somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী.
আমি সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী জন্ম চট্টগ্রামে। জীবিকার প্রয়োজনে একসময় প্রবাসী ছিলাম।প্রবাসের সেই কঠিন সময়ে লেখেলেখির হাতেখড়ি। গল্প, কবিতা, সাহিত্যের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলা পত্রিকায়ও নিয়মিত কলামও লিখেছি। shakawatarticle.blogspot.com/

যুব শক্তিকে দক্ষতায় রূপান্তরই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি

১৪ ই জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজকের বিশ্বে দ্রুত পরিবর্তনই একমাত্র ধ্রুবক। প্রযুক্তি, অর্থনীতি, এবং সামাজিক কাঠামো প্রতিনিয়তই নতুন রূপ নিচ্ছে। এই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হলো যুব সমাজ। যেকোনো দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তারুণ্যের মেধা, উদ্ভাবনী শক্তি এবং কর্মদক্ষতার ওপর। ২০২৫ সালের বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবসের (World Youth Skills Day) প্রতিপাদ্য, "Youth Skills for Peace and Resilience: Empowering the Next Generation" (অর্থ: “শান্তি ও সহনশীলতার জন্য যুব দক্ষতা: আগামী প্রজন্মকে ক্ষমতায়ন”), এই বার্তাই বহন করে। এটি স্পষ্ট করে যে, যুবদের কর্মদক্ষতা, সহনশীলতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলির সমন্বয়ই একটি উন্নত, শান্তিপূর্ণ ও টেকসই বিশ্ব গড়তে পারে। এই প্রবন্ধে আমরা যুব শক্তিকে দক্ষতায় রূপান্তরের গুরুত্ব, এর বিভিন্ন দিক, এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস: একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও এর তাৎপর্য
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৫ জুলাই দিনটিকে বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এই দিবস পালনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিশ্বজুড়ে যুবকদের দক্ষতা উন্নয়নের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অর্জনে যুবদের ভূমিকা সুসংহত করা, কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের (TVET) গুরুত্ব তুলে ধরা এবং তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান ও উদ্ভাবনের পথ সুগম করা।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী যুবকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ (প্রায় ১৬ শতাংশ) হয় বেকার অথবা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ থেকে বিচ্ছিন্ন। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই হার আরও বেশি, যা একটি বড় বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুবকদের মধ্যে বাস্তবভিত্তিক এবং বাজার-চাহিদাভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য, "শান্তি ও সহনশীলতার জন্য যুব দক্ষতা", বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খুবই প্রাসঙ্গিক। এটি মনে করিয়ে দেয় যে, কেবল প্রযুক্তিগত বা অর্থনৈতিক জ্ঞানই যথেষ্ট নয়; সমাজে শান্তি ও স্থায়িত্ব বজায় রাখতে সামাজিক ও মানসিক দক্ষতাও সমানভাবে প্রয়োজন।
কর্মদক্ষতা: আধুনিক কর্মজীবনের ভিত্তি
আধুনিক কর্মবাজারে টিকে থাকতে হলে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকাই যথেষ্ট নয়। নিয়োগকর্তারা এখন প্রার্থীর বাস্তবভিত্তিক দক্ষতা ও ব্যবহারিক জ্ঞানকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেন।
ডিজিটাল দক্ষতা: বর্তমান যুগ ডিজিটাল। গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO), কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মতো দক্ষতাগুলো প্রতিটি সেক্টরেই অপরিহার্য। এই দক্ষতাগুলো যুবকদের জন্য বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে।
কারিগরি দক্ষতা: ইলেকট্রিক্যাল কাজ, প্লাম্বিং, মেশিন অপারেশন, অটোমোবাইল মেকানিক্স, কৃষিভিত্তিক আধুনিক প্রযুক্তি—এসব কারিগরি দক্ষতা দেশের অর্থনীতিতে সরাসরি অবদান রাখে। এই দক্ষতাগুলো কেবল চাকরির সুযোগ তৈরি করে না, বরং আত্মকর্মসংস্থানের পথও খুলে দেয়।
সৃজনশীলতা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা: যেকোনো সমস্যা সমাধানে সৃজনশীল ও দক্ষ জনবল সবচেয়ে বেশি মূল্যায়িত হয়। নতুন পরিস্থিতিতে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া এবং উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষমতা একটি মূল্যবান সম্পদ।
যোগাযোগ ও নেতৃত্বগুণ: দলগত কাজ, প্রেজেন্টেশন, ক্লায়েন্ট হ্যান্ডলিং ও কার্যকরভাবে মতামত প্রকাশের জন্য শক্তিশালী যোগাযোগ দক্ষতা অপরিহার্য। পাশাপাশি, নেতৃত্বগুণ মানুষকে অন্যদের প্রভাবিত করতে এবং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উদ্বুদ্ধ করতে সাহায্য করে।
এই দক্ষতাগুলো অর্জনের মাধ্যমে যুব সমাজ কেবল আর্থিকভাবেই স্বাবলম্বী হয় না, বরং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের দূত হিসেবেও ভূমিকা রাখে।
সহনশীলতা: শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে অপরিহার্য গুণ
বর্তমানে সামাজিক বিভাজন, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, রাজনৈতিক সহিংসতা ও মতবিরোধ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সহনশীলতা একটি জরুরি মানবিক ও সামাজিক গুণ হিসেবে বিবেচিত। সহনশীলতা মানে হলো ভিন্নমত, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন বিশ্বাস এবং ভিন্ন জীবনযাত্রার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও গ্রহণ করার ক্ষমতা।
