নানা আলোচনা সমালোচনা আর রাজনৈতিক পটভুমির দৃশ্যপট পাড়ি দেবার পর অবশেষে হতে যাচ্ছে প্রত্যাশিত বাংলাদেশের প্রধান দুই সিটি শহর ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটিতে নির্বাচন। আগামী ২৮ শে এপ্রিল ২০১৫ সালে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবার কথা। অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (ডিসিসি) সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০০২ সালের এপ্রিল মাসে আর ২০০৭ সালের ১৫ মে মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর নানা সময় বিভিন্ন প্রচেষ্টা করার পরও আর নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি নির্বাচনটা দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠে তুমুল প্রচারনা আর আলোচনা হচ্ছে। সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে মিডিয়া এমনকি সিটি শহরের বাহিরেও মানুষজন এই নির্বাচন নিয়ে তুমুল উৎসাহিত। কে হতে যাচ্ছে আগামী ঢাকার নতুন দুই সিটি মেয়র?? মাঠে আছেন বিভিন্ন দলের নেতা কর্মীরাও। তাই সিটি নির্বাচনের উৎসাহটা সকলের মনেই বিরাজ করছে বলা যায়।
এবারকার নির্বাচনে ভোটার তালিকায় তরুন প্রজন্মের অনেক ভোটার আছে যারা কিনা এবার প্রথমবারের মত ভোট প্রয়োগ করবে। ঢাকার ৪২ লাখ ভোটারের মধ্যে ১৩ লাখই তরুণ। তাই তরুন প্রজন্মের এই ভোট ব্যাংক বেশ গুরুত্বপূর্ন। ভাল করেই আঁচ করা যাচ্ছে যে এবারকার এই নির্বাচনে তরুন প্রজন্মের ভোটই নির্বাচন করবে যোগ্য প্রার্থী। কোন প্রর্থীর হাতে ঢাকা নগরীর দায়িত্ব পালন করার ভার তুলে দেয়া হবে ?
এবার আর অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়া বা লটারী ধরার মতো করে ভোট দেয়া নয়। সকল দিক বিচার বিশ্লেষন করে ভোট দিয়ে উপোযুক্ত প্রার্থীই নির্বাচীত হবে নতুন ও তরুন প্রজন্মের হাতে।। তাই ২০১৫ ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সংক্রান্ত প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্য ও মন্তব্য এবং পত্রিকা প্রতিবেদন সংগ্রহ করে এক জায়গায় তুলে ধরার চেষ্টা করলাম আপনাদের প্রার্থীকে যাচাই বাছাইয়ের জন্য।
ঢাকা ২ সিটিতে এবার মোট মেয়র প্রার্থী ৩৬ জন। ঢাকায় ভোটের লড়াইয়ে মাঠে নেমেছেন সর্বোমোট ১১৬৭ প্রার্থী।
ঢাকা উত্তর:
★ আয়তন প্রায় ৬২.৬৩৮ বর্গ কিলোমিটার।
★ প্রশাসনিক জোন ৫ টি
★ মোট প্রশাসনিক ওয়ার্ড সংখ্যা ৩৬ টি।
জোন : উত্তরা মডেল টাউন, কুড়িল, খিলক্ষেত, নিকুঞ্জ। মিরপুর-১২, মিরপুর সিরামিক, মিরপুর-মিরপুর-১৪, বিষটেকি, মিরপুর-১১, বাউনিয়াবাদ, মিরপুর-৬, মিরপুর-৭, পল্লবী, মিরপুর-২, রূপনগর, গভ. হাউজিং এস্টেট, মিরপুর-১, বক্সনগর, চিরিয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, ভাষানটেক, মাটিকাটা, মানিকদি, বারেনটেক। এছাড়া জোন-০৩, জোন-০৪ ও জোন-০৫।
★ মেয়র প্রার্থী ১৬ জন।
★ কাউন্সিলর সাধারণ আসনে ২৭৭ জন।
★ কাউন্সিলর সংরক্ষিত আসনে ৮৮ জন।
★ সাধারণ ওয়ার্ডের সংখ্যা ৩৬টি।
★ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংখ্যা ১২টি।
★ মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১০৯৩টি।
★ কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৫৮৯২টি।
★ কোন অস্থায়ী ভোট কেন্দ্র নেই ।
★ অস্থায়ী ভোট কক্ষ আছে ২৭৭টি ।
★ মোট ভোটার সংখ্যা ২৩,৪৫,৩৭৪ জন।
★ পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১২,২৪ ৭০১ জন।
★ নারী ভোটার সংখ্যা ১১ ২০,৬৭৩ জন।
ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থীরা হলেন:
১.আনিসুল হক
২.মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী
৩.তাবিথ আউয়াল
৪.শামছুল আলম চৌধুরী
৫.চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী
৬.আব্দুল্লাহ আল ক্কাফী
৭.এওয়াইএম কামরুল হাসান
৮.বাহাউদ্দিন আহমেদ
৯.নাদের চৌধুরী
১০.কাজী শহীদুল্লাহ
১১.মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ
১২.আনিসুজ্জামান খোকন
১৩.জামান ভূঞা
১৪.শেখ শহিদুজ্জামান
১৫.জোনায়েদ আব্দুর রহিম সাকি (গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক)
১৬.শেখ ফজলে বারী মাসউদ।
এক নজর ঢাকা দক্ষিণ :
★ মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৬ টি।
★ মেয়র প্রার্থী ২০ জন।
★ কাউন্সিলর সাধারন আসনে ৫৪৮ জন।
★ কাউন্সিলর সংরক্ষিত আসনে ১০৫ জন।
★ সাধারণ ওয়ার্ডের সংখ্যা ৫৭টি।
★ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৯টি।
★ মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৮৯টি।
★ মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৭৪৬টি।
★ অস্থায়ী মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১টি।
★ অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৬১২টি।
★ মোট ভোটার সংখ্যা ১৮,৭০ ৭৫৩ জন।
★ পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১০,৯,২৮৬ জন।
★ নারী ভোটার সংখ্যা ৮,৬১,৪৬৭ জন।
আওয়ামী লীগের সারাহ বেগম কবরী, জাতীয় পার্টির ববি হাজ্জাজ ও মোস্তফা কামাল আজাদী স্বেচ্ছায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থীরা হলেন:
১.মির্জা আব্বাস
২.ড. এসএম আসাদুজ্জামান রিপন
৩.মোহাম্মদ সাঈদ খোকন
৪.হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন
৫.আক্তারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ
৬.আব্দুল খালেক
৭.জাহিদুর রহমান
৮.আবু নাসের হোসাইন
৯.বাহারানে সুলতান বাহার
১০.এএসএম আকরাম
১১.শাহিন খান
১২.দিলীপ ভদ্র
১৩.শহিদুল ইসলাম
১৪.শফিউল্লাহ চৌধুরী
১৫.আব্দুর রহমান
১৬.বজলুর রশীদ ফিরোজ
১৭.রিয়াজউদ্দীন
১৮.মশিউর রহমান
১৯.গোলাম মাওলা রনি
২০.রেজাউল করিম চৌধুরী
২১.অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আইয়্যুব হোসেন।
চট্টগ্রামে :
★ মেয়র প্রার্থী ১২ জন।
★ কাউন্সিলর পদে সাধারণ ২১৩ জন।
★ কাউন্সিলর সংরক্ষিত আসনে ৬১ জন।
★ সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ৪১টি।
★ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৪টি।
★মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৭১৯টি
★ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৯০৬টি।
★অস্থায়ী ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৩টি।
★অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৫২টি।
★মোট ভোটার সংখ্যা ১৮,১৩ ৪৪৯ জন।
★ পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৯,৩৭,৫৩ জন।
★ নারী ভোটার সংখ্যা ৮,৭৬ ৩৯৬ জন।
চট্টগ্রামের মেয়র প্রার্থীরা হলেন:
১. মোহাম্মদ মনজুর আলম।
২.আ জ ম নাসির উদ্দীন।
৩. মো. আবুল কালাম আজাদ।
৪.মো: শফিউল আজম।
৫.সৈয়দ সাজ্জাদ জোহা।
৬.আরিফ মইনুদ্দীন।
৭.এম এ মতিন।
৮.সোলায়মান আলম শেঠ।
৯.মো. আলাউদ্দিন চৌধুরী।
১০.হোসাইন মোহাম্মদ মুজিবুল হক।
১১.সাইফুদ্দিন আহমেদ (রবি)।
১২.মো. ওয়াজেদ হোসেন ভূঁইয়া।
ঢাকার মেয়র প্রার্থী হলফনামা ও অন্যান্য তথ্য:
সিটি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা ব্যবসায়ী হওয়ায় নগরবাসী দুইজন ব্যবসায়ী নগর পিতাই পেতে যাচ্ছে বলা যায়। দশম জাতীয় সংসদে ৬৯ শতাংশ সদস্যই ব্যবসায়ী। যদিও প্রথম সংসদে ১৮ শতাংশ ব্যবসায়ী এবং আইনজীবীদের প্রাধান্য ছিল সবচেয়ে বেশি, কিন্তু বর্তমান সংসদে ১৩ শতাংশ আইনজীবী রয়েছেন।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে ব্যবসায়ী ২৫ জন মেয়র প্রার্থীর কারো কারো গার্মেন্ট, আবাসন ও জ্বালানি খাতে ব্যবসা রয়েছে, অনেকে আবার ঠিকাদারি, রেস্তোরাঁ, মুদি ও ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর মধ্যে ৯ জন আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৬ জন ব্যবসায়ী।
এবার ঢাকার দুটি সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হক, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের উপদেষ্টা ববি হাজ্জাজ বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, আবদুস সালাম, নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ খোকন, গোলাম মওলা রনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন।
আবদুল আউয়াল মিন্টু
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর সম্পদ সব থেকে বেশি আবার ঋনও বেশী। বিএনপি এই নেতা হলফনামায় তার বিরুদ্ধে ১৬টি মামলার কথা উল্লেখ করেছেন। এর মাঝে ১৪টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। রাজধানীর মতিঝিল, শাহবাগ, পল্টন ও রমনা থানায় করা মামলাগুলোর মধ্যে তাকে দুটিতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোর একটিতে হাইকোর্ট ডিভিশনের আদেশক্রমে কার্যক্রম স্থগিতাদেশ প্রাপ্ত, ৮টি মামলা পেন্ডিং অবস্থায় রয়েছে। ৫টি মামলায় তিনি জামিন প্রাপ্ত।
আয়ের উৎসের ব্যাপারে আবদুল আউয়াল মিন্টু হলফনামায় জানিয়েছেন ১৪টি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা ও বিভিন্ন পদে রয়েছেন। বার্ষিক আয় ৫ কোটি ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৫০৩ টাকা। কৃষি খাতে আয় ৩ কোটি ৫০ লাখ ৯৯ হাজার ৫২২ টাকা। বাড়ি ভাড়া পান ৯ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা। ব্যবসায় (পারিতোষিক) আয় ৯৩ লাখ টাকা। শেয়ার ও ব্যাংক আমানতে আয় ২৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৭০ টাকা। এ ছাড়াও অন্যান্য মূলধনী লাভ ৪১ লাখ ১০ হাজার ৮১১ টাকা।
মিন্টু তার হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ আছে ৫৩ কোটি ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার ২১৭ টাকার। তার স্ত্রীর আছে ৯ কোটি ১২ লাখ ১৭ হাজার ৫৪৩ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তিতে দেখিয়েছেন- নিজ নামে নগদ টাকা ৮ লাখ ৫০,৩২০ টাকা। স্ত্রীর নামে নগদ টাকা ৭ লাখ ৭৭,৭৪৩ টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা ২০০ মার্কিন ডলার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জমাকৃত অর্থের পরিমান ৬৮ লাখ ৮৯,২৬৩ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৬২,৯৪২ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ার রয়েছে ৪০ কোটি ৫৮ লাখ ৯০,৬৫০ টাকা, স্ত্রীর নামে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৯১,১৬৯ টাকা। পোস্টাল, সার্ভিস সার্টিফেকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৭৪ লাখ ৯৩,৬৫৪ টাকা। পুরনো কয়েন, সরকারের কাছে জমা, অগ্রিম ও ঋণ প্রদান এবং জীবন বীমা খাতে আছে ১১ কোটি ৫১ লাখ ৯১ হাজার ৬৬৩ টাকা।
