somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রামপাল নিয়ে লাফালাফি দেখে আমি প্রচন্ড বিরক্ত।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

...রামপাল নিয়ে লাফালাফি দেখে আমি প্রচন্ড বিরক্ত।
না না, কেবল বিরক্ত না, প্রচন্ড ত্যক্ত-বিরক্ত!
তোমরা রামপাল নিয়ে লাফাইতেছো কেন? রামপালে আছে টা কি?
তোমরা বাঘের জীবন আর হরিণের জীবন নিয়ে নিজের জীবনের ঘুম হারাম করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছো।
বাঘ তোমাদের কি হয়?
তালুই?
হরিণ তোমার কি হয়?
গার্লফ্রেন্ড?
কাম টু দ্য পয়েন্ট ম্যান!
নিজের জীবনের নিরাপত্তা কয় পার্সেন্ট আছে?
নিজের জীবনেরই নিরাপত্তা যেখানে নাই সেখানে বাঘ-হরিণ আর লতাপাতার জীবন নিয়া টেনশন করা চরম বিলাসিতা এবং পুরোপুরি আহম্মকি।
তারচেয়ে চলুন...পজেটিভ চিন্তা করতে শিখি।
এখন আধুনিক যুগ, সভ্যতার যুগ। বন জঙ্গল দিয়া কোন কাজ নাই। বন জঙ্গল এখন দেশের বোঝা।
তারচেয়ে জঙ্গল কেটে একটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, চিমনি দিয়ে ধোঁয়া সুন্দর করে আকাশে উড়বে...
উফ! কি অসাধারণ ব্যাপার না?
ছোটবেলায় পাশের নদী দিয়ে হঠাৎ হঠাৎ কোন একটা জাহাজ গেলে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে দেখতাম। এখন প্রতি মাসেই শত শত কয়লার জাহাজ কয়লা নিয়ে সুন্দর বনের নদী দিয়ে আসবে!
উফ!
আমার এখনই সুন্দরবনে গিয়ে বাড়ি বানাতে ইচ্ছে করছে।
তোমরা বলো জাহাজ পানিতে ডুবে গেলে বন বিষাক্ত হয়ে যাবে।
কিন্তু তোমরা এটা ভাবোনা জাহাজ ডুবির ভিডিওটা ফেসবুকে আপলোড করতে পারলে কতটা লাইক কমেন্ট আর শেয়ার আসবে।
ভেবেছো কখনো?
তোমরা শুধু শুধু সরকারকে গালি দিচ্ছো।
এটা ভেবে দেখলা না আমাদের সরকার ভারত সরকারের চেয়ে হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী!
হু..ভারত সরকার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে চেয়েছিল। তাদের বেয়াদব পরিবেশ সংস্থা সরকারকে অনুমতি দিল না!!
কত বড় বদ চিন্তা করা যায়?
এমনকি তাদের জনগণ গুলোও বেয়াদবের চূড়ান্ত।
তারাও বেঁকে বসল। যেমন টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের সময় কেবল অতিরিক্ত গাছ কাটতে হতে পারে বেঁকে বসেছিল তাদের পরিবেশ সংস্থা এবং জনগণ।
আর ভারত সরকার..বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসংখ্যার গণতান্ত্রিক সরকার করল কি..ঘাড় নিচু করে সামান্য জনগণের দাবি মেনে নিল। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র করল না!!
ঘাস খাওয়া সরকার হলে যেটা হয় আর কি।
হাউ স্ট্রেঞ্জ!
অথচ আমাদের সরকারকে দেখো।
জনগণ-টনগণ হু কেয়ার্স।
পরিবেশ সংস্থা বলে কোন কিছু আমলে নিল না। প্রথম চান্সেই দাবড়ানি দিয়া ৪০০ পরিবারকে খেদাই দিল। লাখো মেট্রিক টন চাল বা ফসলের জমি অধিগ্রহণ করল। চিংড়ি ঘের উচ্ছেদ করে কারো কোন কথা না শুনে বলল, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হবেই!
ইয়েস..ইটস কনফিডেন্স ম্যান!
সরকার হবে রাজার মতো। সিংহের মতো হবে গর্জন। ঐ ভারতীয়দের মতো মিনমিনা গরু হলে তো হবে না।
ও মা! তোমরা ভ্রু কুঁচকাইছো ক্যান?
৪০০ পরিরারই তো। ৪০০ পরিবারে কতজন মানুষ হয়?