যুব সমাজ যদি ছোটবেলা থেকেই ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, মানবিক মূল্যবোধ চর্চা করে, তবে সমাজে বিদ্যমান সহিংসতা ও বিভাজন কমে গিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। সহনশীলতার জন্য প্রয়োজন:
মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান: অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা, এমনকি যদি সেটি নিজের মতের বিপরীত হয়।
দলগত কাজের মাধ্যমে দায়িত্ব ভাগাভাগি: সম্মিলিতভাবে কাজ করার মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহমর্মিতা তৈরি হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মূল্যবোধভিত্তিক শিক্ষা: পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সামাজিক মূল্যবোধ শেখানো।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নৈতিক ব্যবহার: ভুল তথ্য ছড়ানো, বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করা বা গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকা এবং সহনশীলতার বার্তা প্রচার করা।
একজন সহনশীল যুবক হতে পারে একজন প্রভাবশালী সমাজনেতা, যিনি শুধু তার কর্মক্ষেত্রেই নয়, পরিবার, কমিউনিটি এবং বৃহত্তর সমাজে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারবেন।
নেতৃত্ব: তরুণরাই আগামীর পথপ্রদর্শক
নেতৃত্ব কেবল কোনো পদে অধিষ্ঠিত হওয়া নয়, বরং এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গি। নিজে কিছু করার, অন্যকে উদ্বুদ্ধ করার, কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবার, ও দায়িত্ব নেওয়ার মনোভাবই হলো নেতৃত্বগুণ। একজন প্রকৃত তরুণ নেতা তার ব্যক্তিগত দক্ষতা, সততা ও দূরদর্শিতা দিয়ে অন্যদের পথ দেখান।
একজন প্রকৃত তরুণ নেতা:
নিজের দক্ষতা দিয়ে অন্যদের সহায়তা করেন: অন্যদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেন।
ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেন: ভুল থেকে শিখতে পিছপা হন না এবং নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন।
নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেন: সমাজের প্রয়োজন অনুসারে উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
দায়িত্বশীলতা বজায় রাখেন: শুধু কাজের সাফল্য নয়, কাজের সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কেও সচেতন থাকেন।
যুবদের মাঝে নেতৃত্বগুণ গড়ে তোলার জন্য দরকার সঠিক প্ল্যাটফর্ম এবং প্রশিক্ষণ:
বিতর্ক প্রতিযোগিতা, স্কাউটস, যুব ক্লাব: এই ধরনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তরুণরা নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে এবং দলগতভাবে কাজ করতে শেখে।
সমস্যা সমাধান প্রতিযোগিতা: এটি তাদের বিশ্লেষণাত্মক ক্ষমতা এবং উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা বৃদ্ধি করে।
যোগাযোগ ও নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ: কর্মশালা ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের নেতৃত্বের দক্ষতাগুলোকে আরও শাণিত করা যায়।
নেতৃত্বগুণসম্পন্ন যুব সমাজই পারে দুর্যোগ মোকাবিলা, উদ্ভাবন, এবং জাতির সামগ্রিক অগ্রগতির রূপরেখা তৈরি করতে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যুব শক্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন
বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’-এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ (গড় বয়স প্রায় ২৭ বছর) ১৫-৩৫ বছর বয়সী যুবকদের নিয়ে গঠিত। এই বিপুল মানবসম্পদকে যদি সঠিক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা দিয়ে গড়ে তোলা যায়, তাহলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে।
সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ:
বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা যুবকদের দক্ষতা উন্নয়নে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে:
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও টিটিসি (Technical Training Centre): কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলো সারা দেশে বিভিন্ন ট্রেডে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে।
LICT প্রকল্প: Leveraging ICT for Growth, Employment and Governance (LICT) প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণদের আইসিটি দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
ইনোভেশন হাব ও স্টার্টআপ বাংলাদেশ: তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ইনোভেশন হাব ও স্টার্টআপ বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্মগুলো নতুন ব্যবসার ধারণা বাস্তবায়নে সহায়তা করছে।
স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম: বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে নানা ধরনের দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে।
উদ্যোক্তা মেলা ও ই-কমার্স প্রশিক্ষণ: যুবকদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মেলা ও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে যুবকদের দক্ষতা উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তাদের মধ্যে নেতৃত্বগুণের বিকাশ সম্ভব হচ্ছে।
দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয়
যুবকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ব্যক্তিগত উদ্যোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সমাজ ও পরিবারের সমন্বিত ভূমিকা জরুরি।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে:
অনলাইন কোর্স: Udemy, Coursera, Google Skillshop-এর মতো আন্তর্জাতিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে অসংখ্য দক্ষতাভিত্তিক কোর্স পাওয়া যায়। নিজেদের পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী কোর্স বেছে নেওয়া যেতে পারে।
আত্ম-উন্নয়ন: নিয়মিত বই পড়া, ব্লগ লেখা, পডকাস্ট শোনা এবং সৃজনশীল কাজে যুক্ত হওয়া ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
প্ল্যাটফর্ম তৈরি: ইউটিউব বা ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নিজের দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যায়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে:
কর্মমুখী শিক্ষার প্রসার: শুধু তত্ত্বীয় নয়, ব্যবহারিক ও কর্মমুখী শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। পাঠ্যক্রমে এমন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যা শিক্ষার্থীদের বাস্তব জগতের জন্য প্রস্তুত করে।
প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস ও ইন্টার্নশিপ: শিক্ষার্থীদের জন্য শিল্প ও কর্পোরেট সেক্টরে ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করা।
বিতর্ক, প্রেজেন্টেশন ও নেতৃত্বের প্রশিক্ষণ: ক্লাসরুমে বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রেজেন্টেশন এবং নেতৃত্বের প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস ও যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ানো।
সমাজ ও পরিবারে:
পরিবারের সমর্থন ও উৎসাহ: পরিবারের উচিত তরুণদের নতুন কিছু শিখতে বা তাদের পছন্দের পেশায় আগ্রহী হতে সমর্থন ও উৎসাহ দেওয়া।
যুব ক্লাব ও সামাজিক সংগঠন: যুব ক্লাব এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা তরুণদের মধ্যে সামাজিক সচেতনতা ও নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশে সহায়তা করে।
সফল তরুণদের রোল মডেল: সমাজে সফল তরুণদের গল্প তুলে ধরা এবং তাদের রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা অন্যদের অনুপ্রাণিত করে।
প্রযুক্তির যুগে যুবদের সুযোগ
বর্তমান সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), অটোমেশন, বিগ ডেটা এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ের যুগ। এই প্রযুক্তিনির্ভর যুগে টিকে থাকতে এবং সফল হতে হলে যুবকদের নির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা অর্জন করা আবশ্যিক।
চাহিদাসম্পন্ন দক্ষতা:
AI ও মেশিন লার্নিং: এটি এখন সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল এবং চাহিদাসম্পন্ন ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও অ্যাপ বিল্ডিং: মোবাইল এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার দক্ষতা সর্বদা উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন।
ডিজিটাল মার্কেটিং ও SEO: অনলাইন মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন এবং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এখন প্রতিটি ব্যবসার জন্য অপরিহার্য।
UI/UX ডিজাইন: ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস এবং চমৎকার ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার দক্ষতা।
ফ্রিল্যান্সিং ও রিমোট জব প্ল্যাটফর্মস: আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার ডট কমের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে ঘরে বসেই আন্তর্জাতিক কাজ করার সুযোগ।
যারা এখন থেকেই এসব দক্ষতা অর্জন করতে শুরু করবে, ভবিষ্যতে তারাই সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন এবং সফল হবে। এই দক্ষতাগুলো কেবল দেশের অভ্যন্তরেই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও কর্মসংস্থানের বিশাল সুযোগ তৈরি করে।
শেষ কথা
“যুব শক্তিকে দক্ষতায় রূপান্তরই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি” — এই কথাটি নিছক কোনো স্লোগান নয়, বরং এটি একটি বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি। একটি দেশ তখনই এগিয়ে যায়, যখন তার তরুণ প্রজন্ম দক্ষ, শিক্ষিত, উদ্ভাবনী এবং মানবিক হয়।
২০২৫ সালের বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস আমাদের সামনে নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে—যুবদের কর্মদক্ষতা, সহনশীলতা ও নেতৃত্বগুণ যদি একত্রে বিকশিত হয়, তবে আমরা একটি সুশৃঙ্খল, শান্তিপূর্ণ ও উন্নত সমাজ গড়ে তুলতে পারব। আজকের দক্ষ, উদ্ভাবনী ও মানবিক যুবকরাই আগামী দিনের দেশ ও জাতির রূপকার। তাই যুবদের জন্য শুধু শিক্ষার সুযোগ নয়, প্রয়োজন দক্ষতা ও নেতৃত্ব গঠনের বাস্তবমুখী পরিবেশ। তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করা এবং তাদের সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ করে দেওয়া আমাদের সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব। এর মাধ্যমেই আমরা একটি উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে সক্ষম হব।

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
লেখক গবেষক ও সমাজ বিশ্লেষক
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:৩৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×