাঁচ মিনিট লাগছে! ফলাফল
বন্দুকের গুলিতে আমার মৃত্যু! প্রবলভাবে মন
খারাপ, পৃথিবীতে আর ফিরতে পারব না...! ঠিক
তখনই ঘুম ভেঙে গেল। বুঝতে পারছিলাম
না কি আসলেই বেঁচে আছি নাকি মারা গেছি!
হঠাৎ কোন এক মশা সহৃদয় কামড় দিয়ে আমার
চেতনা ফিরাল! বুঝলাম বেঁচে আছি!
আমার খুশি দেখে কে? বেঁচে থাকায় আসলেই
আনন্দ আছে!
আর একদিন আমি এস.এস.সি পরীক্ষা দিচ্ছি।
কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছাতে আমার এক
ঘণ্টা দেরী হয়ে গেল! খাতা নিয়ে প্রশ্ন
একটা লিখতেই আরো একঘণ্টা শেষ!
অথচ আমি সব উত্তর পারি! লিখছি আর
লিখছি কিন্তু কী লিখছি নিজেও বুঝতে পারছি না!
তবে এটা বুঝতে পারছি ফেল করলে জীবন শেষ...
আবার ঘুম ভাঙল!
আবার আমি খুশিতে আত্মহারা! কারন আমি দশ
বছর আগে এস এস সি পাশ করেছি!
তবে সবচেয়ে ভয়ংকর স্বপ্ন যেটা আমি প্রায়ই
দেখি- আমি রাস্তায় হাঁটছি কিংবা কোন এক
বিয়ের অনুষ্ঠানে।
সবাই আমার সাথে কথা বলছে, আমিও তাদের
সাথে হাঁটছি। সবাই খুবই স্বাভাবিক কিন্তু
সমস্যাটা হল হঠাৎ আমি আবিস্কার
করি আমি সম্পূর্ণ বস্ত্রহীন!
লজ্জ্বায় অবস্থা এমন যে-
ধরনী তুমি দ্বিধা হও, আমি তোমার
গহব্বরে ঢুকে লজ্জ্বা নিবারণ করি! কিন্তু
পৃথিবীর মনেহয় এ নালায়েক বান্দাকে তার
গহব্বরে স্থান
দিতে আরো বেশী লজ্জ্বা লাগছিল! তাই
সে দ্বিধা হওয়াটাকে যৌক্তিক ভাবল না।
এদিকে আমি লুকানোর জায়গা না পেয়ে,
খালি দৌড়াচ্ছি তো দৌড়াচ্ছি!
আপনাদের হাসি আসতে পারে কিন্তু যারা এমন
স্বপ্ন দেখে অভ্যস্ত তারা আমার তখনকার
মনের অবস্থাটা বুঝবেন।
তারপর যথারীতি ঘুম ভাঙে আর
নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সৌভাগ্যবান মনে হয়।
তবে আমি সুন্দর স্বপ্নই বেশি দেখি! এগুলো ঘুম
ভাঙার পর এতই দুঃখ
নিয়ে আসে বলে বুঝানো যাবেনা! সুন্দর স্বপ্ন
দুঃখ আনার প্রক্রিয়াটা দেখা যাক-
যে স্বপ্নটা আমি বেশি দেখি সেটা হল,
আমি আকাশে উড়ছি।
দুইটা হাতকে ডানা বানিয়ে উড়তে আমার কোন
সমস্যা হচ্ছেনা! আমি উড়ছি ফসলের মাঠ, বন,
দালান-কোঠা সবকিছুকে ছাড়িয়ে। আহ্
কী আনন্দ আকাশে বাতাসে!
অনেকে হয়ত বলবেন উড়তে থাকা আবার কেমন
সুন্দর স্বপ্ন?
কোন একটা বইতে পড়েছিলাম খুব কম মানুষই
নাকি এ স্বপ্নটা দেখে। তাই খুব কম মানুষই
এটার আনন্দ আর সবশেষে দুঃখটা বুঝার কথা।
ঘুম ভাঙার পর একরাশ
হতাশা নিয়ে ভাবি মানুষ উড়তে পরলে প্রকৃতির
কী এমন ক্ষতি হত? ঐ বইতে পড়েছিলাম, কেবল
বিখ্যাতরাই নাকি এ
স্বপ্নটা দেখে অথবা যারা দেখে তাদের
বিখ্যাত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা! ভাবছি স্বপ্ন
প্রস্তুককারকের বিরুদ্ধে একটা ৪২০ ধারার
মামলা করতে হবে! আমার মধ্যে বিখ্যাত
হওয়ার কোন গুণ না দিয়ে বিখ্যাত হওয়ার স্বপ্ন
কেন দেখায়?
কখনো কখনো স্বপ্ন দেখি আমি একটা তেপান্তরের
মাঠের মধ্য দিয়ে হাঁটছি আর হঠাৎ
দেখি সামনে সবটাকা! এদিকে আমার কাছে কোন
ব্যাগ বা বস্তাও নেই। দুহাত
ভরে পকেটে পুরানোর পরেও আরো অনেক টাকা!
তখন মনের মধ্যে আলিয়া ভাটকে (মেয়েটার কোন
মুভি দেখার সামর্থ্য কিংবা ইচ্ছে কোনটাই
আমার হয়নি তবে কেন জানি গার্লফ্রেন্ড
বানানোর সামর্থ্য না থাকলে ইচ্ছে হয়েছে! ;-))
বিয়ে করার চিন্তা এসেছিল কিনা জানা নেই।
ঠিক তখনি ঘুম ভাঙে! বালিশের তলা, পকেট
সবঘেটেও যখন একটা ফুটো পয়সা বের হয়না তখন
একজনের মনের
অবস্থা কী সেটা কাউকে বোঝানোরও
আশা করি দরকার নেই।
তবে সবচেয়ে কম অথচ সবচেয়ে সুন্দর
যে স্বপ্নটা দেখি সেটাতে তুমি থাক! আমরা কোন
শিশির মাখা ঘাসের উপর দিয়ে হাঁটছি আর
তুমি বলছ- 'তোমার জীবনের
প্রতিটা পথে আমি এমনি ভাবে পাশাপাশি হাঁটবো'!
অথবা কোন শান্ত নদীর তীরে আমি তোমার
হাত ধরে বসে আছি আর তুমি বলছ- 'কখনোই
আমার হাতটা ছেড়োনা'!
আমি তোমার হাতটা অনেক শক্ত
করে আঁকড়ে ধরি যাতে কিছুতেই
সেটা না ছুঁটে যায়! আমি স্বপ্নের মধ্যেই
বুঝে যাই এটা স্বপ্ন! কিছুতেই
চাইনা ঘুমটা ভাঙুক কারন এমন অদ্ভুত
ভালো লাগার মূহূর্ত জীবনে খুব কম পেয়েছি! তবু
ঘুম ভাঙে! আমি বিশ্বাস করিনা সেটা স্বপ্ন
ছিল। আমি জানি হয়ত কোথাও তুমিও
ঘুমকে ফাঁকি দিয়ে আমার কাছে এসেছিলে! অনেক
হতাশাগুলোকে মুছে দিতে কিন্তু
তুমি জাননা তোমার এই অনাহুতের মত আগমন
এই ভীষণ ভিড়ে মিশে থাকা আমাকে কেবল
একরাশ শূণ্যতা চিনিয়ে দেয়...
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×