somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই মনে করেন, খুশিতে, ঠেলায়, ঘুরতে...একটি ভ্রমণ কাহিনী

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগামীকাল লেভেল ফোর টার্ম টু এর ফাইনাল ভাইভা। সকালে চিন্তা করছিলাম চার বছরের সব পড়া রিভাইস দিয়ে ফাটায়ে ফেলব। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল। আর পড়ার ইচ্ছেও মরে গেল। আবার ইচ্ছা ফিরায়ে আনার জন্য কি করা যায় ভাবতেছিলাম। হ্যারি পটার ফিলসফার স্টোন দেখা শুরু করলাম। আগেও দেখসি। কিন্তু ১০ মিনিট দেখে আর দেখতে ইচ্ছে করল না। কি করা যায়। বিকেল ৫ টা। শোভনকে ফোন দিলাম। হাঁটাহাঁটি করতে বের হবে কিনা জানার জন্য। এক পায়ে খাড়া। ভাইভার পড়া চাঙে।
আমি থাকি সুরমা এলাকা যেটা সাস্ট এর কাছে। শোভন থাকে মদিনা মার্কেট। ভার্সিটি গেট থেকে ৫ টাকা অটো ভাড়া। গেলাম ওর মেসের ওইখানে। দেখা করলাম। ভ্রমণ কাহিনী এইখান থেকেই শুরু।
শোভনের সাথে দেখা হওয়ার পর প্রথম প্রশ্ন "কই যাবি হাঁটতে?" আমি বললাম চল রাগিব রাবেয়া মেডিকেলের দিকে যাই। মদিনা মার্কেট পল্লবী রোড হয়ে করের পাড়া একটা হিন্দু পাড়া দিয়ে কিছু দেবী দুর্গার প্রতিমা মণ্ডপে ভাঙাচুরা অবস্থায় দেখতে দেখতে রাগিব রাবেয়া গেলাম। রাগিব রাবেয়া মেডিকেল এ পৌঁছেই মাগরিবের আজান দিল। শোভনের নাকি আজ প্যান্ট ঠিক আছে। পাক পবিত্র আছে টাই নামাজ পড়বে। আমি মনে করছি এই শীতের সন্ধ্যায় অজু করে আসছে বাসা থেকে তাই নামাজ পড়বে। কিন্তু না সে অজু করে নি। কাদা পানিতে পা ভিজায়ে অজু করতে হইসে। এই ত্যাগ আর পুণ্যের কারণেই মনে হয় আজ মেছ বাঘ আর ঠেকের হাত থেকে বেছে গেছি।
নামাজ পড়ে মেশিনের চা খেলাম। চা টা সেই ছিল। সিলেটের চা সাধারণত খুব বাজে হয়। রং চা হচ্ছে গরম পানির মধ্যে টি ব্যাগ চুবায়ে চুবায়ে খাওয়া। আর দুধ চা হচ্ছে গরম পানিতে কডেন্স মিল্ক গুলায়ে দেয়া। সেই তুলনায় এই চায়ে দই এর একটা টেস্ট পাওয়া গেছে। দাম ১০ টাকা।
চা খেয়ে হাঁটতে হাঁটতে হাজির হলাম গুয়াবাড়ি। শোভন বলল চল এয়ারপোর্ট রোড যাই। রাস্তা চিনি না। সোজা হাঁটা শুরু করলাম। তখন ৬ টার মত বাজে। শোভনের এর মধ্যে ক্ষুধা লাগছে। গুয়াবাড়ি যেয়েই দেখি টিলার উপরে কাউন্সিলরের বাড়ি। দুইজনেই চিন্তা করতেসিলাম কাউন্সিলরকে বাসা থেকে ডেকে এনে খাওন দাওনের ব্যবস্থা করতে বলব কিনা! কাউন্সিলরের বাড়ি টিলার উপরে। উঠাও কষ্ট তাই ওই চিন্তা বাদ। দুই পাশের টিলা। মাঝখানে পিচ ঢালা রাস্তা। আকাশে চাঁদ। কুয়াশা পড়া শুরু হইসে। মানুষজন বেশি একটা নাই। দুই একজন যা বাইকে করে আসা যাওয়া করছিল। প্রত্যেকেই দেখে মনে হচ্ছিল এখনি বলবে "কই থেকে আইসস? যা আছে বাইর কর!" আমি আর শোভন চিন্তা করে বের করলাম এমন অবস্থায় পড়লে হুডি খুলে দিয়ে দিব। আর বলব ভাই আপনাদের বাইকে করে আমাদের মেস এ দিয়ে আসেন। তারপর মাথায় আসল যদি গুম করে। চিন্তা করে বের করলাম ডিপার্টমেন্টের স্যারদের নাম্বার দিয়ে দিব। কাল ভাইভা কেন্সেল। আমি সিউর ফ্রেন্ডরা বলবে মুক্তিপণ দিয়ে আখাউরা দুইটারে বের করার দরকার নাই। বের করলে আবার ভাইভা দেয়া লাগব।
টানা ১ ঘণ্টা হাঁটার পর একটা সাইনবোর্ড পেলাম যেখানে লিখা ডানে এয়ারপোর্ট থানা। সোজা জালালাবাদ থানা। শোভন বলল সোজা চল তাইলে এয়ারপোর্ট যাইতে পারুম। আমি তখন বুঝালাম ওকে আমি পুরান ঢাকায় বড় হইসি। গুলিস্থান দিয়ে ঢুকে বঙ্গভবন দিয়ে বের হইছি। আমার উপর ভরসা রাখ। তঁ ডান দিকেই গেলাম। হাঁটতে হাঁটতে এমন এক রাস্তায় আসলাম। যেখানে দুই পাশে টিলা। আর মাঝখানে প্রচুর গাছ। আমি বললাম একটু পর একটা মেছো বাঘ আসবে। শোভন বলল পিছনে তাকাইস না। সাদা একটা কাপড় রাস্তা পার হবে। অজ্ঞান হওয়ার আগে রাসেল ভাইরে ফোন দেয়া লাগব। কোন মতে রাস্তা পার হলাম। ৫ মিনিটের মত লাগসে। এতক্ষণ পর দুরে দোকানপাটের আলো দেখলাম। সেখানে পৌঁছে দেখি আমরা ঠিক আগের জায়গায় চলে আসছি। শোভন বলল আমি আগেই বলছিলাম সোজা চল। শুনলিনা।
আমি ঠিক বুঝলাম না। এই দুই ঘণ্টা আমরা কোথায় হাঁটলাম। মনে হচ্ছে রাসেল ভাইকেই ফোনে দেয়া লাগবে।
আর কাল ভাইভায় এক্সটারনালকে বলব স্যার আমি টাইম ট্রাভেল বের করে ফেলসি। ঘুরে ফিরে আগের জায়গায় ফিরে আসি কিন্তু সময় চলে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×