এক.
প্রতিদিন ঘুমানোর আগে আলজাজিরা দেখি৷ গাজার যুদ্ধ দেখি৷ রক্ত দেখি৷ লাল লাল৷ ছোপ ছোপ৷ সদ্য জন্মানো শিশুর৷ নারীর৷ কিশোর কিশোরীর৷ বৃদ্ধের৷ সারি সারি লাশ৷ সাদা কাফনে মোড়ানো৷ ভবনে চাপা পড়া৷ হাসপাতালের করিডোরে৷ অনলাইনে বিভৎস সব ভিডিও দেখি৷ আহতদের চিৎকার দেখি৷ তারপর ঘুমাতে যাই৷ কিছু বলার নাই৷ বলার মতো কেউ নেই৷ শোনার মতোও কেউ নেই৷ সবাই ব্যস্ত জীবনে আমার মতোই হয়ত ঘুমানোর আগে একটু যুদ্ধ দেখে ঘুমাতে যান৷ ফিলিস্তিনে কী শান্তি সম্ভব! সম্ভব কীনা তা বলতে পারিনা৷ তবে যারা শান্তি চেয়েছিলেন তাদের পরিনতি বলতে পারি৷ চলুন শুনে আসি শান্তির উদ্যোগের পরিণতি৷
দুই.
ফিলিস্তিনিদের ওপরে বর্বরতা চলছে৷ আট মাস পার হয়েছে। এটা শুরু করার জন্য হামাসকে দোষ দিতে পারি! এই সময়ে হামাসকে দোষ দিলে তা ইসরায়েলের পক্ষে যায়৷ ইসরাইলের বর্বরতার সীমা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। তারপরেও হামাসের কর্মকান্ড সম্পর্কে বিশ্লেষণ করা দরকার। ২০০৭ সালে ভোটে জিতে হামাস ফাতাহর নিরাপত্তা বাহিনীকে ছোটখাটো যুদ্ধে পরাজিত করে গাজা থেকে বিতাড়িত করেছিল। হামাসের সাথে ফাতাহর যুদ্ধে ছয়শর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। সেদিনই গাজাবাসির ভাগ্য লেখা হয়ে গিয়েছিলো৷ এখন যেটা হচ্ছে তা ভাগ্যবরণ৷
ফিলিস্তিনিদের ইতিহাস বড়ই নির্মম ও রক্তাক্ত ! কারণে অকারণে তাদের রক্ত ঝরেছে। ব্লাক সেপ্টেম্বরের কথাই ধরা যাক। ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক ও বর্বরোচিত নকবার ফলশ্রুতিতে ফিলিস্তিনিরা জর্ডানে আশ্রয় নিয়েছিলো। তবে জর্ডানের সাথে রাজনৈতিক বিরোধ ও বৈরিতা সৃষ্টি হওয়ায় জর্ডানের ১৪টির মতো জেলা দখল করেছিলো ফিলিস্তিনি ফেদাইনরা। এ নিয়ে জর্ডানের সাথে পিএলওর নেতৃত্বে যুদ্ধও হয়। জর্ডানের সেনাবাহিনীকে এ যুদ্ধের জন্য তৈরি করেছিলেন পাকিস্তানি জেনারেল জিয়াউল হক। ফিলিস্তিনিদের রক্তে হাত রাঙিয়ে যিনি পরে পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছিলেন। জর্ডানের রাজা ঘোষণা করেছিলেন, ফেদইয়ানের ৩৬০ টি ভূগর্ভস্থ ঘাটি ধ্বংস করে জর্ডান থেকে পিএলও উৎখাত করা হয়েছে। ইয়াসির আরাফাত অভিযোগ করেছিলেন, জর্ডান কমপক্ষে পচিশ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
এছাড়াও ফিলিস্তিনি মিলিট্যান্টরা কী করেনি! বিমান দখলে নেয়ার ঘটনা আছে৷ অলিম্পিকে আক্রমন করেছে৷ একের পর এক আত্মঘাতি হামলায়ও তাদের রক্ত ঝরেছে। পরে যখন বিশ্বব্যাপী ইসলাম ধর্মবেত্ত্বারা ফতোয়া দিলেন, আত্মঘাতি হামলা ইসলাম ধর্মে নেই৷ এতে তারা আত্মঘাতি হামলা বন্ধ করেছে৷
পরে আবার আরেক পদ্ধতির যুদ্ধ শুরু করছে৷অটোমনদের আরব থেকে হটানোর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল বৃটিশ সেনা কর্মকর্তা টমাস এডওয়ার্ড লরেন্স বা টি. এ লরেন্সের৷ তাকে ভালোবেসে লরেন্স অব অ্যারাবিয়া ডাকা হয়৷ তিনি আধুনিক আরবের জনক৷ তিনি গেরিলা যুদ্ধে 'হিট অ্যান্ড রান' পদ্ধতির আবিস্কারক৷ ওহাবীরা তার সেই মন্ত্র দিয়ে তুরস্কের অটোমনদের আরব থেকে বিতাড়িত করেছিল৷ হামাসও সেই পথে হাটছে৷ এই পন্থায় তাদের ইনোভেশনও রয়েছে৷ হামাস যে পন্থা অবলম্বন করেছে তা হলো ' হিট অ্যান্ড রান, দেন মেক হিউম্যান শিল্ড৷' আঘাত করো। পালাও। তারপর সাধারণ মানুষকে ঢাল বানাও।
