somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা কোথায় চলেছি?

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ সকালে (১৭/০৪/২০১৬) খবরের কাগজ খুলে দেখলাম এক মহিলাকে এক বীরপুরুষ বেদম পিটিয়ে জখম করেছে। পেটানোর ছবিও ছাপা হয়েছে। গতকালকের খবরে ছিল এক বাড়িওয়ালী তার ভাড়াটিয়ার তিন বছরের ছেলেকে আছাড় দিয়ে মেরে ফেলেছে।
কিছুদিন আগে তনুকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হলো। তারও আগে সিলেটে রাজনকে সারাদিনভর পেটাতে পেটাতে মেরে ফেলা হলো। আরও অনেক…শিশু অপহরণ, অতঃপর হত্যা। লিখে শেষ করা যাবে না। এরা কারা? কোথায় চলেছি আমরা? বহু বছর আগে স্বৈরাচার এরশাদের শাসনামলে কবি সামসুর রহমান লিখেছিলেন…’এক উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’। সেই উদ্ভট উটের পিঠ থেকে কি আমরা এই স্বদেশকে নামাতে পেরেছি? কত সহজ হয়ে গেছে এই সব হত্যা-ধর্ষণ-অপহরণ, যেন মধ্যযুগের প্রত্যাবর্তন।

সেই বাড়িওয়ালী, তাকে কি আমরা একজন নারী বলতে পারি? সেকি কারো মা হতে পারে, না কারো স্ত্রী? যে পরুষ পিটিয়ে আহত করেছে নারীকে, সে কি পুরুষ। সে তো নপুংশক! আর সেই মহিলা থানায় ডায়রি করতে গেলে পুলিশ মহাশয় তার কাছ থেকে দু’দফায় চার হাজার টাকা আদায় করে নিয়েছে। তিনি কে?

এই সমাজেই পুরুষবেশী দানব আর নারিবেশী দানবী রয়ে গেছে। আর এদের দল ক্রমেই ভারি হচ্ছে।

কি নিষ্ঠুরতা চারিদিকে! আমরা কেউ বুঝতে পারছি না আমরা কোথায় চলেছি। আমি খুব ভাবি…এমন একটা নিষ্ঠুর এবং পশ্চাদপদ সমাজে বাস করে আমরা কি করে বিভিন্ন সময়ে আমাদের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের কথা বলে নানারকম উৎসব পালন করি! একটা সমাজে যখন প্রতিদিন এমন খবর দেখতে হয়, পড়তে হয় এবং তার কোন প্রতিকার হয় না, তখন ভাবতে সত্যিই অবাক লাগে আমরা আদৌ সংস্কৃত সম্পন্ন কি না, সমৃদ্ধ কি না আমাদের ঐতিহ্য ধারনে।

আমরা সম্ভবতঃ কেবল উৎসব প্রেমিক। উৎসব এলে আমরা খুব মুখর হয়ে উঠি। এমন একটি নিষ্ঠুর হৃদয়হীন সমাজে কোন উৎসবের প্রয়োজন নেই।

কোথাও আমরা এক চরম ভুল করে ফেলেছি, যার মুল্য আজ আমাদের দিতে হচ্ছে অত্যন্ত চরমভাবে এবং সম্ভবতঃ আমরা চলেছি এক করুণ সামাজিক অবক্ষয়ের দিকে। আমরা হত্যাকে হত্যা মনে করি না, রক্তকে রক্ত মনে করিনা। একটা শিশুর মুখের দিকে কোনদিন ভাল করে তাকিয়ে দেখি বলে মনে হয় না। একজন নারীকে কেবলই মনে করি ভোগের সামগ্রী, বানিজ্যিক পণ্য! কখনও ভেবে দেখিনা তার জঠরেই বৃদ্ধি পায় আদরে যত্নে প্রতিটি মানুষ নয়টি মাস। সেই নারীর বেদনাক্লিষ্ট প্রসবের কারনে তবেই না আমাদের প্রতিবছরের জন্মদিন উদযাপন।

আমার ঘরের শিশুর কিছুই হয় নি বলেই অন্য শিশুর মৃত্যু আমাদের ছুঁয়ে যায় না। আমরা কি ঐ শিশুকে দেখতে পাই, ঐ নারী ঐ মা’কে দেখতে পাই, আমাদের অন্তরের চোখ দিয়ে! কি স্বার্থপর আমরা! এই সব মানুষরূপী পশু আমাদের সমাজে বেঁচে থাকে কি করে, নির্বিবাদে ঘুরে বেড়ায়! আমরা নির্বাক, শুধু দেখেই চলেছি। আমরা সবাই খুব চরমভাবে ‘আমি’ হয়ে গেছি। আমরা কি আমাদের আত্মাকে মেরে ফেলছি প্রতিদিন! আমরা যেন কিসের পেছনে দৌড়াচ্ছি প্রতিদিন সময়কে মেরে ফেলে, নেশাগ্রস্তের মতো।

শুধুই আর্থিক উন্নয়ন দিয়ে কি হবে, যদি পাশাপাশি সামাজিক আচার আচরণে কোন উন্নতি না হয়। আর তাই যদি না হয়, তাহলে হয়তো ঐ কথাটাই সত্য হবে…অর্থই অনর্থের মূল।

একটা সভ্য-স্বাধীন-সংস্কৃতি সম্পন্ন জাতি কখনোই অন্ধকারের রাজ্যে হারিয়ে যেতে পারে না।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×