সারাদিনের ব্যাস্ততার শেষে বাসায় ফিরছিলাম, খুব-ই ক্লান্ত, শ্রান্ত , দুইদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলাম, শোরুমে কাস্টমারদের সাথে কথা বলতে , আর শোরুমের নতুন যোগদানকারীর সাথে কথা বলতেও খুব কষ্ট হচ্ছিলো,
যাহোক, যথারীতি সবকাজ ঠিকভাবে সম্পন্ন করলাম, বাসায় আসতে না আসতেই একজন মামী তার বান্ধুবীদের নিয়ে আসলো জামদানি কিনবে বলে, খুব শান্ত স্বরেই বুঝিয়ে বললাম আমার বাসায় তো জামদানি থাকেনা, থাক্লেও দেখাবো না, আপনি শোরুমে আসেন , তারপর দেখে নেন,
তার বায়না সে বের হয় না, বললাম সমস্যা নাই তো, বাসায় বসেই অনলাইনে বাছাই করে বলুন কোনটি পছন্দ, না, সে অনলাইনেও বসেনা,
তারপর কি আর করা বললাম, রাত ১০টা বাজে আমি কোত্থেকে দিব, ঠিকাছে কাল সকালে ব্যাবস্থা হবে,
এরপর কাস্টমারের ফোন, হাল্কা পিঙ্ক, না না ঠিক পিঙ্ক না, মিষ্টি বাকি কালার , না না ঠিক বাকি কালারও না,
১গ্লাস দুধের মধ্যে আলতা দিলে যে কালার হয়, সে রকম দুধে আলতা কালারের ১টা জামদানি শাড়ি চায় সে,
আমি কালারটা ঠিক ভালোভাবে না বুঝলেও ২২মিনিট তার বিভিন্ন কথা বার্তা শুনাতে চাইলো, শুনলাম, যাহোক কথা শেষ করতে না করতেই
এক বান্ধুবীর ফোন তিনি বিবাহ করতে যাচ্ছেন, আগের যে শাড়ি গুলো অর্ডার করেছেন আপাজান সেগুলোর বদলে বিয়ের জন্য কয়েকটা নিবেন,
তারপর তার ডিজাইন আর কালারগুলো নোট করলাম। মনটা খারাপ হয়েছে খানিকটা কারন তার অর্ডার করা শাড়িগুলো ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে বলে ফোন দিয়েছেন দুপুরে আমার প্রধান তাঁতি ।
যাহোক খাওয়া দাওয়া তো দুপুরে করা হয়না, সেই চিন্তায় মা চিল্লা চিল্লি করছিলো, আমি অনলাইনে বসলাম অনলাইনের প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিচ্ছিলাম, আম্মা খাবার নিয়ে এসে খাইয়ে দিচ্ছিলো,
খুব-ই মাথা ব্যাথা আর জ্বর নিয়ে ঘুমাতে যাব চিন্তা করে তাড়াতাড়ি ল্যাপটপ ছাড়ছিলাম, এমন সময় একটা মেসেজ মনটা দারুন ভাল করে দিল , একজন কাস্টমার দিদি রুপকথার পেজ এ টেক্সট করেছে তার বাবু হয়ে আজ দুপুরে , খুবি ভালো লেগেছে শুনে ,
জয়া দিদি আপনার জন্য আজকের সারা দিন আমার সব ধরনের ক্লান্তি আর অবসন্নতা দূর হয়ে গেলো, দিদি এতোদিন অনেক কষ্ট করে আমার শোরুমে আসতেন, তার কষ্ট দেখে সেদিন মনে হয়েছিলো, কেনো রুপকথা ২য় তলায়, নিচতলায় হলে ভালো হত, যাহোক অনেক শুভকামনা বাবুর জন্য।
জগতের সব বাবুর মায়েদের জন্য আর বাবুর জন্য অনেক শুভকামনা, ভালোবাসা দিবসের রুপকথার পক্ষ থেকে ১ম গিফট মা এর জন্য ।