বিডিন্যাশনাল নিউজ ডটকম-শিগগিরই চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে আগামী ২০১০-১১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছেন। জাতীয় সংসদে বাজেটের উপর আলোচনা চলছে। দেশের সেমিনার, আলোচনা আর বিজ্ঞদের রোজনামচায় এখন বাজেটের আলোচনা। বাজেটের সুফল-কুফল নিয়ে হিসাব কষছেন তারা। কিন্তু দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ, যাদের জন্য এই বাজেট তারা এর সম্পর্কে কিছুই জানে না।
বাজেট আসলেই ব্যাপক উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দেখা যায় ব্যবসায়ী মহলে। কোন পণ্যের দাম কমলো-বাড়লো এই হিসাব মেলাতে তারা মরিয়া। এক্ষেত্রে বেড়ে যায় অসাধু ব্যবসায়ীদের দৈরাত্য।
আগামী অর্থবছরের জন্য এক লাখ ৩২ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বলছে, প্রস্তাবিত বাজেট উচ্চাভিলাসী নয়। তবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে বর্তমান উন্নয়ন ব্যবস্থাপনাকে আরো দক্ষ ও শক্তিশালী করতে হবে। করজাল বৃদ্ধি ইতিবাচক পদক্ষেপ, করের টাকায় রাজস্ব যোগানোর পরিকল্পনা প্রশংসনীয়। সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়ণও ইতিবাচক। তবে বাস্তবায়ন যোগ্য প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকায় নেতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
বাজেট বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দেশের জনসংখ্যা ও প্রয়োজনের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেট বড় নয়, তবে এর বাস্তবায়ন সক্ষমতার বিষয়ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ হবে না। এটা সাড়ে ৫ ও ৬ এর মাঝামাঝি হতে পারে। একই সাথে বর্তমান উন্নয়ন ব্যবস্থাপনায় আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত ৬ দশমিক ৭ শতাশং জিডিপি অর্জনও কঠিন হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুত, অবকাঠামো ও কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় শিল্পের সংরণ এবং রপ্তানি খাতকে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য যা করার সেটাও মোটামুটি করা হয়েছে। রাজস্ব আদায়ে করের আওতা বাড়ানোর উদ্যোগও রয়েছে।
জাতীয় বাজেটের এতসব আলোচনার ভীড়ে বড় বিষয়টি সব সময় বাদ পড়ে যায়। আমাদের প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, জাতীয় আয় বাড়ছে, মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ বাড়ছে। অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো- সমাজে বিরাজমান বৈষম্যও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। প্রবৃদ্ধির সুষম বন্টন হচ্ছে না। এবারও বাজেট প্রস্তাবের পর আলোচনা-পর্যালোচনায় এই বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রবৃদ্ধির সুফল ভোগ করতে হলে সমাজে বিরাজমান বৈষম্য কমাতে হবে।
দিনের পর দিন বাড়তে থাকা ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য সমাজে বিরাজমান থাকলে বড় অঙ্কের বাজেট কোন সুফল আনবে না। তাই আমাদের প্রত্যাশা, বাজেটের সুফল সমাজের সর্বস্তরে পৌছানোর কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হবে। বাজেট হবে দারিদ্র নির্মূলের রূপরেখা।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০১০ রাত ৮:৩৪