somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাখাওয়াত হোসেন  বাবন
ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে "আমার কবিতা নামে" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

শহরের রাস্তায় দুর্ঘটনা,তীব্র জ্যাম,জ্যামের কারণ ও পরিত্রাণের উপায়

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দ্রুত বেড়ে চলেছে ঢাকা শহরের জনসংখ্যা । সেই সাথে বাড়ছে যান বাহনের সংখ্যা। লক্করজক্কড় ছাল-বাকল উঠে যাওয়া বাস, ট্রাক, সিএনজি,মোটর সাইকেল সব চলছে পাড়া মহল্লার সড়ক থেকে শুরু করে মহাসড়কে । কোনটার ফিটনেস নেই তো কোনটার লাইসেন্স নেই। মানুষ ও যানবাহনের চাপে ধীরে ধীরে ঢাকা নগরী পরিণত হচ্ছে গাড়ীর জ্যাং বা ভাগাড়ের নগরীতে ।

সেই সাথে ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিদিন রাস্তায় ভোগান্তী বাড়ছে । তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ জ্যামের। তার উপড় আছে ভিআইপি নামের মহাপুরুষদের গাড়ী চলাচলের জন্য আলগা চাপ । যেদিন তাদের মুভমেন্ট থাকে সেদিন সাধরাণ জনগনের ভোগান্তীর আর শেষ থাকে না । সেই চাপ মোকাবেলা করে জ্যামের সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সঠিক সময় গন্তব্যে পৌঁছান খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। আমি নিজেও প্রতিদিন মাত্র বারো কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার জন্য দুই ঘন্টা সময় হাতে নিয়ে বের হই ।

ট্রাফিক পুলিশ বা অফিসারদের ই বা দোষ দিয়ে কি লাভ । সীমিত রাস্তায় এতো বেশি গাড়ি কন্ট্রোল করা চাট্রি খানিক কথা না । পৃথিবীর আর কোথাও মনে হয় না একই রাস্তায় একই সময়ে, এতো ভ্যারাইটি ধরনের গাড়ি চলে । সাইকেল,ঠেলাগাড়ি থেকে শুরু করে ট্রাক্টর সবই চলছে রাস্তায় । কারো কিছু করার নেই । তাই ট্রাফিকদের আর দোষ দিয়ে লাভ নেই ।

আগে ঢাকা শহরে দিনের বেলায় রাস্তায় ট্রাক দেখা যেতো না। অনুমতি ছিলো না । এখন দিনের বেলাতেই ট্রাক নেমে পরে রাস্তায় । কখনো মামলা খেয়ে আবার কখনো ম্যানেজ করে ঠিক ই পৌঁছে যায় গন্তব্যে । "সাধে কি আর লোকে ফোনে বলে, এই দেশে টাকা থাকলে সব করা যায় ।?" তবে দু:খের বিষয় এ দেশে বসবাস করা সাধারণ জনগনের কাছে টাকা নেই । আগে যাদের ব্যাংকে কিছু জমানো ছিলো সেটাও করোনার কারণে ভেঙ্গে খাওয়া শেষ হয়ে গেছে। এসব লিখতে গেলে তো আরেকটি বছর শেষ হয়ে যাবে । আমার আজকের বিষয় - ঢাকা শহরে মোটরসাইকেল ও মোটর রিকশার অত্যাচার, শহরের রাস্তায় দুর্ঘটনা, তীব্র জ্যাম,জ্যামের কারণ ও পরিত্রাণের উপায় ।

প্রথমেই বলি, নিয়ম, নীতি আইনের তোয়াক্কা না করায় ইদানীং মোটরসাইকেল আর মোটর রিকসা ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরগুলোর জ্যামের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । কিছুদিন পূর্বে খুলনায় গিয়েছিলাম । সেখানে দেখলাম মোটর রিকসার যন্ত্রনায় অস্থির হয়ে জেলা প্রশাসক শহরে মোটর রিকসা নিষিদ্ধ করেছিলেন, ফলে খুলনা শহর থেকে রাতারাতি জ্যাম কমে গেছে ।

আমি ভেবে পাইনা, দু চাকার যান মোটরসাইকেল কি করে যাত্রী পরিবহনের অনুমতি পায়। নাগরিকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে অনুমতি দেওয়া হলেও সেটাই এখন জ্যাম ও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । যাত্রী ধরার জন্য রাস্তার মোড়ে মোড়ে মোটরসাইকেল চালকদের ঝটলা এখন চোখে পড়ার মতো । মোটর সাইকেলগুলোর নেম-প্লেটের দিকে তাকালে দেখা যায়, কোনটা বগুড়া,কোনটা নওগাঁ, কোনটা বরগুনা , কোনটা রাজশাহীসহ বাংলাদের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রেজিস্ট্রেশন করা ।