এর সাথেও কী ইসলামের কোন সম্পর্ক আছে? আল্লাহর নবী দ. জীবনে বহু যুদ্ধ করেছেন৷ কোথাও সেনাবাহিনী পাঠিয়ে আক্রমন করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করে পালিয়ে এসেছে- এমন কোন ঘটনা নেই৷ বরং সেনাপতিকে বলে দিয়েছেন, যাতে বেসামরিক মানুষের ক্ষতি না হয়৷ হামাস উল্টাটা করেছে৷ হামলা করে বেসামরিক মানুষ হত্যা করেছে। অশীতিপর বৃদ্ধা, নারী, দুধের শিশুকেও অপহরণ করেছে। শত্রুকে আক্রমন করে নিজের অরক্ষিত জনগণকে বিপদে ঠেলে দিয়ে সুড়ঙ্গে লুকিয়ে নিজের জীবন বাঁচানোর পন্থা আবিস্কার করেছে৷ আর বড় নেতারা বিদেশে অবস্থান করছেন। যদিও কয়েকজন ইসরাইলের হামলার শিকার হয়ে বিদেশেই নিহত হয়েছেন। পৃথিবীর যুদ্ধের ইতিহাসে সম্ভবত এটাই সবচেয়ে স্টুপিড কৌশল হিসেবে বিবেচিত হবে৷ এ কৌশলে এ পর্যন্ত চল্লিশ হাজার ফিলিস্তিনিদের জীবন শেষ হয়েছে। বেঁচে থাকা জনসংখ্যার বড় একটি অংশ আহত হয়েছে। তবে পূর্বপর বিশ্লেষণ করে বলে দেয়া যায় যে এটাই হামাসের রাজনীতি৷
ইরান মাঝে মাঝে হুমকি দেয় ইসরাইলকে মানচিত্র থেকে মুছে দেবে৷ হামাসও সেই পথে ছিল৷ উগ্র পথে জনসমর্থন মেলে৷ এই পথে গিয়ে তারা ভোটেও জিতেছে৷ তবে ২০১৭ সালে এসে ঘোষণা দিয়েছে ১৯৬৭ সালের ম্যাপ অনুযায়ী তারা প্যালেস্টাইন চায়৷ তার মানে তারাও এখন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান চায়। অথচ এই লক্ষ্যেই কাজ করেছিলো ফাতাহ৷ হামাসের কারণে ফাতাহর আন্দোলন মাঠে মারা গেছে৷ এবার জিম্মি মুক্তি নিয়েও রাজনীতি করেছে হামাস। জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে গাজার বাসিন্দাদের মুক্ত করেনি। মুক্ত করেছে ফাতাহর নেতৃত্বাধীনে থাকা পশ্চিম তীরের কারাবন্দীদের। মুক্তিপ্রাপ্তদের নিয়ে হামাস পশ্চিমতীরে শোডাউন করেছে। এতে পশ্চিম তীরে হামাসের জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে। জনপ্রত্যাশা সামলাতে এখন বাধ্য হয়ে ফাতাহকে হামাসের সাথে ঐক্য করতে হবে। চীন এ বিষয়ে মধ্যস্থতা করছে। তবে কোনোদিন নির্বাচন হলে ফাতাহ বেকায়দায় পড়ে যাবে বলে মনে হয়।
আমেরিকার হামলার নিহত ইরানি জেনারেল কাশেম সোলায়মানি হামাসকে অর্থ দিয়েছিলেন। সেই অর্থে হামাস যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে ইরানের কাছে এটা তাদের পক্ষে ছায়া যুদ্ধ। হামাসের পক্ষে এখন শিয়া হুতি ও হেজবুল্লাহ দু চারটা রকেট নিক্ষেপ করছে। এর মাধ্যমে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে। আর এসব কারণে সুন্নী আরবরা পড়েছে দোটানায়। কেউ জোরালো সমর্থন দিচ্ছেনা। হামাস মুসলিম ব্রাদারহুডের অঙ্গ সংগঠন। মুসলিম ব্রাদারহুড আরবের বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ। মিশর মনে মনে হামাসের পতন চায়। এ কারণে এত গণহত্যার পরেও কোনো মুসলিম দেশ ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেনি।
এদিকে উভয় পক্ষে রক্ত ঝরেছে৷ ইসরায়েলের একজনের বিনিময়ে কয়েক'শ ফিলিস্তিনির জীবন যাচ্ছে৷ এই অজুহাতে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল অব্যাহত রয়েছে৷ তবে গণহত্যার প্রেক্ষিতে পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু পাওয়া যাচ্ছে তা হারানোর কাছে খুবই সামান্য অর্জন। নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্পেন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে ন্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে এতে যুদ্ধে সামান্যই প্রভাব পড়বে। কারণ জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ১৪০টি দেশ ইতোমধ্যেই রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তারা ইসরাইলকে থামাতে পারেনি। বিবিসি হামাসকে সন্ত্রাসি সংগঠন বলেনা। সেই বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্র লাভের দীর্ঘদিনের যে স্বপ্ন, তা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা অন্য যে কোনও সময়ের চেয়ে এখন আরও বেশি অনিশ্চিত মনে হচ্ছে।
তিন.
