somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শিশির খান ১৪
সময় পাইলে ব্লগ লেখাটা এখন নেশায় পরিণত হয়েছে। ব্যাস্ততার ফাকে যারা আমার ব্লগ দেখেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের অনুপ্রেরণা থাকলে নিশ্চই সামনের দিন গুলোতে লেখা চালিয়ে যাবো।

ভারত কানাডা সম্পর্কে ফাটল

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সময়টা ভালো যাচ্ছে না মোদীর । চন্দ্র অভিযানে সফল হলেও জি টুয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন তেমন একটা সফলতা পায় নি । পরিকল্পনা ছিল শীর্ষ সম্মেলনকে পুঁজি করে সামনের বছর ভারতের জাতীয় নির্বাচনে মোদী এবং বিজেপি শক্ত অবস্থান তৈরি হবে। অনেক ঢাক ঢোল পিটিয়ে জি টুয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করলেও শুরুতেই উষ্টা খায় ভারত ।শুরুতেই সম্মেলনের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠার কারণ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দু’জনের কেউই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না।অন্য দিকে সম্মেলন শেষ হওয়ার পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভিয়েতনাম সফরের উদ্দেশ্যে ভারত ত্যাগ করেন। সম্মেলনে দেখা যায় জাস্টিন ট্রুডো নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে করমর্দন করে দ্রুত স্থান পরিবর্তন করছেন। শীর্ষ সম্মেলনে ভারত ও কানাডার প্রধান মন্ত্রী পর্যায়ে কোনো আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়নি। এমনকি জি টুয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে সাইডলাইনে দুই নেতা নরেন্দ্র মোদী ও জাস্টিন ট্রুডো একে ওপরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ভারত সফরের সময় রাজধানীর ললিত হোটেলে অবস্থান করেছিলেন। প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট প্রস্তাব করা সত্ত্বেও, তিনি ও তার প্রতিনিধি দল সেখানে থাকতে অস্বীকার করেন এবং পরিবর্তে একই হোটেলের একটি নিয়মিত কক্ষে থাকেন। ট্রুডোর প্রতিনিধিদল ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে বলেছে যে খরচের বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে ভারতীয় সংস্থাগুলো বলেছে, ট্রুডোর স্বাভাবিক রুমে থাকার পেছনে সঠিক কারণ সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।ফেরার সময়ে জাস্টিন ট্রুডোর বিমানে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়।ভারত অবশ্য নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ বিমান এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ান দিয়ে জাস্টিন ট্রুডোকে কানাডা পৌঁছে দেবার প্রস্তাব দেয় কিন্তু কানাডা সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়।বিমানের জন্য জাস্টিন ট্রুডো দুদিন দিল্লিতে অপেক্ষা করেন। কানাডা ভারত দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছিয়েছে যা আবারও ঠিক হতে অনেক সময় লেগে যাবে। গত তিন দশকের মধ্যে এমন ঘটনা ভারতে ঘটেনি যেখানে কোনও বন্ধুত্বপূর্ণ পশ্চিমা দেশ ভারতের কূটনীতিককে বহিষ্কার করে দিয়েছে।

শিখ নেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে

বছরের শুরুর থেকে বিভিন্ন দেশে পর্যায়ক্রমে তিনজন খালিস্তানপন্থী কর্মী মারা যাওয়ার পর বিষয়টি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক মনোযোগ পেয়েছে।খালিস্তান কমান্ডো ফোর্সের প্রধান পরমজিৎ সিং পাঞ্জওয়ার, যিনি ভারত কর্তৃক সন্ত্রাসী মনোনীত হয়েছিল, মে মাসে পাকিস্তানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল তার হত্যাকারীদের এখনও চিহ্নিত করা যায়নি৷ যুক্তরাজ্যে, অবতার সিং খান্দা, খালিস্তান লিবারেশন ফোর্সের প্রধান বলা হয়, পনেরো জুন হাসপাতালে মারা যান। খন্ডাকে মার্চে লন্ডনে একটি বিক্ষোভের পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল যেখানে বিক্ষোভকারীরা দেশটির দূতাবাসে ভারতীয় পতাকা টেনে
নামিয়েছিল। তবে যুক্তরাজ্য পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মৃত্যুকে "সন্দেহজনক বলে মনে করা হয়নি"।তার মৃত্যুর ঠিক তিন দিন পর, নিজ্জার, ভারত কর্তৃক মনোনীত একজন সন্ত্রাসী, ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার একটি শিখ মন্দিরের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। মূলত এই হত্যাকাণ্ড কেন্দ্র করে কানাডা ও ভারত উত্তেজনা শুরু হয়েছে।

হরদীপ সিং নিজ্জার কে ছিলেন?

