somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বের একমাত্র পাটের জাদুঘর ভ্রমণ

১৪ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বের একমাত্র পাটের জাদুঘর বাংলাদেশে না হয়ে ইউকেতে কেন হলো সেটা জানতে হইলে কয়েকশ বছর আগে ফিরে যাইতে হবে।
স্কটল্যান্ডের ডান্ডি কয়েকশ বছর আগে ছিল এক দরিদ্র অবহেলিত জনপদ। তবে এর তিনটা বিশেষত্ব ছিলো: ফ্ল্যাক্সের (লিনেন) কাপড় তৈরি করা, নিকটস্থ সাগরে তিমি শিকার এবং জাহাজ বানানো। তবে কেবল এই তিনটা বিশেষত্ব ডান্ডিকে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিলোনা। সবকিছু বদলে গেলো একটা আকষ্মিক ঘটনার পর। ১৮ শতকের প্রথমদিকে তৎকালীন বৃটিশ ভারতের পূর্ববঙ্গ থেকে একধরনের তন্তু আনা হয়। খুবই সস্তা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই তন্তুটা অনমনীয়, বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যবহারের অনুপোগী। কিন্তু এই তন্তুর উপর ঘটনাক্রমে তিমি মাছের কিছু তেল পড়ার পর দেখা গেলো সেটা বেশ নরম হয়ে উঠেছে। বাকিটা ইতিহাস। "In 1820 the first twenty bales of jute were unloaded at Dundee docks. It was to change the city’s destiny forever", ভবনটির এক প্রদর্শনী কক্ষে এটা লেখা ছিলো। এই ভবনটি একসময় পাটকল ছিলো। কিন্তু এখন পাটের জাদুঘর। নাম- ভারডন্ট ওয়ার্কস। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির উদ্বোধন করেন।


......................................... বাইরে থেকে বোঝাই যায়না ভবনটা কত স্পেশাল

পাট থেকে তৈরি হলো দড়ি, ঘরের দরকারি আসবাবপত্র। কলোনি যুগে যখন হঠাৎ করে বৈশ্বিক ব্যবসা বেড়ে গেলো তখন চা, কফি, মসলা, ইত্যাদি দ্রব্য পরিবহন করার জন্য প্রচুর থলের দরকার পড়লো। পাটজাত পণ্যের চাহিদা আকাশচুম্বী হয়ে উঠলো। জাহাজের পাল, তাবু ইত্যাদি বানানোর জন্য পাটের প্রয়োজন হলো।

একজন বৃদ্ধা আমাকে জানালেন, উনি যখন শৈশবে ট্রেনে করে স্কুলে যেতেন তখন পথের দুইপাশে শয়ে শয়ে চিমনি দিয়ে ধোয়া উঠতে দেখতেন৷সবগুলোই ছিল পাটকল। এই সময় ডান্ডির প্রায় শতভাগ মানুষের জীবিকা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাটের উপর নির্ভর করতো।

মিউজিয়ামটিতে আপনি শতবর্ষ আগের পাটকলের ভেতর দিয়ে হাঁটতে পারবেন। যন্ত্রপাতি আগের মত বসিয়ে পাটকলের আসল রূপ ধরে রাখার চেষ্টা যেমন আছে, অন্যদিকে মানুষের কাছে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করার জন্য প্রামাণ্যচিত্র, প্রদর্শনীর ব্যবস্হা রয়েছে। পুরো মিউজিয়াম যেন হারানো অতীত নিয়ে হাহাকার করছে।


..........................................পাটের বস্তা প্রস্তুত। এখন প্রিন্ট করা হবে।

এই শহরের মানুষ তাদের পাটের ইতিহাস নিয়ে গর্বিত। কিন্তু পরিপাটি সুন্দর শহরের মানুষ হয়তো জানেইনা, শহরটির সমৃদ্ধির পেছনে সুদূর বাংলাদেশ কিভাবে অবদান রেখেছে।


.................................................১৯১৬ সালে কোন এক পাটকলের কয়েকজন শ্রমিক একসাথে

কিভাবে যাবেন:
লণ্ডন, গ্লাসগো বা এডিনবরা থেকে ডাণ্ডি সিটি সেন্টারে ন্যাশনাল এক্সপ্রেস, সিটি লিঙ্ক এই বাসগুলো যায়। সিটি স্কয়ার থেকে ১০-১২ মিনিট হাঁটার দূরত্ব। গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে সহজেই চলে যেতে পারবেন।

টিকেট: মূল্য একটু বেশি। ১১.২৫ পাউন্ড; বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২ শত টাকা। এতগুলা পাউন্ড খরচ করে যেতে আমার কষ্টই হয়েছিলো। তবে ভেতরে যেয়ে মনে হলো খরচ করাটা সার্থক।


সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১৬
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×