আবদুল আউয়াল মিন্টুর স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে- কৃষি জমি নিজ নামে ৩৫ লাখ ১০,১৬৫ টাকার। অকৃষি জমি ৩ কোটি ৮৫ লাখ ১৪,৮৩০ টাকার। নিজ নামে বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে ২৯ লাখ ৮২,৮৫৪ টাকার। এছাড়া স্ত্রীর নামে রয়েছে ১৯ লাখ ৪১,৪২৩ টাকার। কয়েকটি ব্যাংক থেকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিলেও তিনি ঋণখেলাপী নন বলে হলফ নামায় উল্লেখ করেছেন। দায়-দেনার ব্যাপারে তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন- নিজের ছেলে তাফসির মোহাম্মদ আউয়াল হতে ঋণ গ্রহণ করেছেন ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সিকিউরিটি ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানি লিমিটেড হতে ঋণ গ্রহণ করেছেন ১ কোটি ৮১ লাখ ৬০,০০০ টাকা। এছাড়া বাড়ি ভাড়া দেয়ার অগ্রিম বাবদ নেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৬০০০ টাকা। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৬,৩১৭ টাকা।
বাস, ট্রাক মটরগাড়ি, লঞ্চ, স্টিমার বিমান ও মোটরসাইকেল ইত্যাদি বাবদ নিজ নামে দেখানো হয়েছে ৮ লাখ ৫০,০০০ টাকা। স্ত্রীর নামে ৯ লাখ ৮৩,৬৬২ টাকা। এছাড়া নিজ নামে স্বর্ণ ও মূল্যবান ধাতু রয়েছে ২ লাখ টাকার। স্ত্রীর নামে রয়েছে ২৬ লাখ ৫৮,৫৫১ টাকা। ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৮ লাখ ৮৮,৮৫৮ টাকা। স্ত্রীর নামে ৫ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সমাগ্রী। অন্যান্য সম্পদ রয়েছে ১১ কোটি ৫১ লাখ ৯১,৬৬৩ টাকা। স্ত্রীর নামে ৭১ লাখ ১২,০০০ টাকা।
রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও তিনি নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। মিন্টু লাল তীর সিড লিমিটেড, নর্থ সাউথ সিড লিমিটেডে, এম এফ কনজুমারস লিমিটেড, এ অ্যান্ড এ ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, কে অ্যান্ড কিউ (বাংলাদেশ) লিমিটেডসহ ১৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কথা হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। এছাড়া তিনি এগ্রিকালচার ইকোনোমিক্স ও ট্রান্সপ্রোটেশন ম্যানেজমেন্টে এমএসসি করেন।
আনিসুল হক
হলফনামার তথ্যে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আনিসুল হক ২২টি প্রতিষ্ঠানের মালিক বলে উল্লেখ করেছেন। তার বার্ষিক আয় ৭৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাড়ি ভাড়া থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ব্যবসায় ২৫ লাখ টাকা, শেয়ারে ১ লাখ ৬১ হাজার টাকা, এফডিআর মুনাফাসহ অন্যান্য খাতে ৪৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩১ টাকা আয়ের তথ্য রয়েছে। এসব খাত থেকে তার স্ত্রীর বছরে আয় দেখানো হয়েছে- ৮৪ লাখ ৯৩,৪৬২ টাকা। তার ছেলে নাভিদুল হকের ব্যবসা থেকে আয় ২৯ লাখ ১০,৫০১ টাকা, কন্যা তয়ামিক উমায়রার আয় ২০ লাখ ৪২,৪৬০ টাকা ও কন্যা তানিশা ফারিয়ার আয় ১ লাখ ৯৬,০০০ টাকা।
আনিসুল হকের নিজ নামে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ২২ কোটি ৭৫ লাখ ৬৫ হাজার ৮৪৪ টাকার। নগদ টাকার পরিমাণ ১ কোটি ৯৫ লাখ ১৩ হাজার ৩০ টাকা। ব্যাংকে জমা মাত্র ৬ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯৯ টাকা। শেয়ার রয়েছে ১১ কোটি ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকার। স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮৬ টাকা। স্বর্ণালঙ্কার আছে ১১ লাখ ১২ হাজার ৭৫০ টাকার।নগদ ১ কোটি ৯৫ লাখ ১৩,০৩০ টাকা। এছাড়া স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের নামে ৭ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ রয়েছে বলে আনিসুল জানিয়েছেন।স্ত্রী রুবানা হকের ৩৩ লাখ ৫৬,৩০৮ টাকা, সন্তান নাভিদুল হকের ১ লাখ ৮৭,৯৪১ টাকা, ওয়ামিক উমায়রার ২০ লাখ ৬৫,২২৯ টাকা, তানিশা ফারিয়ার ১১ লাখ ২২,৪৫০ টাকা। তার ঋণ আছে ৫ কোটি ২৯ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৭ টাকা। তার স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকার অকৃষি জমি, স্ত্রীর নামে ৭০ লাখ টাকার বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট এবং ছেলে ও দুই মেয়ের নামে ৩.৮৫ কাঠা জমির তথ্য হলফনামায় এসেছে।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে তিনি নিজের নামে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৬৮,৬৭৫ টাকা মূল্যের অকৃষি জমি, বাড়ি বাবদ স্ত্রী রুবানার নামে ৭০ লাখ ৬১,৮৮০ টাকার সম্পত্তি এবং এক ছেলে ও দুই মেয়ের নামে ৩.৮৫ কাঠা করে জমি দেখিয়েছেন। তার ৫ কোটি ২৯ লাখ ৪৭,৮৯৭ টাকা জামানতবিহীন দায়-দেনা রয়েছে। বিভিন্ন স্থায়ী আমানতে আনিসুল হকের বিনিয়োগ রয়েছে ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৪৫,৬৬৮ টাকা, স্ত্রী রুবানা হকের ৪ কোটি ২৫ লাখ ৩৭,৩১৮ টাকা, নাভিদুলের ৩১ লাখ ৪৯,৪১৫ টাকা ও ওয়ামিক উমায়রার নামে বিনিয়োগ রয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
এছাড়া ৯ লাখ ৮৩,০০০ টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং ১৪ লাখ ৮৪,০০০ টাকা মূল্যের আসবাব রয়েছে। এছাড়া তিনি ৫ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩,০৭৯ টাকা ঋণ প্রদান করেছেন।
ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হকের বিরুদ্ধে বর্তমান ও অতীতে কখনো ফৌজদারী কোনো মামলা হয়নি। আনিসুল হক সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা মাস্টার্স অব আর্টস (এমএ)।
ঢাকা উত্তরে ব্যবসায়ী ও শিল্প বণিকদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আনিসুল হকের ২২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে তার প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মোহাম্মদী গ্রুপ লিমিটেড, মোহাম্মদী ফ্যাশন সোয়েটার লিমিটেড, দ্য মোহাম্মদী লিমিটেড, টেকনোভিস্ত্রা লিমিটেড, এমজি প্রপার্টিজ লিমিটেড, এমজি নীচ্ ফেয়ার লিমিটেড, মোহাম্মদী এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, এমজি শার্টেক্স লিমিটেড, দেশ ক্যামব্রিজ কুমারগাঁও পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড উল্লেখযোগ্য।
ইশতেহার : ৬টি সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার করেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রপ্রার্থী আনিসুল হক।
১. নগর ভবনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখা
২. সব সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করা
৩. পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়ার প্রত্যয়
৪. সবুজ ঢাকা গড়ার প্রত্যয়
৫. আলোকিত ঢাকা গড়ার প্রত্যয়
৬. মানবিক ঢাকা গড়ার প্রত্যয়।
ববি হাজ্জাজ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের সদ্য বহিষ্কৃত উপদেষ্টা ববি হাজ্জাজও মেয়র প্রার্থী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি তার প্রার্থীতা সেচ্ছায় প্রত্যাহার করে নেন। তিনি আলোচিত ব্যবসায়ী বিশিষ্ট শিল্পপতি ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের ছেলে। ববি হাজ্জাজ হলফনামায় শিক্ষকতা পেশা উল্লেখ করলেও তাকে সবাই ব্যবসায়ী হিসাবেই জানে। এছাড়া হলফনামায় বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোনো ফোজদারী মামলা নেই, অতীতেও ছিল না বলে উল্লেখ করেছেন। পেশা হিসেবে বেসরকারি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভিার্সিটিতে শিক্ষকতা করছেন। আর ডেটকোর পরিচালক তিনি।
হলফনামায় ববি হাজ্জাজ বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৬ লাখ ২৭ হাজার ৫৭২ টাকা। তার হাতে নগদ ৬০ হাজার টাকা, স্ত্রীর হাতে ৪৫ হাজার টাকা, নিজের হাতে বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে ৫ হাজার ৯৮৯ ডলার। ব্যাংকে জমা ৬৯ হাজার ৬২৫ টাকা, স্ত্রীর নামে ২ লাখ ৪ হাজার ১০২ টাকা। বন্ড ও শেয়ার রয়েছে ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে ১০০ ভরি। এ ছাড়াও ঢাকায় তার স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এমবিএ ডিগ্রিধারী ববি তার হলফনামায় পেশার ঘরে শিক্ষকতার কথা লিখেছেন। তবে একইসঙ্গে ডেটকো প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক পদেও আছেন তিনি।
ববি হাজ্জাজের স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে একটি ফ্লাট রয়েছে। তিনি কোথাও থেকে কোনো ধরনের ঋণ নেননি বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
সারা বেগম কবরী
আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। হলফনামায় নিজের চলচ্চিত্র প্রযোজন সংস্থা ‘কে প্রোডাকশন’ এর কথা উল্লেখ করেছেন। তার বার্ষিক আয়ের হিসাবে কৃষিখাত থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ৫ লাখ ৪২ হাজার ৪৪২ টাকা, শেয়ার সঞ্চয়/ব্যাংক আমানতে ২ লাখ ১ হাজার ৭৫ টাকা, পেশা থেকে ৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা ও অন্যান্য থেকে ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬ টাকার তথ্য দিয়েছেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৭২ লাখ ৪৪ হাজার ৩৫ টাকা, ২৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার বৈদেশিক মুদ্রা, ১৬ লাখ ৮৮ হাজার ৯৫৭ টাকার স্থায়ী আমানত এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকার স্বর্ণ আছে। এছাড়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে গুলশানে একটি ৬ তলা বাড়ি।
কবরী সম্পদের বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন, নগদ ২,০০,০০০ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ২৮,৩৪,৯৫১ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৭২,৪৪,০৩৫ টাকা, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ রয়েছে ১৬,৮৮,৯৫৭ টাকা, ৩৫ রাখ টাকা মূল্যের প্রাডো জিপ রয়েছে, স্বর্ণাঙ্কার ১,২০,০০০, ইলেকট্রনিক্স ও আসবাব সামগ্রী মিলে আছে ২ লাখ টাকা। আর স্থাবর সম্পদ হিসেবে গুলশানে একটি ছয়তলা বাড়ি রয়েছে। সারা বেগম কবরী কোনো ব্যাংক থেকে কোনো ধরনের ঋণ নেননি।
মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ
মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে বর্তমানে ফৌজদারী মামলা রয়েছে ৩৭টি, অতীতে ছিল ২৪টি। পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্যবসা, মির্জা এন্টারপ্রাইজ। শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক পাস।
বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন, বাড়ি ভাড়া, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান অন্যান্য ভাড়া বাবদ ১ কোটি ৫ লাখ ৮১,৫৪৩ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে বাৎসরিক আয় ৬ কোটি ২৭ লাখ ১৫,২৯০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য খাতে ১ লাখ ৭৪,২৫০ টাকা।
অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন, নগদ টাকা ৫০ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ১০ লাখ ৬২,১২৩ টাকা; বন্ড ৩৫ কোটি ৬ লাখ ৭৯,১০০ টাকা ও ৪২ কোটি ৪৮ লাখ ৩৫,৮৪৫ টাকা। স্থায়ী আমানত রয়েছে ১০ কোটি ৬৫ লাখ ৫৭,১৪৯ টাকা, ৯৭ লাখ ৫০,০০০ টাকার একটি গাড়ি। স্বর্ণাঙ্কার রয়েছে ২ লাখ টাকা, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ১০ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ৭ লাখ টাকা ও অন্যান্য ৯০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে মির্জা আব্বাস প্রায় ১০০ কোটির টাকার মালিক বলে হলফ নামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থাবর সম্পদ: অকৃষি জমি ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা, দালান (৮৭১, দক্ষিণ শাহজাহানপুর) ১ কোটি ৩৫ লাখ ৪৮,১২৩ টাকা ও (৯২৫/বি, দ. শাহজাহানপুর) ২ কোটি ৬২ লাখ ৫৯,৬৪৫ টাকা। জমি বায়না বাবদ অগ্রিম ৪ কোটি টাকা। মির্জা আব্বাসের দায়-দেনার পরিমাণ রয়েছে ৭৫ কোটি ৬৫ লাখ ২৫,৯০৩ টাকা।
আবদুস সালাম
বিএনপি নেতা আবদুস সালামের বিরুদ্ধে বর্তমানে ফৌজদারি মামলা রয়েছে ৩টি, অতীতে কোনো মামলা ছিল না। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাস, পেশা ব্যবসা। বাৎসরিক আয় দেকিয়েছেন, বাড়া ও অ্যাপার্টমেন্ট ও অন্যান্য ভাড়া বাদ ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা।
অস্থাবর সম্পত্তি নিজ নামে নগদ টাকা ৩২ লাখ ১৯,৩৭৮ টাকা। বাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ১৮ লাখ ৫৭,১২১ টাকা। এছাড়া স্ত্রীর নামে স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ১২ তোলা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ফ্রিজ ১টি, ডিপ ফ্রিজ ১টি। আসবাবপত্রের মধ্যে সোফা ১ সেট, ডাইনিং ১ সেট ও খাট ৩ সেট।
স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে সালামের নিজ নামে অকৃষি জমি ৪২ শতাংশ, দালান ৬ তালা ১টি, স্ত্রীর নামে ১টি ফ্লাট দেখিয়েছেন। গাড়ী ক্রয় বাবদ ৫ লাখ ১৬,২৫৫ টাকা দায়-দেনা হিসেবে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন সালাম।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন
শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক পাস। বর্তমানে ফৌজদারি মামলা নেই। অতীতে মামলা ছিল ৫টি। পেশা ব্যবসা। আয়ের উৎস দেখিয়েছেন, বাড়িসহ অন্যান্য ভাড়া বাবদ ৩২ লাখ ৩৪,১৫০ টাকা, ব্যবসা ৮ লাখ ৩২,৬৩০ টাকা। শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে ১ লাখ ৮,০০০ টাকা।
অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে নিজ নামে নগদ টাকা ১ কোটি ১০ লাখ ৪৬,৫৭৮ টাকা। স্ত্রীর নামে ৩০ লাখ টাকা। বাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ নিজ নামে ৪৩ লাখ ৪৭৬ টাকা, স্ত্রীর নামে ২৭ লাখ ২২,৩০৬ টাকা। শেয়ার ১৭ কোটি ৭১ লাখ ৯০,৬৭৫ টাকা ও ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা; মটরগাড়ি-৩৮ লাখ টাকা; আসবাবপত্র ও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও উপহার এবং ব্যবসার মূলধন ৩৪ লাখ ৪,৪৮৭ টাকা।
স্থাবর সম্পদ উল্লেখ করেছেন, অকৃষি জমি ২ লাখ ৩০,০০০ টাকা; দালান, আবাসিক, বানিজ্যিক ২৬ কোটি ৮৯ লাখ ৪৯,০০০ টাকা। দায়-দেনা বাবদ দিখিয়েছেন ব্যাংক ঋণ ১৯ কোটি ২৭ লাখ ৭৭,০০০ টাকা।
নাসির আহম্মেদ পিন্টু
তার বিরুদ্ধে অতীতে ফৌজদারী মামলা ছিল ২টি এবং বর্তমানে ৪টি। আয়ের উৎস হচ্ছে বাড়ি ভাড়া ১৫ লাখ ৫০,১৪০ টাকা, শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র থেকে ৭২ লাখ ৭৮,৩৭২ টাকা। অস্থাবর সম্পদ রয়েছে নগদ ৫ কোটি ৯২ লাখ ৬৮,৩২২ টাকা, বন্ড ৪ কোটি ২৫ লাখ। স্থায়ী আমানত ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৭,২৮০ টাকা।
১ টি জিপগাড়ির দাম ৪৬ লাখ ২৪,২২৪, স্বর্ণ ৮ তোলা, ইলেক্ট্রনিক সামাগ্রী টিভি, ফ্রিজ আসবাবপত্র ২০,০০০ টাকা এবং অন্যান্য ৬১ লাখ ৫৪,৯০৯ টাকা রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন পিন্টু।
স্থাবর সম্পদ হিসেবে দেখিয়েছেন, কৃষি জমি, অকৃষি জমি ও অ্যাপার্টমেন্ট মূল্য বাবদ ৩ কোটি ৭২ লাখ ৭১,২৯৮ টাকা। স্ত্রীর ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, নাসিম আহম্মেদের ৭০ লাখ টাকা ও গাড়ি বাবদ ২ লাখ ৪৪,১০৭ টাকা দায়-দেনা দেখিয়েছেন তিনি।
গোলাম মওলা রনি
আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি গোলাম মওলা রনি শিক্ষাগত যোগ্যতায় এল এল এম উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোনো ফোজদারী মামলা নেই। অতীতে তিনটি মামলা ছিল।
তিনি পেশা উল্লেখ করেছেন, রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক ফ্রেইড ফরওয়ার্ডিং ও শিপিং, আন্তর্জাতিক জরিপ ও পরিদর্শন, প্রকাশনী ও বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবং আইটি ব্যবসা।
রনি আয়ের উৎস দেখিয়েছেন ব্যবসা থেকে ২০ লাখ ২০,০০০ টাকা, শেয়ার এক লাখ। অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন, ব্যাংকে জমা ৬৫,০০০ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র, শেয়ার ১ লাখ, একটি লেক্সাস মডেলের জিপ গাড়ি, স্ত্রীর নামে ৪০ তোলা স্বর্ণ, ইলেকট্রনিক্স ও অঅসবাব সামগ্রী।
স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন, বসুন্ধরা ও পূর্বাচলে ১০ কাঠা করে ২০ কাঠা অকৃষি জমি, ঢাকায় ১০ তলা ও সাভারে ছয়তলা বাড়ি, নিউ মার্কেট এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ও পটুয়াখালীতে বসতবাড়ি।
রনি ঋণ নিয়েছে ৫ কোটি, ৯৬ লাখ, ৪২,৫৩৫ টাকা। তবে তিনি ঋণখেলাপী নন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
তাবিথ আউয়াল
উত্তরে আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালও শেষ মুহূর্তে প্রার্থী হয়েছেন। বাবা বিএনপির রাজনীতিতে থাকলেও তাবিথ সরাসরি কোনো দলের সঙ্গে নেই। মাল্টিমোড গ্রুপের উপ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাবিথ আউয়ালের নামে কোনো মামলা নেই। তিনি নিজেও ১৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত। হলফনামায় তিনি নিজের বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন সোয়া কোটি টাকা। তার অস্থাবর সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে ১৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার বন্ড ও শেয়ার। অন্যান্য খাতে রয়েছে আরও ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পদ। তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৬০ ভরি স্বর্ণ।
বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল। তার ১৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে লাল তীর সিড লিমিটেড, নর্থসাউথ সিড লিমিটেড, এমএফ কনজিউমারস লিমিটেড, এঅ্যান্ডএ ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, কেঅ্যান্ডকিউ বাংলাদেশ লিমিটেড, মাল্টিমোড ট্রান্সপোর্ট কনসালট্যান্টস লিমিটেড, মাল্টিমোড লিমিটেড, লাল তীর লাইভ স্টক লিমিটেড প্রভৃতি।
মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক পাস বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউ এম বদরুদ্দোজ্জা চৌধুরীর ছেলে মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনিও ঋণগ্রস্ত। মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ২৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে তার। মাহীর কাছে নগদ আছে ১ লাখ টাকা। ব্যাংকে আছে ১ লাখ টাকা। তার থেকে তার স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে দ্বিগুণ টাকা। এছাড়া বন্ড ও ঋণপত্র আছে ৫০ হাজার টাকা। তার বিরুদ্ধে নেই কোন মামলা। সাড়ে ১৯ লাখ টাকার নিসান জিপ আছে তার। নিজের বা স্ত্রীর নামে নেই কোন দালান কোঠা। তবে সাভারে অকৃষি জমি আছে ৩১ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যমানের।
বিকল্পধারার মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী কেসি মেমোরিয়াল ক্লিনিক লিমিটেডের (হাসপাতাল) পরিচালক ও এন্টারটেইনমেন্ট রিপাবলিকের (মিডিয়া প্রাইভেট হাউজ) স্বত্বাধিকারী হিসাবে হলফনামায় উল্লেখ করেছে।
চৌধুরী ইরাদ আহম্মদ সিদ্দিকী
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা চৌধুরী তানবীর আহম্মেদ সিদ্দিকীর ছেলে ইরাদ আহম্মদ। উত্তরের এই মেয়র প্রার্থী নিজেকে লেখক ও গবেষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়। তার বার্ষিক আয় ১০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। নিজের হাতে ও ব্যাংকে মোট টাকার পরিমাণ ৫০ হাজার। স্ত্রীর কাছে ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। এ ছাড়াও ১০ কাঠা জমির ওপর তার একটি আবাসিক ভবন রয়েছে।
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা চৌধুরী তানবীর আহম্মেদ সিদ্দিকীর ছেলে ইরাদ আহম্মদ। উত্তরের এই মেয়র প্রার্থী নিজেকে লেখক ও গবেষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়। তার বার্ষিক আয় ১০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। নিজের হাতে ও ব্যাংকে মোট টাকার পরিমাণ ৫০ হাজার। স্ত্রীর কাছে ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। এ ছাড়াও ১০ কাঠা জমির ওপর তার একটি আবাসিক ভবন রয়েছে।
বাহাউদ্দিন আহমেদ
জাতীয় পার্টি-জাপা সমর্থিত মেয়র প্রার্থী বাহাউদ্দিন আহমেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন’। বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য খাত থেকে বার্ষিক আয় ৫ লাখ ২৯ হাজার ২০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৫ টাকা, ব্যবসায়ী মূলধন ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৭ টাকা এবং ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার স্বর্ণ। এছাড়া স্ত্রীর নামে রয়েছে ৩৫ ভরি স্বর্ণ। বাহাউদ্দিনের স্থাবর সম্পদের মধ্যে একটি দ্বিতল ভবন, ২২টি আধাপাকা গুদাম ও ঢাকায় একটি ফ্ল্যাটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বাহাউদ্দিন আহমেদ একজন আমদানিকারক। তিনি সিভিল এভিয়েশন অথরিটি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ঠিকাদার ও আমদানি-রফতানি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিবন্ধিত আমদানিকারক।
আনিসুজ্জামান খোকন
আনিসুজ্জামান খোকন নিউইয়র্ক থেকে পরিচালিত রূপসী বাংলা টেলিভিশন, মাউন্টেন গেম ফার্ম লিমিটেড, অর্গানিক ফি-রেঞ্জ ও চিকেন পোলট্রি ফার্মের স্বত্বাধিকারী।
জামান ভূঞা
জামান ভূঞা পুরান ঢাকার নবাবপুর রোডের মুন্সী ইলেকট্রিকের স্বত্বাধিকারী।
জোনায়েদ আবদুর রহিম সাকী
জোনায়েদ আবদুর রহিম সাকী সংহতি প্রকাশনা (পুস্তক প্রকাশনা সংস্থা), মাটিয়ালি (বুটিক হাউজ), বাহিরানা অডিও ভিজুয়ালের (প্রকাশন ও বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠান) মালিক।
মোস্তফা কামাল আজাদী
মোস্তফা কামাল আজাদী উইলস ট্রাভেলসের মালিক।
মোয়াজ্জেম হোসেন খান
মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
আবদুল্লাহ আল ক্বাফী
ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র পদের এই প্রার্থী নিজেকে সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক (সিপিবি) কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বাড়ি ভাড়া, শেয়ার ও সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। একই খাত থেকে তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ১০ লাখ ৩২ হাজার টাকা।
এবার আমাদের মেয়র পদপ্রার্থীদের যোগ্যতাটা একবার দেখে নিন। কারা নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছে আমাদের আগামী প্রজন্মকে। কাদের হাতে দিতে যাচ্ছি আমাদের সিটি চালানোর দায়িত্ব। আপনার বিবেচিত মুল্যবান ভোটটি দেবার আগে ভেবে নিন।
প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা পর্যালোচনা:
৬০ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ৩৬ জনের পেশা ব্যবসা। ২৯ জনই বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখতে পারেননি। দু'জন পিএইচডি ডিগ্রিধারী। ১৪ জন স্নাতকোত্তর বা মাস্টার্স ডিগ্রিধারী। ১৫ জন স্নাতক। স্কুলের গণ্ডি পেরোতে পারেননি নয়জন স্বশিক্ষিতসহ ১৩ জন। তাদের দু'জন অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। ৯ মেয়রপ্রার্থী মামলার আসামি। বিএনপির ৭ নেতা প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৫৬টি। আওয়ামী লীগ সমর্থিত ২ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ২টি মামলা আছে। ২ প্রার্থীর বিরুদ্ধে অতীতে হত্যা, হামলা ও বিস্ফোরক আইনে ৯টি মামলা ছিল।
ঢাকা উত্তরে ২১ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৪ জনই ব্যবসায়ী। এদের ১০ জন মাস্টার্স পাস, ৬ জন স্নাতক পাস, আর অষ্টম শ্রেণী পাস সাবেক এমপি সারাহ বেগম। স্বশিক্ষিত ২ জন এবং অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন জাতীয় পার্টির বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল, বিএনপি নেতা আবদুুল আউয়াল মিন্টুর বিরুদ্ধে মামলা ১৩টি। ইনি মামলা ও সম্পদে সবার ওপরে।
ঢাকা দক্ষিণে ২৬ জনের মধ্যে ১২ জনই ব্যবসায়ী। পিএইচডি ডিগ্রিধারী ২ জন। মাস্টার্স করেছেন ২ জন। ৮ জন স্নাতক ডিগ্রিধারী। স্বশিক্ষিত ৬ জন। HSC পাস ৪ জন, SSC পাস ২ জন। মামলা আছে ৬ জনের বিরুদ্ধে। ৫ নেতার চারজন ৪৩ মামলার আসামি। এই সিটিতেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ৩৭ মামলার পাশাপাশি সম্পদেও সবার চেয়ে বেশি।
ঢাকা সিটি :
★সারাহ বেগম - অষ্টম শ্রেণী পাস।
★বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল -অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন।
★আনিসুল হক- মাস্টার ডিগ্রিধারী।
★আবদুল আউয়াল মিন্টু- মাস্টার ডিগ্রিধারী। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা।
★তাবিথ- এমএসসি ডিগ্রিধারী। আব্দুল আওয়াল মিন্টুর ছেলে।
★কবরী সরওয়ার - অষ্টম শ্রেণী পাস। চলচ্চিত্রাভিনেত্রী।
★মাহী বি চৌধুরী- স্নাতক।
★বাহাউদ্দিন বাবুল- অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন।
★ববি হাজ্জাজ- MBA. শিক্ষকতা।
★নাদের চৌধুরী- স্নাতক। টিভিব্যক্তিত্ব।
★মো.জুনায়েদ আবদুর রহিম সাকি - B. A. পাস। পুস্তক প্রকাশনায় জড়িত।
★আবদুল্লাহ আল কস্ফাফী -M. S.S. পাস।
★এ ওয়াই এম কামরুল - B. A. পাস।
★কাজী মো. শহীদুল্লাহ - স্বশিক্ষিত।
★চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী- স্নাতক।
★মো. শামছুল আলম চৌধুরী - Diploma in Hotel Management.