ঘটনার সূত্রপাত এই হরদীপ সিং নিজ্জার কে কেন্দ্র করে। গত জুন মাসে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বারের পিছনের পার্কিং এ ট্রাকে বসে থাকা অবস্থায় নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করে দুই মুখোশধারী।হত্যার পর পালানোর সময় দুই মুখোশধারী ব্যক্তিকে পার্কের ভিতরের রাস্তা দিয়ে পায়ে হেটে যেতে দেখা যায়। কিছু দূর যাওয়ার পর তারা অপেক্ষমাণ একটি টয়োটা ক্যামরি রুপালি রঙের গাড়িতে উঠে । পুলিশ এখনও ওই দুই ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে শনাক্ত করতে পারেনি তবে কর্তৃপক্ষ তৃতীয় সন্দেহভাজনকেও খুঁজছে।নিজ্জার ছিলেন গুরু নানক শিখ গুরুদ্বারের সভাপতি এবং খালিস্তান আন্দোলনের পক্ষে একজন সোচ্চার স্পষ্টবাদী সমর্থক,যারা ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের কিছু অংশ নিয়ে শিখদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্র গঠন করতে আহবান জানায়। পয়তাল্লিশ বছরের হরদীপ সিং নিজ্জার উত্তর ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের জলন্ধর জেলায় উনিশশো সাতাত্তুর সালে জন্মগ্রহণ করেন। পূর্বে তিনি শরণার্থী হিসাবে আবেদন দাখিল করেন আংশিকভাবে বানোয়াট হওয়ার কারণে দেখিয়ে কানাডা সরকার সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে এর এগারো দিন পর তিনি আবার স্পনসরকারী একজন মহিলাকে বিয়ে করে কানাডায় প্রবেশের আবেদন করেন তখনও কানাডা সরকার তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে।উনিশশো সাতানব্বই সালে নিজ্জার কানাডায় প্রবেশ করতে সক্ষম হন। দুই হাজার পনেরো সালের মার্চ মাসে তিনি কানাডার নাগরিকত্ব লাভ করেন। কানাডায় তিনি বিয়ে করেছেন এবং তার দুই ছেলে আছে।শুরুতে কানাডায় তিনি প্লাম্বার হিসাবে কাজ করেন। ষোলো সালে একটি খোলা চিঠিতে, নিজ্জার ঘোষণা করেছিলেন: "আমি একজন শিখ জাতীয়তাবাদী এবং ভবিষ্যতের গণভোটের মাধ্যমে শিখদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ভারতীয় অধিকৃত পাঞ্জাবের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং সমর্থন করি।"।বিশ সালে নিজ্জার গুরু নানক শিখ গুরুদ্বারের সভাপতি নির্বাচিত হন।ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী, জাতীয় তদন্ত সংস্থার মতে, তিনি প্রাথমিকভাবে বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল (বিকেআই) শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত ছিলেন। নয়াদিল্লি বিকেআইকে একটি "সন্ত্রাসী সংগঠন" হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে এবং বলে যে এটি পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) গুপ্তচর সংস্থা দ্বারা অর্থায়ন হয় , যে অভিযোগ ইসলামাবাদ অস্বীকার করে।নিজ্জার পরে জঙ্গি গোষ্ঠী খালিস্তান টাইগার ফোর্স (KTF) এর প্রধান হয়ে ওঠেন এবং বিশ সালের ভারতীয় সরকারের বিবৃতি অনুসারে নিজ্জার"সক্রিয়ভাবে এর সদস্যদের পরিচালনা, নেটওয়ার্কিং, প্রশিক্ষণ এবং অর্থায়নে জড়িত ছিলেন"। ভারত নিজ্জারকে ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী হিসেবে মনোনীত করেছিল।এমনকি তাকে গ্রেফতারে সহায়তা করলে এক মিলিয়ন রুপি পুরস্কার জারি করেছিল।

নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে কানাডা সরকারের অবস্থান

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সে দেশের পার্লামেন্টে ভারতের দিকে সরাসরি আঙ্গুল তুলে বলেছেন তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে যে ভারত সরকারের গুপ্তচরেরা এই কানাডীয় নাগরিককে হত্যার ঘটনায় জড়িত। পার্লামেন্টের ভাষণে ট্রুডো আরো বলেন “কানাডার গভীর উদ্বেগের কথা ভারত সরকারের শীর্ষ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহে জি টুয়েন্টি সম্মেলনের মধ্যে বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছি,” কানাডা প্রকাশ্যে হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানোর আগে তার ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সাথে - ফাইভ আইজ গোয়েন্দা-আদানপ্রদানকারী দেশগুলির সাথে আলোচনা করেছে। ফাইভ আইজ (FVEY) হল অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি গোয়েন্দা জোট।

নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতে সরকারের অবস্থান

নিজ্জারকে হত্যার ঘটনায় ভারত সরকারের জড়িত থাকার গুরুতর এই অভিযোগকে দিল্লি 'মনগড়া' এবং ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ বলে নাকচ করে দিয়েছে। “এই ধরণের ভিত্তিহীন অভিযোগ খালিস্তানি সন্ত্রাসী ও উগ্রপন্থীদের ওপর থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা। যারা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি একটা হুমকি, তাদের কানাডায় আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে ।“

নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারত ও কানাডা সম্পর্কের ধারাবাহিক অবনতি

হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে মদদ দেওয়ার অভিযোগে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে দূতাবাসের কূটনৈতিক গোয়েন্দা সংস্থার সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য পবন কুমার রাইকে বহিষ্কার করেছেন।পাল্টা পদক্ষেপ হিসাবে ভারত সরকার কানাডার হাইকমিশনারকে তলব করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং নয়াদিল্লিতে কানাডার গোয়েন্দা সংস্থার স্টেশন প্রধানকে পাচ দিনের মধ্যে ভারত ত্যাগের নির্দেশ দেয়।ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক বিরোধের মধ্যে ভারত কানাডার হাই কমিশন এবং কনস্যুলেটগুলির "নিরাপত্তা হুমকির" পরিপ্রেক্ষিতে কানাডিয়ান নাগরিকদের ভিসা প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।ভারত ও কানাডা দুই দেশ পাল্টা পাল্টি ভ্রমণ সতর্কতা ইস্যু করেছে তাদের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে।

ভারত এবং কানাডা সম্পর্কে শিখরা কেনো গুরুত্বপূর্ণ

ভারতের বাইরে কানাডা বিশ্বের বৃহত্তম শিখ জনসংখ্যার আবাসস্থল।কানাডাতে প্রায় সাত লক্ষ সত্তুর হাজার শিখ বসবাস করে।কানাডার মোট জনসংখ্যার শতকরা দুই ভাগ শিখ।ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এক মন্তব্যে বলেন যে খালিস্তানের প্রতি কানাডার প্রতিক্রিয়া "ভোট ব্যাংক বাধ্যতা" দ্বারা চালিত হয়েছে, ট্রুডোর লিবারেল পার্টি শিখদের কাছ থেকে যে সমর্থন পায় তা উল্লেখযোগ্য ট্রুডোর সংখ্যালঘু সরকারও নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) দ্বারা সমর্থিত, যার নেতৃত্বে জগমিত সিং, সে নিজেও একজন শিখ।ভারত ও কানাডা উত্তেজনা শুরু দুই হাজার পনেরো সাল থেকে যখন ট্রুডো ক্ষমতায় আসেন এবং তার তিরিশ সদস্যের মন্ত্রিসভায় চারজন শিখ মন্ত্রী নিয়োগ করেন। দুই হাজার আঠারো সালেও ট্রুডোর ভারত সফর আবারো সমালোচিত হয় কারণ নয়াদিল্লিতে তিনি নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন একটি শিখ দলকে যেখানে জসপাল অটওয়ালের নামে এক জন শিখ ব্যক্তি ছিলেন যিনি একজন সফরকারী ভারতীয় মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রীকে হত্যার চেষ্টার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।পরবর্তী সময়ে কানাডা অভ্যর্থনায় আটওয়ালের আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে। গত বছর কানাডার একটি হিন্দু মন্দির ভাংচুর করা হয়েছিল এবং গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছিলো যাতে উর্দুতে লেখা ছিল"ভারতের মৃত্যু" এবং "খালিস্তান" এমনকি শিখ কানাডিয়ানরা ভারতে শিখদের স্বাধীনতা জন্য স্থানীয় গণভোটের আয়োজন করছে। ভারতীয় কূটনীতিকরা শিখ কানাডিয়ানদের এসব কর্মকান্ডের জন্য অনেক দিন থেকেই কানাডা সরকারকে অভিযোগ করছিল।

খালিস্তান আন্দোলন কী?