সর্বোচ্চ ৪০০০। ১৬ কোটি মানুষের দেশে চার হাজার এক ফোঁটা শিশিরসম। সাগরের মাঝে শিশির বিন্দু নিয়ে চিন্তা না করলেও চলবে।
এ প্রজেক্টের সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আমরা ভারতের মতো একটা দেশকে সাহায্য করতে পারছি। দেশের অবাধ্য জনগণের দৌড়ানি খাওয়া এত বড় সরকারের দুঃখের দিনে আমরা বসে থাকি নি। প্রায় ফ্রি ফ্রি তাদেরকে জমিসহ, ঝুঁকিসহ এবং পুরো একটা বনসহ বিদ্যুৎ দান করছি।
হোয়াট এ গ্রেট অ্যাচিভমেন্ট!!
বিশ্বাস করো...ধ্বংস হয়ে যাওয়া সুন্দরবন আমাদের এ আত্মত্যাগের কথা বারবার ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দেবে। বিশ্ব আমাদের আত্মত্যাগের খবর শোনে চোখ টিপে মুচকি হাসবে।
তোমরা অনেকে ভারতের এক্সিম ব্যাংকের ঋণ নিয়ে চিন্তিত!
হোয়াট দ্য হেল?
তোমরা কেবল টাকাটাই দেখলা? ভারত যে পুরো একটা দেশ আমাদেরকে উপহার দিল সেটা দেখলা না। ভারতের ঋণ শোধ অযোগ্য। তারপরও এরকম কিছু ঋণ এনে সুদ দিয়ে আমাদের ৪৫ বছরের ঋণশোধের চেষ্টা তো করে যেতে হবে।
হাঁ, বিশ্বের শীর্ষ দশ সামরিক শক্তির এক শক্তি ভারতকে বারবার সাহায্য করে আমরা আমাদের মহাত্ম বারবার দেখাচ্ছি।
কদিন আগেই ট্রানজিট দিলাম,এবার সুন্দরবন। আমরা দিতেই থাকব।
আমরা দাতা জাতি।
আমরা বেশি টাকা দিয়ে কয়লা কিনব কেন..
আমরা বেশি টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ কিনব কেন. এরকম নানান হ্যান তেন প্রশ্ন তোমরা করো।
আশ্চর্য তো, আমাদের টাকা আছে বলেই তো আমরা বেশি টাকা দিয়ে কিনে পৃথিবীকে দেখাব..দেখো, আগে আমরা মধ্য আয়ের দেশ ছিলাম। এখন উচ্চ আয়ের।
হুম!
তোমরা সত্যিকার অর্থেই বড়ই অকৃতজ্ঞ।
মাত্র কদিন আগেই মোদি বললেন, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশের পাশে আছে ভারত।
তার জবাবে আমরা যদি বলি, ও মা! কি সুইট করে বলল গো?
আসেন, কি খাবেন বলেন? এই নেন সুন্দরবন ভাজা, প্লিজ না খেয়ে যাবেন না। হাঁ, বান্দরবন, কক্সবাজার, সিলেট খাইতে চাইলেও দিতে পারি। বেশি সময় লাগবে না। সিলেটে আবার তেল-গ্যাস আছে। গ্যাসের গ্যাসে, তেলের তেলে ভাজা হবে।
সুইট না?
হাঁ, মোদি সাহেব কথা রাখছেন। যেমন রেখেছিলেন সোনিয়ারাও। প্রতি সপ্তাহেই সীমান্তে কিছু জঙ্গিকে হত্যা করে বাংলাদেশের অসীম উপকার করা হয়।
পরিশেষে কিছু প্রস্তাবনা।
ভারত আমাদের কাছে যৌতুকপ্রিয় স্বামীর মতো।
তারা যখন যা চাইবে, তখন তা দিতেই হবে। নইলে আমাদের সুখের সংসার ভেঙে যাবে।
সুতরাং ভবিষ্যতে কি কি দেয়া যেতে পারে তার লিস্ট দিচ্ছি।
সুন্দরবনের পরপরই দেয়া যেতে পারে কক্সবাজার সী বিচকে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ হাঁ করে সমুদ্র দেখে। সমুদ্র দেখার মাঝে কোন সওয়াব নেই। সমুদ্র না দেখলে কেউ মারা যাবে আর মুনকার নাকির "সমুদ্র দেখিস নাই ক্যান" বলে ডলা দেবেন এমনও না।
সুতরাং ১২০ কিলোমিটারের সী বিচ আমরা ভারতকে দিয়ে দেব।
ভারত সেটা দিয়ে কি করবে?