প্যালেস্টাইন এমন একটা বিষয় যা নিয়ে কথা বলাও ঝুঁকির৷ শান্তির কথা বলা আরো মারাত্মক৷ এখন শান্তির কথা বলতে হলে একপক্ষকে ইসরাইলকে মেনে নিতে হবে। আরেকপক্ষকে ফিলিস্তিন মেনে নিতে হবে। এটা কে করতে যাবে!। কেউ ইসরাইলকে মেনে নেয়ার কথা বললে সে ইহুদীদের দালাল ছাড়া কিছুই নয়। অন্যদিকে ফিলিস্তিন মেনে নিলে ইসরাইলে তার রাজনীতি শেষ। এতে যুগ যুগ ধরে ফিলিস্তিনদের হত্যার বৈধতা প্রশ্নের মুখে পড়বে। জমি দখল প্রশ্নের মুখে পড়বে। তারপরেও দুজন মানুষ ঝুঁকিটা নিয়েছিলেন।
প্যালেস্টাইনের জন মানুষের মুক্তিরদূত ইয়াসির আরাফাত৷ তিনি জীবনের এক পর্যায়ে চেয়েছিলেন শান্তি৷ ওদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আইজ্যাক রবিন৷ তারা দুজনে অসলো শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন৷ এ চুক্তি ভালো না খারাপ সে সম্পর্কে কিছু বলবোনা। চুক্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। জাস্ট পিএলওকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে রবিন পিএলও চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাতের কাছ থেকে সন্ত্রাস বন্ধ ও ইসরায়েলকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতিপত্র বুঝে নেন। একই দিন ৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে তিনি পিএলওকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেন৷
চুক্তিতে স্বাক্ষরের পর ঐতিহাসিক করমর্দনকালে আরাফাতকে রবিন বলেছিলেন, 'ইসরায়েলীদের পক্ষে ঘোষণা করছি যে, আমরা একে-অপরের বিপক্ষে যুদ্ধ করেছি। ফিলিস্তিনীগণ, আমরা আপনাদেরকে উচ্চস্বরে ও স্পষ্টভাষায় বলছি যে, যথেষ্ট রক্ত ঝরেছে ও চোখের জল পড়েছে ... যথেষ্ট হয়েছে!' শান্তির কথা বলায় রবিনের পরিণতি সবার জানা৷ তিনি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্বও স্বীকার করেন নি। শুধু পিএলওর অস্তিস্ত স্বীকার করেছিলেন। ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে ইসরাইলের স্বীকৃতি আদায় করতে সমর্থ হওয়ায় ইসরায়েলিদের কেউ রবিনকে বীর হিসেবে অখ্যায়িত করে। আবার কেউ পিএলওকে স্বীকৃতি দেয়ায় বিশ্বাসঘাতকরূপে চিহ্নিত করে। অসলো শান্তি চুক্তির উদযাপন করতে তেল আভিবের কিংস অব ইসরায়েল স্কয়ারে বর্তমানে রবিন স্কয়ারে গণ শোভাযাত্রাযার আয়োজন করা হয়৷ রবিনও এতে অংশ নেন৷ এসময় তাকে এক উগ্র ইজরাইলি তিনটি গুলি করে৷ হাসপাতালে নেয়ার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও ফুসফুসের জখমে তাঁর মৃত্যু হয়।
ওদিকে শান্তিচুক্তি করে ইয়াসির আরাফাতকেও ভিলেন বানিয়ে দেয় বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি৷ আরাফাত যতদিন অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন ততদিন ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন। যখনি শান্তির পথে গিয়ে ছাড় দিয়ে চুক্তি করেন; পাশা উল্টে যায়। আরাফাতের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন প্যালেস্টাইনের জাতীয় কবি মাহমুদ দারবিশ৷ কিন্তু ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তির পর দারবিশ ফাতাহ থেকে বের হয়ে যান। এরপর তিনি আরাফাতের সাথে আর কোনো সম্পর্ক রাখেন নি। তিনি প্রতিবাদ করে বলেছিলেন : এই চুক্তিতে ইনসাফ নেই, এই চুক্তিতে ফিলিস্তিনী পরিচয়ের ন্যুনতম অনুভূতি এবং তার ভৌগোলিক অবস্থানের প্রতি কোনো লক্ষ্য রাখা হয় নি। এই চুক্তি ফিলিস্তিনীদের একটি যাযাবর জাতিতে পরিণত করবে। মাহমুদ দারবিশের কথার যৌক্তিকতা কেউ কখনো অস্বীকার করতে পারবেনা। ইসরাইল ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্বই স্বীকার করেনি। তাহলে এত রক্ত দেয়ার ফলে কী অর্জিত হলো!
