আজ ১লা ডিসেম্বর।বিজয়ের মাসের শুরু।এই ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের বাঙালি জাতির জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মাস। হাজার বছরে বাঙালির জীবনে এই ডিসেম্বর অত্যনত্ম বীরত্বপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ।
এ জাতি কোনোদিন ভুলতে পারবে না মুক্তিযুদ্ধের সেই বীরত্বের কথা,স্বাধীনতার ঐশ্বর্য ও স্বজন হারানোর মর্মবেদনা।১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রানত্মরে বাংলার আকাশে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল দুশত বছর পর হাজারো সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলার আকাশে আবার উদিত হয়েছে সেই অসত্মমিত সূর্য। এদেশের স্বাধীনতার জন্য এ জাতিকে বহুত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। ৩ লক্ষ মা-বোনের পবিত্র সম্ভ্রম ও ৩০ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে জাতি অর্জন করেছে স্বাধীনতা। পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান পেয়েছে লাল সবুজের পতাকাবাহী স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে পাকবাহিনী গ্রেপ্তার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।ঐরাতে পাক সেনারা ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালির উপর। তারা মানুষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে মেতে ওঠে নৃশংস হত্যাযজ্ঞে। শাসকদের এই ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বসত্মরের মানুষ সোচ্চার হয়ে ওঠে। শুরু হয় পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ। এ সময় এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী কিছু কুলাঙ্গার রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী পাক বাহিনীর সাথে আঁতাত করে নারকীয় হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয়। তারা পাক বাহিনীকে নিয়ে নীরহ মানুষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে মেয়েদের সম্ভ্রম হানি করে।
দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাঙালি ছাত্রজনতা, কৃষক, শ্রমিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, সাহিত্যিকসহ নানা পেশার মানুষ পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলে। স্বপ্নের স্বাধীনতার জন্য সাড়ে ৭ কোটি বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। সারা বাংলাব্যাপী মুক্তিবাহিনীর সাহসী সনত্মানদের শ্বাসরুদ্ধ প্রতিরোধ যুদ্ধে ধরাশায়ী হয়ে পড়ে পাক বাহিনীর সৈন্যরা। ১৯৭১ সালের ষোলই ডিসেম্বর সর্বাত্মক যুদ্ধে পাক সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করে বাঙালির বীর সনত্মানদের কাছে এবং বাংলাদেশ শত্রু মুক্ত হয়।অর্জন করে স্বাধীনতা।১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চে জন্ম নেওয়া দেশটি এই মাসেই বিশ্বের মানচিত্রে একটা সার্বভৌম দেশ হিসাবে নিজের স্থান দখল করে।অন্তরের সকল শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করছি লক্ষ শহীদদের আর তাদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি।