সন্ধ্যা নামলেই জরিনার ঘুম ভাঙ্গে। অভ্যাস হয়ে গেছে। হাত মুখ ধুয়ে নিয়ে হাড়িতে খাবারের খোঁজ করে । আজ হাড়িতে কিছুই নেই,রান্না হয়নি আজ। এভাবে না খেতে খেতে তো শরীর চেহারা সব নস্ট হয়ে যাবে। এই ষোল বছরের চেহারা আর শরীর ই তো তার সম্বল।একবার আয়নায় দেখে নিজেকে জরিনা।ফর্সা গাল আর ভরা যৌবনা শরীর।
লিপস্টিক দিয়ে আরো গাড় লাল করে নেয় সে তার ঠোঁট।
''কারিনা, কেমন লাগে দেখতে? রুপ যৌবন তো উপচায় পরতাসে তোর। হোটেলের মাইয়া গুলা তোরে দেখলে হিংসায় জইল্লা যায়। তুই তো হিন্দি ফিলিমের নাইকারে কারিনা। রেট বাড়ায় দে। জুয়ান মর্দ গুলা তোরে চাইট্টা খাইতে চায়,রেট বাড়ায় দে।'' আয়নায় নিজেকেই নিজে প্রবোধ দেয় জরিনা, কারিনা তার বাজারি নাম। জরিনা পাউডার মাখে মুখে, চুল আঁচড়ে নিয়ে কাপড় বদলায়। একফাকে আয়নায় নিজের অনাবৃত শরীর দেখে তৃপ্তির হাসি হাসে। বঙ্গবাজার থেকে কেনা জিন্স আর হাতা কাটা টিশার্ট পরে। আজকাল এই কাপড় পরলে ভালো কাস্টমার পাওয়া যায়। জরিনাকে হিন্দি ফিলিমের নাইকাদের মতোই লাগে।খদ্দের গুলাও ভালো জোটে। মাঝে মাঝে হোটেলেও নিয়া যায়, রাতে ভালো খাবার ও থাকে। অনেকে থাকে মাতাল, তবে টাকা নিয়া ঝামেলা করেনা। সগির ভাই বলসিলো হোটেল এ পার্মানেন্ট হতে, কিন্তু জরিনা স্বাধীন থাকতে চায়। ওর রোজগারে কেউ ভাগ বসাবে তা সে চায় না,মেনে নিতে পারে না।
কিছু না খেয়েই বেড়িয়ে পরে জরিনা। যদিও খিদেয় পেট ডাকতেসে। রাস্তায় বেড়িয়েই শহরের ঝলমলে আলোতে নিজেকেও ঝলমলে ভাবতে থাকে সে।শহরটাকে স্বপ্নপুরী মনে হয়। এক সময়ের তার হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নের মতই ঝলমলে আর রঙ্গিন এই স্বপ্নের শহর।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