★সাঈদ খোকন - স্নাতক ডিগ্রিধারী।
★মির্জা আব্বাস - স্নাতক।
★নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু - স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক
★আবদুস সালাম - স্নাতকোত্তর। বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক।
★ড. আসাদুজ্জামান রিপন - পিএইচডি ডিগ্রিধারী। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক।
★সাইফুদ্দিন - স্বশিক্ষিত।
★গোলাম মাওলা রনি - আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।
★কাজী আবুল বাশার - H.S.C পাস। মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক।
চট্টগ্রাম সিটি :
★এম মনজুর আলম - S.S.C. পাস। সদ্য সাবেক মেয়র।
★আ জ ম নাছির - B.A. পাস।
★সোলায়মান আলম শেঠ - H.S.C. পাস।
★সৈয়দ সাজ্জাদ জোহার - H.S.C. পাস।
★আরিফ মইনুদ্দিন - ইতিহাসে M.A. পাস।
★এম এ মতিন - B.A. (অনার্স) কামিল পাস।
★ওয়াজেদ হোসেন ভূঁইয়া - আলিম পাস।
★আলাউদ্দিন চৌধুরী - H.S.C. পাস।
★সাইফুদ্দিন আহমেদ রবি - H.S.C. পাস।
★শফিউল আলম - H.S.C. পাস।
★আবুল কালাম আযাদ - S.S.C. পাস।
★মোহাম্মদ ফোরকান চৌধুরীর - S.S.C. পাস
★মুজিবুল হক - সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন।
সম্পদ বেড়েছে মনজুরের, আয় বেশি নাছিরের
বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলমের অস্থাবর সম্পদ পাঁচ বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। হলফনামায় এবার তার অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে ৩০ কোটি ১৬ লাখ ৮৫,০০ টাকা।
২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র নির্বাচনের সময় তার অস্থাবর সম্পদ ছিল ১৭ কোটি ৯৮ লাখ ২৫,০০০ টাকার।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনের অস্থাবর সম্পদের মূল্য দেখানো হয়েছে সাড়ে ১১ কোটি টাকা। সম্পদের দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও বার্ষিক আয়ে মনজুরের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। তার বার্ষিক আয় ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
অন্যদিকে মনজুর আলমের আয় ১ কোটি ৯২ লাখ ৭৫,০০০ টাকা। ২০১০ সালে তার আয় ছিল ৫৬ লাখ ৭৫,০০০ টাকা। নাছিরের ৮ কোটি ৪৪ লাখ দেনা রয়েছে এবং মনজুর আলমের দেনা ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
দুই মেয়র প্রার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে হলফনামা জমা দেন। সেখানে তাদের আয়, ব্যয়, সম্পদ, পেশা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে ১৩ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ১০ জন বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখতে পারেননি। একজন স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। দু'জন স্নাতক। ছয়জন এইচএসসি ও সমমানের শিক্ষাপ্রাপ্ত। তিনজন এসএসসি পাস। অপরজন অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। মামলা আছে দু'জনের বিরুদ্ধে। বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা না থাকলেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আ জ ম নাছির কর ফাঁকির মামলার আসামি। তথ্য সুত্র : দৈনিক সমকাল।
এসএসসি পাস মনজুর নিজেকে শিল্পপতি হিসেবে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। ১২টি প্রতিষ্ঠানের তিনি কোনোটির চেয়ারম্যান, কোনোটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবার কোনোটির পরিচালক। তার বার্ষিক আয় ১ কোটি ৯২ লাখ ৭৫,০০০ টাকা। এর মধ্যে মেয়র হিসেবে তার বার্ষিক সম্মানী ৪ লাখ ৪৯,০০০ টাকা উল্লেখ করা হয়।
স্নাতক পাস আ জ ম নাছির উদ্দিন হলফনামায় ছয় ধরনের ব্যবসাকে তার পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে বার্থ অপারেটিং, সোয়েটার কারখানা, ডেভেলপার, ফিশিং ব্যবসা, ঘাট ইজারা ব্যবসা ও তেল পরিবহন ব্যবসা রয়েছে। এসব খাত থেকে তার বছরে আয় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি থেকে পরিচালক ভাতা হিসেবে বছরে তিনি আয় করেন ৪২ লাখ টাকা।
মনজুর আলমের স্ত্রীও সম্পদশালী। তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৭ লাখ টাকা। নাছির উদ্দিনের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা রয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনজুর আলমের। পাঁচ বছর আগে তা ছিল ২৫ লাখ টাকা। ওই সময় তার নামে ব্যাংকে ৯২ লাখ ৭৫,০০০ টাকা থাকলেও এবার ব্যাংক জমা শূন্য দেখানো হয়েছে।
নাছিরের নামে ব্যাংকে জমা আছে ৯১ হাজার টাকা। নগদ রয়েছে ১ লাখ ৮৪,০০০ টাকা। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী তার একটি পুরোনো জিপ রয়েছে। অন্যদিকে যানবাহন খাতে মনজুর আলমের ৪ লাখ ৩০,০০০ টাকা দেখানো হয়েছে।
মনজুরের স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৩৪,৮১৮ টাকা। এর মধ্যে অকৃষিজমির মূল্য ৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর নামে অকৃষিজমি রয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার।
অন্যদিকে নাছিরের স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ নেই। নাছিরের নামে ঢাকায় ১০ কাঠারএকটি প্লট রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামে পৈতৃক বাড়ির ছয় ভাগের এক অংশের মালিক তিনি। তবে বাড়িটি কত কাঠার, তা হলফনামায় উল্লেখ নেই।
হলফনামা প্রকাশ করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সহকারী সচিব রাজীব আহসান বলেছেন, ‘নির্বাচনী বিধি অনুসারে প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য ইসি প্রকাশ করছে। যার মাধ্যমে সাধারণ ভোটার প্রার্থীদের যাবতীয় তথ্য জানতে পারে। সব কিছু যাচাই-বাছাই করেই ভোটাররা যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত করবেন।
এবার বাংলাদেশের ভবিষৎ এই তরুন প্রজন্মই হবে এদেশের চালিকাশক্তি তারা না জেনে না চিনে না বুঝে ভোট দিতে যাবে না। অবশ্যই বিচার-বিশ্লেশন করে ভবিষৎ ঢাকা গড়ার জন্য আদর্শ প্রার্থীই নির্বাচীত করবে।