বুয়েটের অল্প সময়ের শিক্ষকতা জীবনে অনেকগুলো বিয়ের ঘটকালি করার সুযোগ হয়েছিল। সমবয়সী তরুণ শিক্ষক এবং বুয়েট গ্রেজুয়েট ইঞ্জিনীয়ারদের বড় একটা লিষ্টের জন্য পাত্রী খুজতাম। বুয়েটের সিনিয়র শিক্ষকদের মেয়ে এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রীদের মধ্যেই অধিকাংশ পাত্রী পাওয়া যেত।
গত বিশ বৎসর ঘটকালির কাজ করি নাই। এখন বয়সের অন্য ধাপে এসে বন্ধুদের ছেলেমেয়েদের (এবং নিকট ভবিষ্যতে নিজের ছেলেমেয়েদের) বিয়ের জন্য আবার এই ঘটকালি জগতে প্রবেশ করতে হয়। পচিঁশ বৎসর আগে আমার হাতে পাত্র ছিল অনেক, পাত্রী খুজতাম তখন। এখন পুরো উল্টো। বাংলাদেশে এবং ইউকেতে সবখানেই পাত্রীর সংখ্যা অনেক, পাত্র অনেক কম।
সবচেয়ে বড় কারণ: পচিঁশ বৎসর আগে, মেয়েরা পড়াশুনা শেষ করার জন্য বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান এতটা করত না। এখন মেয়েরা এবং তাদের পিতামাতারা বেশী ক্যারিয়ার সচেতন হয়ে গিয়েছে। পাশ করা এবং চাকুরী শুরু করা না পর্যন্ত বিয়ের কথা চিন্তা করছে না। কিন্তু ছেলেদের এবং পাত্র পক্ষের মানসিকতা বড় দাগে একই রয়ে গেছে - "কুড়িতে বুড়ি" (I tried to draw a general perception of our people that remained the same - in spite of the so-called progressive mentally)। যতই উচ্চ শিক্ষিত এবং বেশী বেতনে চাকুরী করুক, মেয়েদের বিয়ের বাজারে এখনো (হয়তো কখনোই) তা সবচেয়ে বড় নিয়ামক না। ফলে, মেয়েদের বয়স বাড়ছে, কিন্তু বিয়ে হচ্ছে না, বিয়ের সম্ভাবনাও কমছে বয়সের ব্যস্তানুপাতে।
বাংলাদেশের তুলনায় ইউকেতে বাংলাদেশী মেয়েদের অবস্থা আরো ভয়াবহ! উচ্চ শিক্ষিত, বেশী বেতনে চাকুরী করা মেয়েরা প্রথম প্রথম ইউনিভার্সিটি গ্রেজুয়েট ছেলে খুজতে থাকলেও আনুমানিক ৩৫ বৎসর বয়সের পর আর ইগো ধরে রাখতে পারে না। আজ সকালে আমার সহধর্মিণীর কাছে শুনলাম আমাদের পরিচিত এক মহিলা ডাক্তার একজন ননপ্রফেশানাল পুরুষের ২য় স্ত্রী হবার পথে অগ্রসর হচ্ছে। (that lady doctor is now frustrated why she refused her marriage proposal during her student life!)
উপসংহারে এই কথা বলব, মেয়েদের ক্যারিয়ার নিয়ে বেশী জোর দেয়া এবং সংসারকে কম গুরুত্ব দেয়ার ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এবং মেয়েদের নিজেদের জীবনও কষ্টকর হচ্ছে - এক পর্যায়ে একাকীত্ব সহ্য করতে না পেরে ভয়ংকর ভাবে প্রতারিত হচ্ছে। মেয়েরা উপার্জন না করলে, অর্থনৈতিকভাবে পুরুষের অধীনে থাকলে নানানভাবে পুরুষের নিকট নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। আবার এই সমস্যা থেকে উত্তরণে যখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে যাচ্ছে তখন যেজন্য স্বাবলম্বী হয়েছে সেটাই আর পেতে পারছে না!
লেখক -অহিদুল আলম।
রাগবী, ইউকে
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৩