অর্থাৎ বর্তমানে যারা ঢাকা শহরে রাইড শেয়ার করে অর্থ উপার্জন করছেন তাদের বেশির ভাগই ঢাকার বাহির থেকে আসা । শুধুমাত্র মোটরসাইকেল চালাবার উদ্দেশ্যেই তারা শহরে এসেছেন । যে কোন পরিশ্রমের কাজের চেয়ে যেহেতু এ পেশায় পরিশ্রম কম সেহেতু ধার দেনা করে একটা মোটরসাইকেল কিনেই তারা রওনা হচ্ছেন শহরের দিকে । ব্যস্ত শহরের রাস্তায় চালাবার অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রায়:শই ঘটছে দুর্ঘটনা । আজ সকালেও একজন মারা গেছেন মোটরসাইকেল এর আঘাতে । আমার মনে হয় এখন সময় এসেছে বিষয়টি নিয়ে ভাববার । দ্রুত লাগাম টেনে ধরতে না পারলে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে যাবে ।

ঢাকা শহরের দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে অনেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আলোচনার টেবিলে অংশগ্রহণ করে বড় বড় বক্তব্য দিলেও কাজের কাজ কিচ্ছু হয়নি । বড় বড় কথা আর অনেক অনেক প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সব সীমাবব্ধ হয়ে থাকে। নিয়ম কানুন মানার ব্যাপারে আমরা সবাই বড্ড বেশি উদাসীন ।


মোটর চালিত রিকসার কথা না হয় বাদ ই দিলাম । এ নিয়ে অনেক লিখেছি লাভ হয়নি । শহরের মেয়রগন প্রকাশ্য ঘোষুনা দিয়েও মোটর চালিত রিকসা বন্ধ করতে পারেন নাই । কারণ এ দেশে রিকসাচালক প্রেমিকদের সংখ্যায় ও কম না । কিছু বললেই তারা ঝাপিয়ে পরে । আবার রিকসাচালকেরা পুলিশকে ম্যানেজ করে তারা ঠিক ই রাস্তায় চলছে । শুরুতে বিষয়টা মানবিক থাকলেও এখন আর মানবিক নেই । হয়ে দাড়িয়েছে বিরক্তির কারণ । কারণ মোটর চালিত হওয়ায় এখন তারা অন্য যান্ত্রিক পরিবহনের সাথে পাল্লা দিয়ে চালাতে গিয়ে প্রতিদিন ঘটাচ্ছে দুর্ঘটনা ।

ঢাকা শহরের রাস্তায় এখন নাকি টাকা উড়ে । রিকসা নিয়ে বের হলে সেই টাকা ধরা যায় । একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অন্যদিকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রতিদিন গন্তব্যে আসতে আর যেতে নাগরিকদের অবস্থা টাইট । বিরক্তির চুড়ান্তে পর্যায়ে পৌছে এক একজন মানব বোমায় পরিণত হচ্ছে । দ্রুত কমে যাচ্ছে সকলের ধৈর্য ।শক্তি। সবকিছু মিলিয়ে যদি বিস্ফোরণ ঘটে তাহলে আর কিছু করার থাকবে না ।

আসুন দেখে নেই ঢাকা শহরের দুর্ঘটনা ও জ্যামের কারণগুলো কি কি । যদি রোগের উপসর্গ জানা থাকলে চিকিৎসা করাও সহজ হবে ।

১. একই রাস্তায় ভ্যারাইটিস যানবাহন চলাচল দুর্ঘটনা ও জ্যামের অন্যতম কারণ ।
২. ভাড়ি ও হালকা যান বাহনের পথে রিকশা,ভ্যান,সাইকেল চলাচল করা
৩. রাস্তার যত্রতত্র ভাঙ্গাচোরা ও গর্ত থাকা , ম্যান হোলের ঢাকনা চুরি হয়ে যাওয়া
৪. ভিআইপিদের জন্য অফিস আওয়ারে ও অফিস ছুটির সময় রাস্তা বন্ধ করে রাখা ।
৫. বাসগুলোর ফিটনেস না থাকায় যত্রতত্র নষ্ট হয়ে পথ রোধ করে দাড়িয়ে থাকা ।
৬. পাল্লা দিয়ে বাসগুলোর চলাচল করা ।
৭.বিভিন্ন কোম্পানির কার্ভাড ভ্যান ও সিএনজিগুলোর অপতিরোধ্য মনোভাব
৮. যত্রতত্র থেমে যাত্রী উঠানো নামানো ।
৯. অনবিজ্ঞ,অদক্ষ, চালকদের দিয়ে যানবাহন পরিচালনা করা ।
১০.মোটর সাইকেল এর দৌড়ত্ব বৃদ্ধি ।
১১.রিকসায় মোটর সংযোগ
১২.যত্রতত্র থামিয়ে ট্রাফিক পুলি্শের মামলা করার প্রবণতা ।

আমার মনে, উল্লেখিত বিষয়গুলোতে নিয়ন্ত্রন করা গেলে দুর্ঘটনা এবং জ্যাম অনকটাই কমিয়ে আনা যাবে ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২৫
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×