ভারত করবে ভ্রাম্যমান প্রাকৃতিক টয়লেট।
নিন্দুকেরা বলে ভারতীয়রা খোলা স্থানে পায়খানা করে। তাদের সী বিচগুলো নাকি অতি ব্যবহারে এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমাদের বন্ধুদের বিপদে এগিয়ে যেতে হবে আমাদেরকেই।
প্রতিদিন জাহাজে করে মানুষ আসবে। তারা শান্তিতে পায়খানা করে চলে যাবে। তারা কত দোয়া দেবে হিসেব আছে?
কক্সবাজার সী বিচ হবে ধন্য।
পরের স্টেপে আমরা খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি-বান্দরবনের পাহাড় দান করব।
দেশের এক কোণায় খাম্বার মতো কয়েকটা পাহাড় দাঁড়াইয়া থেকে কি লাভ?
পাহাড় কেটে ভারতীয়রা মাটি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ভরাট করবে।
অনেকেই হয়তো জানেন যে এবারের বন্যা পশ্চিমবঙ্গেও হচ্ছে। ভারত সুইচ গেট খুলে দেয় আমাদের দেশে বন্যা হওয়ার জন্য।
সাথে সাথে যদি তাদেরও বন্যা হয় তবে কেমনে বরদাশত করা যায়? মানুষ মরবে কেবল এ পাড়ে, অনলী এ পাড়ে..
পাহাড় কাটার পর সমতল হয়ে যাওয়া ভূমিতে ভারতীয় মিলিটারী ক্যাম্প হবে। এখনো খানিকটা পিছিয়ে থাকা ভারতীয় সেনাবাহিনী হবে ওয়ার্ল্ড টপ থ্রি!
জাস্ট ওয়াও!!
পরের স্টেপে আমরা দেশের সবচেয়ে সুন্দর এবং প্রাকৃতিক সম্পদশালী সিলেট দান করব।
সিলেট এমনিতেই ভারতের প্রাপ্য। ৪৭ এ ঘাড়তেড়া সিলেটিরা ভোটাভুটি করে আলাদা না হলে আজকে আসামের সম্পদের সাথে সিলেটের সম্পদও ভারতের কেন্দ্র ব্যাংকে জমা হত।
আফসোস! কঠিন আফসোস!!
সিলেটের জায়গা দখলের চেষ্টাও করা হয়েছে কয়েকবার।
আবারো আফসোস! আমাদের বন্ধুদের গুল্লি করে জায়গা নিতে হয়। তারচেয়ে বরং এমনিতেই দিয়ে দেই।
সিলেটের গ্যাসক্ষেত্রের অফুরন্ত গ্যাস,তেল, বিদ্যুতের একটা বিহিত হোক।
এরপর কি কি দেয়া যেতে পারে তার লিস্ট পরে দেয়া হবে।
..সবশেষে আমি রাকিব আহমেদ , অত্যন্ত সৎভাবে স্বীকার করছি যে সংবিধান কয়েকবার হাতে নিলেও কোন ধারাই আমার মুখস্ত নেই।
তবে ফেসবুক মারফত জানতে পারলাম সংবিধানের ৭(১) ধারা মোতাবেক আমিও এ দেশের একজন মালিক।
সত্যিই যদি তাই হয়ে থাকে তবে আমি রাকিব আহমেদ সম্পূর্ণ সুস্থ মস্তিষ্কে, স্বজ্ঞানে আমার ভাগের অংশ নিঃশর্তে ভারতকে দান করলাম।
কারণ যেটা দখল হওয়া অবশ্যম্বাবী, সেটা আগেই দান করা বুদ্ধিমানের কাজ।
একই সাথে যারা তাদের অংশ দান করতে অস্বীকৃতি জানাবে তাদেরকে ৭(ক) ধারা মোতাবেক (এটাও ফেসবুক থেকে শিখেছি) রাষ্ট্রদোহী হিসেবে ঘোষণা করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
‪#‎স্যাটায়ার‬
‪#‎আমি_সরকার_বিরোধী_নই‬
‪#‎আমি_ভারত_বিদ্বেষী_নই‬
‪#‎দোহাই_লাগে_রামপাল_বন্ধ_করুন‬
‪#‎কার_পায়ে_ধরতে_হবে_বলেন‬
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:০১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×