somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘ-বৃষ্টি-ঝোড়ো হাওয়া-ভেজাভেজা চারদিক, যেন তুমি আর তুমি......!

৩০ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ আমার ভিন্ন ভালোলাগা, অন্য আবেগ আর ভীষণ গাঁ শিরশিরে শিহরণ...!

যখন আকাশের মুখ ভার হয়, মুছে যায় আকাশের নীল, মেঘে-মেঘে ছেয়ে যায় সমস্ত আকাশ আর পুরো পৃথিবী, গাছ-ঘাস-লতাপাতা আর পাখিদের ছোটাছুটি শুরু হয় আশ্রয় খোঁজার, মানুষদের দিগ্বিদিক ছুটেচলা, উদ্দেগ-উৎকণ্ঠা আর বিভীষিকাময় সবকিছু... আর আমি? উদ্বেলিত-উচ্ছ্বসিত-উন্মাদ-উড়ন্ত, আনন্দে-আবেগে-আহ্লাদে-আবেশে......! কেন? কেন আবার তুমি, এযে তুমি... এই মেঘ-ঝড়বৃষ্টি-বিদ্যুতের চমক-এই শিলাবৃষ্টি-ভেজা ভেজা চারদিক, এই সবই যেন তুমি...! অন্তত আমার কাছে, এভাবেই তোমাকে দেখি, তোমাকে খুঁজি, ছুঁয়ে দেখি, আপ্লুত হই... ভেসে-ভেসে অন্ধ হই আবেগে...!

কিভাবে, একটু বুঝিয়ে বলনা প্লিজ... এই মেঘ-বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়া, বিদ্যুৎ চমক এসব তোমার এতো ভালোলাগে কেন?

হ্যাঁ বলছি, শোন আমি জানি তুমি দূরের কেউ, খুব-খুব-খুবই দূরের একজন, কিন্তু তোমার ভাবনা আমাকে জেঁকে ধরে, আমার মাথায়,মনে আর মনের গহীন অরণ্যে তোমার ভাবনা আমাকে ছিনিয়ে নেয় আমার আমির কাছ থেকে। কিন্তু আমি জানি তোমাকে ভেবে–ভেবে আনন্দিত হওয়া ছাড়া আর কোন ভাবেই কোন কিছুই সম্ভব নয়, অন্তত এই জীবনে, তাই প্রকৃতির এই আগমনের কাছে আমি তোমাকে খুঁজে নেই, তোমাকে খুঁজে পাই, ছুঁয়ে দেখি আর একা-একাই আনন্দে ভাসি...!

তোমার মনে আছে কিনা জানিনা, কিন্তু আমার আজও স্পষ্ট মনে আছে, একদিন বাসে করে যাচ্ছিলাম তুমি আর আমি যদিও দুইজন দুই সিটে, কিন্তু আমরা দেখছিলাম একে অন্যকে আড় চোখে, কখনো জানালার কাঁচে চোখ রেখে তোমাকে দেখার আপ্রাণ চেষ্টা, খুবই অস্বচ্ছ, বেশ আবছা একটা আভা শুধু মাত্র দেখা যাচ্ছিল তোমার, আসলে ওটা ছিল তোমার অবয়ব, ওটা দেখে দেখেই আমি তোমাকে দেখছিলাম সেই জানালার কাঁচে...! হঠাৎ দেখি তুমিও দেখছো...!

সেদিন জানতো খুব-খুব করে মনে প্রানে চাচ্ছিলাম আজ যেন রাস্তায় জ্যাম হয় প্রচণ্ড জ্যাম, যেন বসে থেকে-থেকে সবার প্রান হয় ওষ্ঠাগত...! বাসায় ফিরতে যেন দেরী হয় খুব-খুব, কারণ জ্যাম যত বাড়বে, যত বেশী দেরী হবে ততখন তোমাকে দেখা যাবে, তোমাকে পাশে পাওয়া যাবে, তোমাকে চোখ দিয়ে ছুঁয়ে দেখা যাবে...! তাই আমার সেই নিষিদ্ধ চাওয়া...! সেদিন বিধাতা আমার চাওয়াটা আমার প্রত্যাশার চেয়েও বেশী করে পূরণ করে ছিলো, সে আমার এক পরম পাওয়া, অনেক অরাধ্য এক বিকেল, নিজেকে হারিয়ে ফেলা কিছু মুহূর্ত...! অনিঃশেষ সুখের এক সন্ধা...!

কেন কি হয়েছিল সেদিন...?

সেদিন... আমি মনে-প্রানে জ্যাম আশা করছিলাম, সেই আশার পালে নতুন হাওয়া লাগিয়ে দিল দিগন্ত জুড়ে ধেয়ে আশা কালো মেঘ আর মেঘ মানেই তো বৃষ্টি তাইনা? হ্যাঁ তাই-ই এসেছিল ঝুমঝুম বৃষ্টি আর সেই বৃষ্টির ছাঁট এসে ভিজিয়ে দিয়েছিল একটু তোমাকে আর একটু আমাকে! কারণ তোমার পাশের সিটটা ফাঁকা হতেই আমি এসে পড়েছিলাম তোমার পাশে, না গাঁ-ঘেঁসে নয়, একটু ফাঁকা রেখে...! তুমি দেখেছিলে তোমার ওই ডাগর-ডাগর আড় চোখে আর হেসেছিলে মিটিমিটি, নিজের সাথেই! তোমাতে হারাতে দেখে আমায়! আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছিলাম তোমার ওই একটু ঘাম আর ফা বডি স্প্রের মিশ্রনের মাদকতায়! ইস কি যে ছিল সেই বিকেল, সেই সন্ধা আর সেই ঝুমঝুমে বৃষ্টির জ্যামময় এই শহর! সে আমার কাছে এক অপার্থিব আনন্দের মোহময় কিছু মুহূর্ত! তোমাকে বলে বোঝানো যাবেনা......

