somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাকিল আহমেদ২৪
আমাকে চিরকাল মনে রাখার মতো কোনো উপযুক্ত কারণ আমি কখনোই হতে পারিনি,তবে সমকালীন অসংখ্য কারণ আমি কমবেশি সকলেরই হয়েছি। আমাকে অনন্তকাল ধরে ভালোবেসে আগলে রাখার মতো একটি মানুষও আমি পাইনি! তবে স্বল্প আবেগে নিস্বপবিত হয়ে ভালোবাসি ভালোবাসি বলে যাওয়া মানুষের অভ

সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান পর্ব (৩)

১৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সুলতান মাহমুদ ভারতে ১৭ বার অভিযানে সময় নিয়েছেন ২৭ বছর। লাগাতার এত বছর অভিযান চালানো বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। লক্ষ করার বিষয়, সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া তিনি একটি অভিযানও চালাননি। প্রতিটা অভিযানের পেছনে আলাদা আলাদা কারণ আছে। কোনো কারণই অযৌক্তিক-অহেতুক নয়। কিছু ইতিহাস লেখক অভিযোগ করেছেন, ইসলাম প্রচার ও সম্পদ লুণ্ঠনই ছিল সুলতান মাহমুদের আসল লক্ষ্য। এ অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য ভারতে আসেননি এবং ইসলাম প্রচারও করেননি। এর কোনো প্রমাণ নেই। ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য অধিকৃত এলাকায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা অনুকূল অবস্থা বা পরিবেশ সৃষ্টি করে। কিন্তু সুলতান মাহমুদ পাঞ্জাব বাদে বিজিত আর কোনো এলাকা তার রাজ্যভুক্ত করেননি। ভারতে রাজত্ব বিস্তারে তার যে আগ্রহ ছিল না, এ থেকে সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না। সম্পদ লুণ্ঠনের প্রসঙ্গে বলা যায়, এটা তৎকালীন যুদ্ধনীতিতে বৈধ বলেই স্বীকৃত ছিল। বিজিত রাজ্যের ধনরতœ ও সম্পদের ওপর বিজয়ী রাজশক্তির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতো।
সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের পেছনে ধর্মীয় মনোভাব মোটেই সক্রিয় ছিল না। লক্ষ করা গেছে, তিনি শুধু হিন্দু রাজাদের বিরুদ্ধেই অভিযান চালাননি, বিভ্রান্ত মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধেও অভিযান চালিয়েছেন। মুক্তির বিনিময়ে তার কাছ থেকে অর্থও লাভ করেছেন। যেমন কোনো কোনো পরাজিত হিন্দু রাজাদের কাছ থেকেও অর্থ লাভ করেছেন। গজনীর নিরাপত্তাঝুঁকি দূর করা ছাড়া সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের অন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণটি ছিল রাজনৈতিক। সে সময় ধন-সম্পদ মন্দিরে গচ্ছিত রাখার রেওয়াজ ছিল। এমনকি জলদস্যুরাও মন্দিরে তাদের অর্থ জমা রাখত। এসব কারণে কোনো কোনো মন্দির রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। ড. ঈশ্বরী প্রসাদ লিখেছেন, মাহমুদ ভারতে যে মন্দিরগুলো আক্রমণ করেছিলেন, সেগুলো বিপুল, বর্ণনাতীত ধন-রতেœ পূর্ণ ছিল এবং তাদের মধ্যে কয়েকটি ছিল রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের কেন্দ্রস্থল। বলা বাহুল্য, কথিত রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ বন্ধে কেন্দ্রগুলোতে হানা দেয়া সুলতান মাহমুদ জরুরি ও অপরিহার্য মনে করেছিলেন। নেহেরুর মতে, সুলতান মাহমুদ যা করেছেন, তিনি মুসলমান না হয়ে অন্য কোনো ধর্মাবলম্বী হলেও তাই করতেন।

সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ, তিনি নির্বিচারে হিন্দু হত্যা করেছেন এবং ভারত থেকে দাস হিসেবে বহু লোককে নিয়ে গেছেন। এ অভিযোগের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। তৎকালীন বিশ্বে বিজিত রাজ্যে হত্যা ও ধ্বংসের তা-ব করে ভীতি-ত্রাস সৃষ্টি করা অস্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু সুলতান মাহমুদ সেটা করার চেষ্টা করেননি। যুদ্ধকালে প্রতিপক্ষ হত্যায় দোষ ধরা হয় না। এসএলফিন স্টোন বলেছেন, এ রকম ঘটনা কোথাও দেখা যায়নি যে, যুদ্ধ ব্যতীত কোথাও কোনো হিন্দুকে তিনি প্রাণদ- দিয়েছেন। এটাও বিশেষভাবে লক্ষ্যযোগ্য, যুদ্ধে পরাজিত রাজা বা প্রতিপক্ষকে হত্যা করা সেকালে বিরল কোনো ঘটনা ছিল না। অথচ, সুলতান মাহমুদ তার একজন প্রতিপক্ষ রাজাকেও হত্যা করেননি, মৃত্যুদ- দেননি। আনুগত্য স্বীকার, সন্ধি, কর প্রদানের প্রতিশ্রুতি, উপঢৌকন প্রদান ইত্যাদির বিনিময়ে তারা মুক্তি পেয়েছেন। রাজা হিসেবে তাদের ক্ষমতাও বহাল থেকেছে।


মথুরা, বৃন্দাবন প্রভৃতি ধর্মীয় স্থান এবং সোমনাথ মন্দিরে অভিযান, মন্দির ভাঙচুর, বিগ্রহের ক্ষতিসাধনের যে অভিযোগ কতিপয় ভারতীয় ও ব্রিটিশ ইতিহাস লেখক এবং রাজনীতিক করেছেন, তাতে মুসলিম বিদ্বেষ যতটা প্রধান, বাস্তব অবস্থা ও সত্যতা ততটা পরিস্ফুুট নয়। মন্দির যখন যুদ্ধ ক্ষেত্রে পরিণত হয়, অর্থভা-ার হিসেবে আকর্ষণীয় হয়, তখন ভাঙচুর ও বিগ্রহের ক্ষতিসাধন অসম্ভব নয়। ঐতিহাসিক ফিরিশতাসহ বিভিন্ন ইতিহাসবেত্তা লিখেছেন, বিগ্রহের পেটে সোনাদানা, অলঙ্কার লুকিয়ে রাখা হতো, যার ফলে বিগ্রহের ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন হওয়া স্বাভাবিক। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:০৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সিরাতাম মুসতাকিমের হিদায়াত হলো ফিকাহ, কোরআন ও হাদিস হলো এর সহায়ক

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:০৮



সূরাঃ ৬ আনআম, ১৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাত্রলীগের লুঙ্গির নিচে ছিল শিবির, এখন শিবিরের লুঙ্গির নিচে ঘাপটি মেরে আছে গায়ে বোমা বাঁধা সশস্ত্র জঙ্গিরা

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৫


"তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদেশ: চোখে যা দেখেছো, কানে যা শুনেছো, সেগুলো সঠিক নয়, সেসব ভুলে যাও।" - জর্জ অরওয়েল

অনেকদিন ধরে একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি নেই। এতদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী-লীগের ছায়া দায়িত্ব নিয়ে তারেক জিয়া এখন দেশে

লিখেছেন অপলক , ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৬



সংবাদের টাইটেল অনেক কিছু বলে দেয়। ভেতরেটা না পড়লেও চলে। বস্তুত: এতদিন ধরে ভারতের গ্রীন সিগনাল পাচ্ছিলেন না, তাই তারেক জিয়া দেশে আসার সময় বারবার পিছাচ্ছিলেন। এখন চুক্তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভোটের পর, আমরা পাকীদের বুটের নীচে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২



পাকীরা অমানুষ, অপসংস্কৃতির ধারক ও বাহক; ওরা ২টি জাতিকে ঘৃণা করে, ভারতীয় ও বাংগালীদের; ওরা মনে করে যে, বাংগালীদের কারণেই পাকিরা হিন্দুদের কাছে পরাজিত হয়েছে ১৯৭১... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফুড ফর থট!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৫



একটা বিশাল আলোচনাকে সংক্ষিপ্ত আকার দেয়া খুবই কঠিন, বিশেষ করে আমার জন্যে। তারপরেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাবলাম কিছু কথা বলা উচিত। দেশের আভ্যন্তরীন বা আঞ্চলিক রাজনীতিতে ক্রমাগত বড় বড় ভূমিকম্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

×