দেশে বিশ হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিপরীতে কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা কত জানেন? অসংখ্য। এর নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা কেউ দিতে পারেনাই, নামে বেনামে নিবন্ধিত অনিবন্ধিত মাদ্রাসার সংখ্যা ২০ হাজারেরও বেশি, মার্কিন দূতাবাসের ফাঁস হওয়া এক বার্তায় আনুমানিক সংখ্যা বলা হয়েছে ২৩ থেকে ৫৭ হাজার।
কওমি মাদ্রাসার মোট শিক্ষার্থী সংখ্যাও বলা মুশকিল, ১৪ থেকে ৫২ লাখের হিসাব পাওয়া যায়। যার ৮৫% ই আবাসিক।
তো এই বিশাল জনগোষ্ঠী যে একটা চক্রের ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে তাদেরকে সেখান থেকে উদ্ধার করার চিন্তা না করে শুধুমাত্র তাদের সমালোচনা করলে তো হবে না। এরা কোথায় যাবে?
তাদের উদ্ধার করার কাজ শুরু করেছিলেন শেখ হাসিনা, তাদের সনদের স্বীকৃতি দানের মাধ্যমে।
এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে 'other' বানাইয়া আপনে আগাইতে পারবেন না, এদেরকে সাথে নিয়েই যা করার করতে হইবো।
রাষ্ট্র ইতোমধ্যে যারা স্কুলে যায় তাদেরই পর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে পারতেছে না, শিক্ষকরা কয়েকদিন পর পর বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে। পর্যাপ্ত শিক্ষক নাই। তার উপর এখন এই ৫০ লাখ কওমি ছাত্রের ভার রাষ্ট্রের উপর আসলে রাষ্ট্রের কোমর কি ঠিক থাকবে?
বাংলাদেশ রাষ্ট্র যে পরিমান ছাত্রছাত্রীর লেখাপড়া করাইতেছে প্রায় সমপরিমাণ ছাত্রছাত্রীর লেখাপড়া চলছে কওমি মাদ্রাসায়, জনগণের অর্থায়নে, যাকাতের টাকায়, চামড়া বিক্রির টাকায়। শুধু লেখাপড়া না, থাকা খাওয়াও। এখন এই মাদ্রাসায় তালা দিলে এদের খাওয়াখরচ কি সুশীল বন্ধুরা দেবেন? দেবেন না তো। আপনি কেনো, রাষ্ট্রেরই দেওয়ার ক্ষমতা নাই। না দিতে পারলে তাদের এই এফোর্টকে অন্তত এপ্রিশিয়েট করেন, সরকার যত মানুষকে নিরক্ষরতা থেকে মুক্ত করছে কওমি মাদ্রাসাও প্রায় সমপরিমাণ মানুষকে নিরক্ষরতা থেকে মুক্তি দিচ্ছে।
আপনি চোখ বন্ধ কইরা রাইখা বিষয়টা না দেখার ভান করতে পারেন, কিন্তু এতে বিষয়টার এক্সিসটেন্স নাই হইয়া যায় না।
আমাদের দেশের লিবারেলদের বেশিরভাগেরই বাস্তবতা সম্পর্কে আইডিয়া নাই, কেতাবি কায়দায় তারা সব সমস্যার সমাধান করতে চায়।
এই কওমি ছাত্রদের অর্থনৈতিক মুক্তি না দিলে তারা এই চক্রে ভেতরেই ঘুরতে থাকবে, মুক্তির প্রথম ধাপ ছিলো তাদেরকে তাদের ফিল্ডের বাইরে গিয়ে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া। এজন্য তাদের সনদের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। আপনারা বুঝে না বুঝে সেটার বিরোধিতা করছেন এবং এখনো করছেন। অথচ এই সমস্যার বাস্তব কোনো সমাধান আপনাদের কাছে নাই।
৫০ লাখ কওমি স্টুডেন্ট আপনার চোখ বন্ধ করাতেই নাই হয়ে যাবে না, হেফাজত সহ অন্যান্যরা যে এদেরকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিশেবে ব্যবহার করছে তাদেরকে হাতিয়ার হওয়া থেকে রক্ষা করতে হলে কি করা যেতে পারে? আপনারা একটা বাস্তব প্রয়োগযোগ্য সমাধান দেন তো দেখি?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