তো হঠাৎ বৃষ্টির ছাঁট এসে পড়াতে তুমি সরে এসেছিলে তোমার জানালার পাশ থেকে ছুঁয়ে দিয়েছিলে আমাকে...! আবার সরেও গিয়েছিলাম তাৎক্ষণিক আমরা দুজনেই, কারণ এটা তোমার-আমার কারোই ইচ্ছাকৃত ছিলনা এতটুকুও, সে জান তুমিও আর আমিও। কিন্তু তোমার ওই অতটুকু ছোঁয়াই আমাকে ভাসিয়ে নিয়েছিল সেই বৃষ্টির বাণের সাথে, দুরে-বহুদুরে, সে তুমি জাননা। আর সেই সাথে রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছিল তুমুল জ্যাম, দুই পাশের রাস্তাই যেন ছিল নিথর-নিস্তব্ধ গতিহীন, বাসের সকলে ঘেমে–নেয়ে একাকার, বিরক্ত আর উদ্বেগ সবার চোখে-মুখে এমনকি তোমারও,

কিন্তু আমার? সেদিনের সেই সন্ধ্যায় সেই বাসের একমাত্র আমিই বোধয় ছিলাম যাকে সেই বৃষ্টি-জ্যাম দিয়েছিল অমোঘ আনন্দ, বিরামহীন বৃষ্টির ব্যাকুল বিলাসিতা।

হঠাৎ আমার চোখ পড়লো তোমার জানালায়, দেখি তোমার স্পষ্ট জ্যোৎস্নাঝরা মুখ! নাহ, এবার আর অবয়ব নয়, নয় তোমার অস্পষ্ট মুখ সেই জানালার কাঁচে, কারণ বাইরের নিকষ কালো অন্ধকার আর ঝমঝমে বৃষ্টির ঘনত্তে স্বচ্ছ কাঁচ এবার যেন আয়নায় রূপান্তরিত! যে আয়নার তোমার মুগ্ধতাময় বিভা ছড়ানো মুখ আরও উজ্জ্বল আর জ্যোৎস্না মাখা হয়ে উঠেছিল আমার কাছে! সে এক সীমাহীন সম্মোহন, তুমি জানোনা।

এরপর, এক ঘণ্টার পথ প্রায় আড়াই ঘণ্টায় তোমার পাশে-পাশে যেতে-যেতে হারিয়ে গিয়েছি যে কোথায়-কোথায়? তুমি জানোনা, তুমি জানবেনা, তুমি বুঝবেনা। সে শুধু আমিই জানি, আমিই বুঝি, সে আমার একার আনন্দ। বাস থেকে নেমে রিক্সা খুঁজে পেতে তোমার উদ্বেগ আর সেই উদ্বেগে আমি ছড়িয়ে দিয়েছিলাম কিছুটা নির্ভারতা তোমাকে খুঁজে দিয়ে একটি রিক্সা! আর রিক্সায় উঠে আমার দিকে ফেলা তোমার সেই পরম কৃতজ্ঞতা আর আবেগের মোহময় চোখের এক পলক আর দুই ঠোঁটের কোনে ভেসে ওঠা এক চিলতে মৃদু হাসি...!

যা আমাকে নিঃশেষ করে দিয়েছিল... সেই থেকে আমি মেঘ খুঁজি, আমি বৃষ্টি চাই, আমি বৃষ্টির ছোঁয়া গায়ে মেখে তোমাকে ছুঁয়ে যাই.........!

তাই আমি বলি এতো মেঘ নয়, বৃষ্টি নয়, নয় ভেজা-ভেজা চারিদিক... এ যেন তুমি আর তুমি সব কিছুতে, সবটুকু জুড়ে, আমায় ছুঁয়ে-ছুঁয়ে.........!

ভালো থেকো, অনেক ভালো আর ফিরে এসে ছুঁয়ে দিও বৃষ্টি হয়ে......
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। VF 3 Mini: মাত্র 60 মিনিটে 27 হাজার বুকিং!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪



আমার ব্যাক্তিগত গাড়ি নেই কিন্তু কর্মসূত্রে বেঞ্জ , ক্যাডিলাক ইত্যাদি ব্যাবহার করার সুযোগ পেয়েছি । তাতেই আমার সুখ । আজ এই গাড়িটির ছবি দেখেই ভাল লাগলো তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট: বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন

লিখেছেন করুণাধারা, ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন! view this link

সামহোয়্যারইনব্লগ থেকে কয়েকজন ব্লগার আলাদা হয়ে শুরু করেছিলেন সচলায়তন বা সংক্ষেপে সচল ব্লগ। এটি বন্ধ হবার মূল কারণ উল্লেখ করা হয়েছে দুটি:

১)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×