তবে আরাফাতের পক্ষেও যুক্তি ছিল। দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ ফিলিস্তিনের ভাগ্য নির্ধারণ করেছে। আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই শক্তিকে হারানো সম্ভব নয়। আরবরা সবাই মিলে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ছয় দিনও টিকতে পারেনি। পরে যে যারা স্বার্থ দেখে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এ অবস্থায় হুদায়বিয়া সন্ধির মতো কৌশল গ্রহণ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। আলোচনা ছাড়া যুদ্ধ করে তাদের কাছ থেকে কিছু আদায় করা যাবেনা। পিএলওর অস্তিত্ব মেনে নেয়ায় ইসরাইলের সাথে এক টেবিলে বসে আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়। আলোচনার টেবিলে ইসরাইলের কখনো জেতার সম্ভাবনা নেই। এই সুযোগটা নিতে চেয়েছিলেন আরাফাত।
তবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়ায় তার এবং ফাতাহর জনপ্রিয়তা কমে যায়৷ ওদিকে যুদ্ধবাজ বেদুইন আরবরা হামাসে যোগ দেয়। হামাস মানচিত্র থেকে ইসরাইলের অস্তিত্ব মুছে দেবার সংকল্প করে। এতে তাদের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়৷ হামাস ফাতাহ ও আরাফাতের ক্ষমতার ভিত্তি দুর্বল করে দিয়ে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে নেয়। শেষ জীবনে আরাফাতের সময়টা ভালো কাটেনি। তাকে দীর্ঘদিন রামাল্লায় তার কার্যালয়ে গৃহবন্দী করে রাখা হয়৷ জীবনের শেষ সময়ে একা হয়ে গিয়েছিলেন এক সময়ের ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত এই নেতা। পরে ২০০৪ সালের ১১ই নভেম্বর প্যারিসের একটি হাসপাতালে মারা যান ইয়াসির আরাফাত। তখন মৃত্যুর কারণ হিসেবে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তাকে বিষপ্রয়োগে তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ ওঠে৷ মৃত্যুর প্রায় আট বছর পর ২০১২ সালে ইয়াসির আরাফাতের দেহাবশেষ কবর থেকে তোলা হয়৷ এক বছর গবেষণার পর সুইস বিজ্ঞানীরা বলছেন তার হাড়ে যে পরিমাণ পোলিনিয়াম নামে একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া গেছে তা মানবদেহের স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ১৮ গুন বেশি।
মানে হলো- ইসরায়েলের পক্ষে যিনি শান্তির কথা বলেছিলেন তার মৃত্যু হয় গুলিতে৷ আর প্যালেস্টাইনের পক্ষে যিনি শান্তির কথা বলেছিলেন তার রাজনৈতিক মৃত্যু হয়৷ বিষে শারিরীক মৃত্যু হয়৷ এরপর কে বলবে ফিলিস্তিন নিয়ে শান্তির কথা!
চার.
যুদ্ধ দেখে দেখে মৃত্যু দেখে দেখে ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন ভাবি৷ ফিলিস্তিনে কী শান্তি সম্ভব! কে শান্তির কথা বলবে! কে আবার জীবনের ঝুঁকি নেবে! না কী জাতিগত নিধনের শিকার হওয়াটাই ফিলিস্তিনিদের একমাত্র নিয়তি!
#All eyes on Rafa
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