পশ্চিমা গণমাধ্যম আমার বেশ লাগে। বিনোদনের জন্য।
এদের অনেকেই বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা প্রচার করে, খুব উপভোগ্য করে।
জানে মিথ্যা, তবুও উপস্থাপন নিখুঁত, শিল্পীত। বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে। অনেকে বিশ্বাস করেও। আমার ভালো লাগে।
ইরাকে মানব বিধ্বংসী অস্ত্র আছে, এবং অবিলম্বে ইরাকে হামলা চালানো উচিত, এই জাতীয় খবর ও বিশ্লেষণ তারা প্রচার করতো, ২০০১ সালে, নাইন ইলেভেনের পর।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষে পড়তাম তখন। টিউশনি থেকে ফিরে রাতের খাবারের পর, রুমমেটরা সবাই মিলে, সাড়ে দশটায় রেডিওতে বিবিসি শুনতাম, রোজ।
সাড়ে দশটা থেকে এগারটা, প্রতিরাতে ৩০ মিনিট বাংলা খবর প্রচার করতো তারা তখন। এখনো কি করে? কে জানে।
বিবিসি বুশের বক্তব্যের বরাত দিয়ে ইরাক হামলার যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতো, প্রতি রাতের খবরে, প্রতিদিন। অবিরাম।
বুঝতাম এই খবর ও বিশ্লেষণে মিথ্যা ও অতিরঞ্জন আছে। কিন্তু শুধু রাগ করা ছাড়া আর কি বা করার ছিলো। কেউ কেউ গালি দিতো।
ইরাকে দশ লাখেরও বেশি মানুষ মারলো আমেরিকা। এর বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ, নারী, শিশু।
কোন মানব বিধ্বংসী অস্ত্র পাওয়া গেলোনা ইরাকে।
ক'দিন আগে ইরাক হামলা বিষয়ে এক বৃটিশ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে (Chilcot Report)। সেখানে দেখানো হয়েছে, মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত ঝুঁকির কথা বলে, ব্লেয়ার ইরাক হামলায় বুশের সহযোগী হয়েছিলেন।
একটা ভিডিওতে দেখলাম, সাংবাদিকেরা এ ব্যাপারে ব্লেয়ারকে জিজ্ঞেস করলে বেচারা বেশ অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। অপরাধীর মুখোভঙ্গী নিয়ে আ উ করতে থাকলো। কিছুটা অনুতপ্তও মনে হলো খুনিটাকে।
এর আগে একই প্রশ্নে বড় খুনি বুশকেও আমতা আমতা করতে দেখেছি।
মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে, মিথ্যা খবর প্রচার করা গণমাধ্যমের কর্তা ব্যক্তিদের সাংবাদিকেরা কখনো প্রশ্ন করেছে, তাদের মিথ্যা প্রচার বিষয়ে?
মিথ্যা প্রচারের জন্য কোন গণমাধ্যম অনুতপ্ত হয়েছে কখনো?
আমি দেখিনি।
আপনাদের অভিজ্ঞতা কী?
লেখক: শাহাদাত হোসেন
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৩৫