somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেভাবে বিন লাদেনকে হত্যা করি :মার্ক ওয়েন !!

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেন হত্যা অভিযানে অংশ নেওয়া মার্কিন নেভি সিলের সদস্য মার্ক ওয়েন বিন লাদেন হত্যার পুরো ঘটনা বর্ণনা করে সম্প্রতি একটি বই লিখেছেন। বিন লাদেন হত্যার স্বীকারোক্তি বর্ণনা করে লেখা এটিই প্রথম কোনো বই। ‘নো ইজি ডে’ নামের বইটিতে তিনি নিজেই গুলি করে বিন লাদেনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ৩৬ বছর বয়সী মার্ক ওয়েন নামের এই লেখকের আসল নাম ম্যাট বিসোনেট। তিনিসহ নেভি সিলের মোট ছয় সদস্য বিন লাদেন হত্যা অভিযানে অংশ নেন। আফগানিস্তানের জালালাবাদ থেকে দুটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারে করে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে এসে তারা এই অভিযান পরিচালনা করেন। বইয়ে ওয়েন লিখেছেন, আমরা আগে থেকে সব ধরনের তথ্য পেয়েই গত বছরের ২ মে অন্ধকার রাতে অভিযানে নামি। বিন লাদেনের বাসভবনে সে ধরনের কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না, এটাও আমরা জানতাম। কিন্তু তারপরও কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই এতটা সহজভাবে অভিযান সম্পন্ন হবে, ভাবতেও পারিনি। যা হোক, অভিযানের সময় একটি হেলিকপ্টার তার বাসভবনের ভেতরে আছড়ে পড়ে। এটি মোটামুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তা দেখে আরেকটি হেলিকপ্টার দ্রুতগতিতে বাসভবনের ছাদে নামানো হয়। ছাদ থেকে চার নেভি সিল সদস্য সবকিছু পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত হেলিকপ্টারটিতে আমি ও আরেক সঙ্গী ছিলাম। আমরা দু’জন দ্রুতগতিতে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠতে থাকি। কারণ আমরা জানতাম দোতলাতেই তিনি থাকতেন। তারপর গুলি চালাতে চালাতে দরজা ভেঙে একটি রুমে ঢুকে পড়ি। সেখানে ঢুকেই এক ব্যক্তিকে তাজা রক্তের ওপর মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি, যাকে ঘিরে কাঁদছে দুই নারী। আমাদের মনে হল, তারা বিন লাদেনের স্ত্রী। পরে লোকটি বিন লাদেন কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য মৃত ব্যক্তির মুখের ওপর থেকে রক্ত সরাতে থাকি। তারপর তার ছবির সঙ্গে চেহারা মেলাতে থাকি। ছবির সঙ্গে চেহারার কিছু মিল খুঁজে পাওয়া গেল।
তারপরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য ওই মহিলাদের জিজ্ঞেস করি, মৃত ব্যক্তিটি কে। তারা অবশ্য তাকে বিন লাদেন বলে পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানান। বুঝতে পারলাম এ দুই নারী মিথ্যে বলছেন। আমরা মৃত ব্যক্তিটির ছবি তুুলে রাখলাম। ডিএনএ সংগ্রহের জন্য তার কিছু রক্তও নিলাম। উরুর একটি অংশও কেটে রাখলাম। কিন্তু আরও নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ তথ্যটি জালালাবাদে আমাদের কমান্ডার অ্যাডমিরাল ম্যাকর্যাভেনকে তাত্ক্ষণিক জানালাম না। কারণ তিনি প্রতি মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে অভিযানের সর্বশেষ খবর জানাচ্ছিলেন। প্রেসিডেন্টের কাছে কোনো ভুল খবর যাক এটা আমরা চাইনি। দোতলারই বারান্দায় সেই সময় কয়েকটি শিশু ভয়ে কাঁপছিল। আমি একটি মেয়েশিশুকে মৃত ব্যক্তির পরিচয় জিজ্ঞেস করি। ওই ব্যক্তি ওসামা বিন লাদেন বলে মেয়েটি জানায়। এই শিশুটি বিন লাদেনেরই মেয়ে। শিশুরা মিথ্যা বলতে পারে না। তাই সেই সময়ই বিন লাদেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর কমান্ডার ম্যাকর্যাভেনকে সঙ্গে সঙ্গে খবরটি জানানো হয়। মার্ক ওয়েন বলেন, খুব আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, বিন লাদেন আত্মরক্ষার কোনো চেষ্টাই করেননি। এমনকি তার রুমে দুটি বন্দুক পাওয়া যায়। কিন্তু বন্দুক দুটিতে বুলেট লোড করা ছিল না। যে লোকটি টুইন টাওয়ার হামলার মতো ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন, যার নির্দেশে অনেক জঙ্গি আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে, সেই লোকটি বিনা প্রতিরোধে মৃত্যুর কাছে নিজেকে সমর্পণ করবেন, সেটা ভাবতেই বেশ অবাক লাগছে। যা হোক, তারপর তার মৃতদেহ হেলিকপ্টারে করে আমরা দ্রুত জালালাবাদের দিকে রওনা হই। আরও অবাক করা বিষয় হচ্ছে, পুরো অভিযান পরিচালনা করতে সময় লেগেছে মাত্র আধা ঘণ্টা। জালালাবাদে পৌঁছার পর হেলিকপ্টার থেকে কম্বলে জড়ানো তার মৃতদেহটি আমিই টেনে একটি ট্রাকে ওঠাই। পরে তা নিয়ে কমান্ডার ম্যাকর্যাভেনের কাছে যাই।
বিন লাদেনের হত্যা অভিযান নিয়ে লেখা এই বই চলতি সপ্তাহেই বাজারে আসার কথা রয়েছে। এদিকে নো ইজি ডে বইয়ের লেখকের বিরুদ্ধে সম্ভবত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে পেন্টাগন। পেন্টাগন দাবি করেছে, ওই বইয়ের লেখক নেভি সিল কমান্ডো সেনাবাহিনীর গোপনীয়তা ভঙ্গ করে চুক্তি লঙ্ঘন করেছেন। ম্যাট ২০০৭ সালে মার্কিন নৌবাহিনীর সঙ্গে গোপনীয়তা সংক্রান্ত দুটি ফরমে সই করেছিলেন। পেন্টাগনের উপদেষ্টা জেন জনসন মার্ক লেখককে এক চিঠিতে জানান, গোপনীয়তা বিষয়ক চুক্তি লঙ্ঘন করায় ওয়েনের বিরুদ্ধে পেন্টাগন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি তারা বিবেচনা করছে। ডেইলি মেইল।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×