somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রিকেট--ভুল থেকে কবে শিখবো!

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্থান-কাল-পাত্র বলে একটি কথা আছে। এটা তিনটি মৌলিক শব্দ মিলে একটি মিশ্র শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। ছোট বেলায় আমরা ব্যাকরণে পড়েছি। এমন কি “এই শব্দের দ্বারা কি বুঝায় তাহা বুঝিয়ে লিখ” জাতীয় প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছি। শিক্ষকরা বলেছেন জীবনে কোন কাজ করার আগে বা বলার আগে এই তিনটি শব্দ মনে রাখবে। আমার ধারনা যারা এই ত্রয়ী শব্দকে মাথায় রেখে কাজ করে বা কথা বলে তাঁরা অনেক ক্ষেত্রেই পাড় পেয়ে যায়। এখন objective যুগে বাংলা ব্যাকরণ আর তেমন করে পড়ানো হয় কি না জানি না। তেমন উপদেশও আর দেওয়া হয় বলে মনে হয় না। বিশেষ করে আমাদের ক্রিকেটাররা এই মিশ্র শব্দটি সম্বন্ধে ওয়াকেবহাল আছে বলে একেবারেই মনে হয় না।

এই লেখাটা লিখছি আমাদের মাহমুদউল্লাহ্ সাহেবের গতকালের আউট হওয়া দেখে। দিনের শেষ বল, তিনি সুইপ করতে চাইলেন চার মারার জন্য। কেন? জবাব বেশ কয়েকটা দেওয়া যেতে পারে কিন্তু আসল কথা হলো তিনি এই মিশ্র শব্দটির ব্যাপারে একেবারেই অজ্ঞ বুঝা গেল। এখানে স্থান আর পাত্র জরুরী নয় কিন্তু “কাল” শব্দটি খুবই জরুরী ছিল। অর্থাৎ সময়। দুটো জবাব দেয়া যেতে পারে...তিনি অস্থির চিত্তে একটা চার মেরে তার অর্ধ শতক পূর্ণ করতে চেয়েছেন অথবা দিনের শেষটা চার মেরে শেষ করতে চেয়েছেন। কত বড় দায়িত্বহীন হলে একজন ক্রিকেটার এমন ভুলটি করতে পারেন! তিনি কি শুধু নিজেকেই দেখলেন? দল কিংবা দেশ কিছুই দেখলেন না! ক্রিকেটাররা প্রায়ই বলেন ভুল থেকেই আমরা শিখবো। কিন্তু কবে শিখবেন? মাহমুদউল্লাহ্ এই রকম ভুল আগেও করেছেন। গত টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে আমাদের ৪ বলে ৩ রান দরকার। তিনি ছক্কা মেরে জিতবেন বলে শর্ট রান না নিয়ে সেই ছক্কা মারতে গিয়ে নিজেকে হারিয়েছেন এবং দেশকেও ডুবিয়েছেন। কি ভয়াবহ দুঃখ সেদিন এই জাতী পেয়েছিল আজও মনে হলে বিমর্ষ হয়ে পড়ি। সেখানেও তিনি কাল বা মুহূর্তকে মনে রাখেন নি।

এই সেদিন চট্টগ্রাম টেস্টেও দ্বিতীয় ইনিংসে তার আউট হওয়াটাও ছিল অপ্রত্যাশিত। সেই ম্যাচে তিনি যে বলটায় আউট হয়েছিলেন সেই বলটাকে ক্রিকেটের ভাষায় বলা যায়...well outside of the off stamp and flighted. তাই যদি হয় তাহলে তিনি সেই বলটাকে খেলতে গেলেন কেন? একটা টেস্ট ম্যাচে ঐ পরিস্থিতিতে বলটাকে তো ছেড়ে দেওয়ার কথা। আসলে তার বুদ্ধি মাথার চেয়ে হাঁটুতে বেশী। তিনি senseless mistake কতবার করবেন? সাকিবও একই কাজ করলেন। অফ স্ট্যাম্পের এতো বাইরের বল, যেটা ওয়ান-ডে ম্যাচ হলে wide হতো, সেটাকে তিনি মারতে গিয়ে আউট হলেন। টেস্ট ম্যাচে যেমন লোভের কোন জায়গা নেই, বোকামিরও। এভাবে আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অনেক ম্যাচকে জলাঞ্জলি দিয়েছি। শুধু বুদ্ধির অভাবে। শুধু অস্ত্র হলেই যেমন যুদ্ধে জয়ী হওয়া যায়না, বুদ্ধির প্রয়োজন পড়ে, তেমনি খেলাতেও শুধু skill বা দক্ষতা থাকলেই হয় না, বুদ্ধিরও প্রয়োজন আছে। আমরা অনেক আগে থেকেই জানি, টেস্ট খেলা হচ্ছে…kill the time and get the runs. যা করতে গেলে অসীম ধৈর্যের প্রয়োজন। অনেকেই হয়তো বলবেন, বিশেষ করে যারা আবেগ নিয়ে চলেন, মাহমুদউল্লাহ্ রান তো খারাপ করে নাই! ঠিক, কিন্তু তিনি কি সময়কে পরাস্ত করতে পেরেছেন? টেস্ট ম্যাচে তো ৮২ স্ট্রাইকিং রেট দরকার নাই, আমার দরকার ৮২ মিনিট। তাছাড়া টেস্ট ম্যাচে দিন শেষের উইকেট সবসময়ই বিপক্ষের অনুকুলে চলে যায়। দিনের শেষ বলে স্যুইপ, ভাবতেও অবাক লাগে! মাহমুদউল্লাহ্র দায়িত্বহীন আউট হওয়াটাই আমাদের জন্য কাল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে যথেষ্ট, যখন আমাদের tail end-এ হাল ধরার মতো ব্যাটসম্যান নেই। ওদিকে ইংল্যান্ডের বলতে গেলে ১১ জনই ব্যাট করতে পারে। আক্ষেপ করে আর কতদিন কাটাবো?

অনেক আগে ভারতের একটা স্বভাব ছিল, ব্যাটিং লাইন যখন ভাংতো তখন হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়তো। এখন আমাদের হয়েছে সেই দশা! কেবলই হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ছে। কাকে যে ভাল বলবো বুঝতে পারছি না, একমাত্র ওপেনিং জুটি ছাড়া।

ভুল থেকেই তো মানুষ শেখে, কিন্তু যদি না শেখে!!!!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×