উনিশশো চল্লিশ সাল থেকে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে শিখ ধর্মাবলম্বীদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র খালিস্তানের দাবী উঠতে শুরু করলেও তা আন্দোলনে রূপ নেয় সত্তর থেকে আশির দশকে। শিখদের প্রধান তীর্থক্ষেত্র অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির চত্বর থেকে ওই আন্দোলন পরিচালিত হত। আশির দশকের শুরু থেকে ওই আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে, অস্ত্র মজুত করা হতে থাকে মন্দির সংলগ্ন ভবনগুলিতে।সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে উনিশশো চুরাশি সালের পয়লা জুন স্বর্ণমন্দির চত্বরে সেনা প্রবেশ করে, শুরু হয় অপারেশন ব্লু স্টার।সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে শীর্ষ খালিস্তানি নেতা জার্নেইল সিং ভিন্দ্রনওয়ালে সহ বহু খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হন।সরকারি হিসাবে ওই অপারেশনে ৮৩ জন সেনা সদস্য ও শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী ও বেসামরিক নাগরিক সহ ৪৯২ জন নিহত হয়েছিলেন। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলি জানিয়েছিলো নিহতের সঠিক সংখ্যা অনেকগুন বেশি। দশদিনের ওই সেনা অপারেশনের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বের শিখ সম্প্রদায় ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন, তারা মনে করেন যে এই অপারেশন তাদের ধর্মের প্রতি সরাসরি আঘাত।অন্যদিকে ভারতের বিভিন্ন সেনা ছাউনিতে অবস্থানরত শিখ সৈন্যদের একটা অংশ বিদ্রোহ করে। তাদের অনেককে সেনাবাহিনীর অন্যান্য রেজিমেন্টের সদস্যরা গ্রেপ্তার করে যাদের পরে কোর্ট মার্শাল হয়। অনেক বিদ্রোহী শিখ সেনা সদস্য গুলির আঘাতে নিহতও হন।অপারেশন ব্লু স্টারের কারণে উনিশশো চুরাশি সালের একত্রিশে অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে তার দুই শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে প্রাণ দিতে হয়। তারপর ভারতব্যাপী শিখ বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়, দাঙ্গায় এক হাজারেরও বেশি শিখ নিহত হন। ওই দাঙ্গায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ছিল কংগ্রেসের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে। বর্তমানে ভারতে শিখদের বিদ্রোহের পক্ষে তেমন একটা সমর্থন নেই। তবে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিখদের ছোট দলগুলির মাঝে খালিস্তানের আহ্বান এখনও জোরেশোরে রয়েছে।মাঝে মাঝে শিখ প্রবাসীদের ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। শিখ কর্মীদের দ্বারা খালিস্তানের পক্ষে বিক্ষোভ এবং গণভোটের জন্য তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছে ভারত।

বাইশ সালে ভারত কানাডার দশম বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার ছিল, সেই বছর পণ্যের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় বারো বিলিয়ন ডলার ছিল, যা আগের বছরের থেকে শতকরা চাপানো ভাগ বেশি। তারা এখন ব্যাকবার্নারে সেই বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের খুব কাছাকাছি ছিল যা স্থগিত করা হচ্ছে। এছাড়াও আঠারো সাল থেকে, ভারত কানাডায় আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য সবচেয়ে বড় উৎস দেশ।কানাডিয়ান ব্যুরো অফ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন অনুসারে, এই সংখ্যা গত বছর তুলনায় শতকরা সাতচল্লিশ শতাংশ বৃদ্ধি পেয় প্রায় তিন লক্ষ হয়েছে, যা মোট বিদেশী ছাত্রদের প্রায় শতকরা চল্লিশ ভাগ উপরের পরিসংখ্যান থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে কানাডা ভারত একে অপরের উপর নির্ভরশীল।সম্পর্ক স্বাভাবিক অবস্থায় অনার বিষয়ে নরেন্দ্র মোদী বা জাস্টিন ট্রুডো দুই জনের উপর চাপ আছে । সামনের বছর ভারতের জাতীয় নির্বাচন নরেন্দ্র মোদীর অবস্থান শক্ত হলেও কানাডা ভারত সম্পর্ক গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় করবে ভারতের জনগন ।



সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৪
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×