প্রবাসী সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মিথ্যাচারের প্রতিবাদে ফেনীতে আজ মানববন্ধন ও তার কুশ পুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে। ফেনীর পতিত গডফাদার ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী জয়নাল হাজারী কর্তৃক নির্যাতিত ক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা এই কর্মসূচি পালন করেন। আজ দুপুরে ফেনী প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। একই দিন সকালে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে
ফেনী প্রেসক্লাব কার্যকরী পরিষদের সভায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে ফেনীর সমালোচিত পতিত গডফাদার জয়নাল হাজারী তার আত্মজীবনীমূলক একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রবাসী সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তার বক্তব্যে কুখ্যাত সন্ত্রাসী জয়নাল হাজারীর বন্দনা করে হাজারীকে সন্ত্রাসী বলা যাবে না, যারা বলেন তাদের বলা বন্ধ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন। তার এই বক্তব্য নিয়ে ফেনীতে প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
জয়নাল হাজারী ও তার বাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত ব্যক্তিদের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ফেনীর দেড় শতাধিক খুনের মহানায়ক, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এবং সাংবাদিক নির্যাতনকারী হিসেবে জয়নাল হাজারী জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তারা জয়নাল হাজারীর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থকে মিথ্যাচারের ডায়েরি উল্লেখ করেন। গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনের জন্য জাতীয় প্রেসক্লাবে সুযোগ পাওয়ায় তারা দুঃখ প্রকাশ করেন। নির্যাতিত ব্যক্তিরা বলেন, জয়নাল হাজারীর পক্ষে বক্তব্য দিয়ে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী নিজের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। তারা গাফ্ফার চৌধুরীকে প্রথিতযশার পরিবর্তে পতিতদশা সাংবাদিক উল্লেখ করে তাকে অর্থলোভী, কলম বিক্রেতা, মানসিক বিকাশগ্রস্ত এবং অতিথি পাখি হিসেবে অভিহিত করেন।
এদিকে, ফেনী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বখতেয়ার ইসলাম মুন্নার স্বাক্ষরিতএক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে জয়নাল হাজারী তার আত্মজীবনীমূলক একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। এ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তার বক্তব্যে মিথ্যাচার করেছেন। তিনি ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক কর্মকর্তা টিপু সুলতানের উপর জয়নাল হাজারীর নির্যাতনের ঘটনাকে অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেছেন ও তা অস্বীকার করেছেন। তার এ বক্তব্যে ফেনী সাংবাদিক সমাজ হতবাক, বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তার এ মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে ফেনী প্রেসক্লাব কার্যকরী পরিষদের এক জরুরি সভায় ঘৃণা, ধিক্কার ও নিন্দা জানানো হয়। এ কে এম আবদুর রহীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ক্লাব কর্মকর্তা ও সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।
প্রসঙ্গতঃ ফেনীর পতিত গডফাদার জয়নাল হাজারী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক ফেনী বার্তার পত্রিকা সম্পাদক মীর হোসেন মিরু, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম শারীরিকভাবে নির্যাতিত হন। দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার জেলা সংবাদদাতা ওছমান হারুন মাহমুদ এর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এবং বার্তা সংস্থা ইউএনবির জেলা প্রতিনিধি বখতেয়ার ইসলাম মুন্নার বাসায় একাধিক বার বোমা হামলা চালানো হয়। ফেনী প্রেসক্লাবে সাপ্তাহিক ফেনী সংবাদ পত্রিকার প্রকাশনা অনুষ্ঠানে একই বাহিনী কর্তৃক বোমা হামলা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকা ফেনীতে নিষিদ্ধ করা হয় এবং পত্রিকা দুটিতে আগুন দেয়া হয়।