বিশ্বজিৎকে সবাই পেটাচ্ছে। এক সময় তাকে দোতালায় নেওয়া হলো। পেটানো চলছেই। হঠাৎ সাদাশার্ট পরিহিত একজন চা-পাতি নিয়ে ওকে করিডরে নিয়ে গিয়ে কোপাতে লাগলো। রক্তে বিশ্বজিতের শার্ট লাল হয়ে গেল। চাপাতি হাতের যুবক তার কর্ম সম্পাদন করে বিশ্বজিৎকে অন্যদের কাছে ফেলে আসলো, তার কাজ শেষ। বাকিরা চূড়ান্তভাবে মৃত্যুর কোলে ফেলে দেওয়া পর্যন্ত পেটাতেই লাগলো। বেচারা বিশ্বজিৎএর মনে হয় কৈ মাছের প্রাণ মরতেই চায় না। বাকি কাজটুকু সম্পাদন করলো ডাক্তার; তিনি পুলিশের ভয়ে চিকিৎসা দিতে অপারগতা জানালেন।
মঙ্গলবার ও হরতাল। আমাকে অফিসে যেতে হবে। পথচারী আমিও হবো। মিছিলের মাঝে পড়বো। ককটেল ফুটবে। ভয়ে দৌড় দিবো। তখন ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল বা ছাত্র শিবির অন্য পক্ষের মনে করে আমাকেও এভাবে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে লাশ বানাবে।
২০ টা টিভি চ্যানেলের ৪০ জন কর্মী, ২০ টা নিউজ এজেন্সির ৪০ জন সাংবাদিক, অসংখ্য পুলিশ, অসংখ্য জনতা আমার মৃত্যুবরণ দৃশ্য দেখবে, ভিডিও করবে। ১০ টা চাপাতি ধারী পশুর বিরুদ্ধে ১০০ জন মানুষ দাঁড়াবে না। তারা ভিডিও করবে-হত্যা নিয়ে নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের কাটতি বাড়াবে। আমার মত অধমের মৃত্যুর মূল্য বেড়ে যাবে বহুগুণ।
ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাবে কে কে পিটিয়েছে তবু কোন মামলা হবে না। বিচার হবে না। এক অদ্ভুত সময়ে বেঁচে আছি, যেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মুহূর্তের ব্যাপার মাত্র।
[সংগৃহীত]
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৪৩