somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিটি শব্দই একটি করে বম্বশেল............................................

৩০ শে জুন, ২০১০ সকাল ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :









প্রতিটি শব্দই একটি করে বম্বশেল…………………
২রা জুন,২০১০,প্রায় বিকেল।সামান্য ব্যস্ত চোট্ট শহর ব্রিসবেন।প্রতিদিনের মতো পারট-টাইম কাজ যাচ্ছিলাম কুরপারু,দক্ষিন ব্রিসবেনে।।অ্যান স্ট্রিট থেকে বাস নং ১৮৪ উঠলাম,সাথে আমার প্রতিদিনকার সংগী, জনপ্রিয় ডেইলী ফ্রী ট্যাবলয়েড নিউজ়পেপার MX.বসতে বসতে একটু অবাক হলাম,বাসে আজ সবাই ফিসফিস করে কথা বলছে। পাত্তা না দিয়ে প্রিয় সিটটা দখল করে বসলাম রোজ়কার মতো।আসলে এই সিটটাতে আমি নিয়মিত বসি বলতে গেলে।প্রতিদিন একই সময়ে একই বাস উটলে ওই সময়ের সব যাত্রীরা একে-অপরের মুখ চেনা হয়ে যায় যে। এ বাসে সবাই আমার মুখ চেনা,যেমনটি আমি ওদের কাছে।হাই-হ্যালো মাইট বলি একে অপর কে।যাহোক আমি নিউজপেপারে ডুবে গেলাম।
হঠাৎ অসবাভিকতা। একই শব্দ/বাক্যের পুনরাবৃত্তি।পরনিন্দাকারী,কুৎসা সব পচা-গলা শব্দ ।নিজের তো দূরাবস্থা,পরের দুরাবস্থা দেখলে মনটা এক বিকৃ্ত সুখে ভরে উ্ঠে।এর ৈশল্পিক নাম আত্ন-সান্তনা,এটা নিজেকে নিজ ছাড়া এটা কেউ কাউকে দিতে পারেনা।নিজেও তো ৮-১০ জনের মতো সীমাবদ্ধ মানুষ। এই যান্ত্রিক,মায়াহীন পৃথিবীতে যেখানে প্রত্যকটা অস্তিতমান সেকেন্ড অতিক্রান্ত হয় নিজে টীকে থাকা না থাকা নিয়ে,সেখানে সুখ বড় বিলাসী,দুরলভ জিনিষ।এরই মাঝে ইন্দ্রয়গুলো সুখ খুজে ফিরে,কিভাবে পাবে সেটা মূখ্য নয়,বরং এটা হয়ে উঠে ওদের জৈবিকতা।তাই আমার ইন্দ্রয়গুলো ভীষন তৎপর হয়ে উঠে লোভে,লোভী শকুনের মতো,লোভে প্রতি লোভী। সাদা চামড়াগুলো কাকে এ রকম তুলোধূনা করে করে বলছে too bad,they don’t have any idea of consequence of this. This nation will be great sufferer in future…আরো কতো কান কে সুখ দেয়া সব শব্দ।আহা!।
আমার পুরো মনোযোগ এবার বাসের সকল যাত্রীদের প্রতি,আর যাত্রিদের সব মনোযোগ নিউজপেপারে।হমম…….২য় পাতায় মাঝামাঝি একটা ফটো নিয়ে।এক সেকেন্ডের লক্ষ ভগ্নাংশের এক অংশের কম সময় নিয়ে ফিরে এলাম ২য় পাতায়।ওই ক্ষুদ্র সময়ে শুধু ফটোটা দেখে মনেই হলো,আরে…এতো কলকাতার হাওড়ার,তানাহলে এত্তো নোংরা কোথায় হবে।মনে পড়ল ভারতের জন্য মরুভূমির হবার পথে আমার উত্তর বংগ,মুখে এক রকমের জিতে যাওয়া হাসি নিয়ে ডান-বাম তাকালাম,কিছু সুখ নিজের জন্যে।স্থায়ীস্তকাল ১ সেকেন্ডের কম।
এপির তোলা ফোটো।পড়তে গিয়ে দেখি এ যে আমার মায়ের,বাংলাদেশের ছবি। এযে প্রিয় ঢাকা’র বুড়ীগঙ্গার নাম যে বড়ো করে লেখা। প্রমাদ গুনলাম।আমার এক সেকেন্ডের কম সুখগুলো বিষাক্ত সায়ানাইডে রুপান্তর হয়ে আমার রক্তে মিশে যেতে থাকে বন্যার পানির ফসলে ভরা জমি খেয়ে ফেলার মতো। কি ভীষন দুরনাম করছে আমার মা,আমার দেশের নামে।উন্নতদেশের ৩য় শ্রেণীর রাতমজুর আমি,দারুন অস্তিতে ভূগতে থাকি।রক্তচাপের সাথে উচ্চ মাত্রায় হাটবিট অনুভব করি।ফলাফল এই শীতের মাঝেও ঘেমে উঠি।নিজের সাথে নিজেকে ভীষন অচেনা লাগে।বার বার মনে হছিলো এখানে সবাই যেনো চিনে ফেলেছে আমাকে,এক দুঃখিনী বাংলার দুবলা সন্তান। পুরো বাসটাই আমার জন্যে হয়ে উঠে শত্রু চোখে ধরা পরে যাওয়া এক পরিখা।আমার সুখের সেই প্রিয় কুৎসা,পচা-গলা শব্দগুলো হয়ে উঠে একেকটা বম্বশেল, ওদের লাগামহীন বিস্ফোরণে আমার ইন্দ্রয় কান প্রায় পাগল,অন্যান্য ইন্দ্রয়গুলো এখন সুখ খোজার বদলে পালাবার পথ খুজছে।ষষ্ঠ ইন্দ্রয় কানে কানে পথ বাতলে দেয়,একটাই পথ,নেমে পর আগে।
নেমে পড়লাম ২ কিমি আগে।হেটে যাবো।নিজেকে পালিয়ে বাচিয়ে নিজেকে থাঙ্কস দেই।আশে-পাশে তাকাই;না,কেউ নেই।হিমেল হাওয়ায় নিজেকে মাতৃকোলে মনে হয়।এই ৪০ মিনিটের যাত্রাকে মনে হয়েছে আরেক ওয়াটারলু’র যুদ্ধ।
১৫টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×