somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পহেলা বৈশাখে অপসংস্কৃতির বলি বাঙালি

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মমিনুল ইসলাম:
পৃথিবীর বুকে আমরা বাঙালিরা অবাক করা এক জাতি।সহজেই আমরা যে কোন কিছু গ্রহণ করি। কোন কিছু গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আমরা কখনো তা তলিয়ে দেখি না।আমরা কখনো বিবেক দিয়ে বিচার করে দেখি না, যেটা আমরা গ্রহণ করছি তা কি আমাদের জন্য উপযুক্ত বা গ্রহণযোগ্য কি-না, এটা আমাদের মূল্যবোধ ও সত্যিকারের ঐতিহ্যের সাথে খাপ খাই কি-না।

কথাগুলো আজ এমন এক সময় বলতে হচ্ছে যখন বাংলাদেশ শুধু রাজনৈতিকভাবেই বিপর্যস্ত না, সাংস্কৃতিকভাবেও চরম দেওলিয়াপনা। অপসংস্কৃতি আজ কুরে করে খাচ্ছে বাংলার তরুণ সমাজকে। গোটা বাঙালি জাতি আজ অপসংস্কৃতি আর ধার করা সংস্কৃতির ধোকায় পড়ে ধুকে ধুকে মরছি অথচ আমাদের বিবেক জাগ্রত হচ্ছেনা।সত্যিকারের বাঙালি সংস্কৃতি ও ধার করা অপসংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য করতে কার্যত আমরা ব্যর্থ। যার চরম মূল্য দিতে হচ্ছে আমাদের নিজেদেরই। এভাবে চলতে থাকলে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যাই আমাদের ভবিষ্য প্রজন্ম কোন অজানা অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে আসা এক তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ আমাদের নতুনভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। তবে এটা আজ নতুন নয়। এর আগেও পহেলা বৈশাখে শ্লীলতাহানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে।তবে এবারের অভিযোগ আগের যে কোন ঘটনার তুলনায় খুবই ভয়ঙ্কর বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটাই প্রমাণ করে আমরা কতটা অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছি।

অভিযোগে বলা হয়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাবিতে আগত ভ্রমণার্থীদের মধ্য থেকে প্রথমে একজন নারীকে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী বিবস্ত্র করার মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায়। এসময় নিরাপত্তারক্ষাকারী বাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে।তাদের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে দুষ্কৃতিকারীরা আরও হিংস্র হয়ে এরূপ আরো কিছু ঘটনা ঘটায়।
ঘটনাচলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী আক্রান্তদের সাহায্যে এগিয়ে যায়। দুষ্কৃতিকারীদের বাধা দিতে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার সভাপতি লিটন নন্দীসহ বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন।

এর আগেও সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে আসা এক তরুণীর উপর ঢাবির কতিপয় বখাটে ছাত্রের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছিল। তখন বিষয়টা মিডিয়াতে হট টপিক থাকলেও তা কার্যত আমাদের কোন শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মানবতাবাদি, নারীবাদি ও প্রগতিশীল সমাজের লোকেরা অনেক কথা বলেছিলো। আমাদের প্রশ্ন হলো তারা কি কোন এর সমাধান দিতে পেরেছে। প্রশাসনও কি পেরেছে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে আসা ঐ সমস্ত নারীদের নিরাপত্তা দিতে? তাহলে এর সমাধান কোথায়?

আজ যখন বাংলাদেশের আলেম সমাজ সংস্কৃতির নামে এইসব অপসংস্কৃতির বিরদ্ধে কথা বলছে, নারীদের নিরাপত্তার জন্য অবাধ মেলামেশার বিরুদ্ধে কথা বলছে তখন আমরা তাদের মৌলবাদি, নারী বিদ্বেষী ও জঙ্গিবাদি বলে কণ্ঠস্বর রোধ করছি।তাই আমাদের সাধারণ মানুষের আজ ভেবে দেখার সময়, যারা আজ গণতান্তিক, মানবিক, আধুনিক ইত্যাদি অধিকারের নামে আমাদের উপর অপসংস্কৃতিকে চাপিয়ে দিয়েছে তাদের উদ্যেশ্য সৎ নয়।তারাও হয়ত বিদেশী কোন প্রভুর এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে।

ওই সমস্ত ঘটনার জন্য আজ আমরা অবাধ মেলামেশা ও বাঙালি সাজের নামে নগ্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করাকেই একমাত্র দায়ি করতে পারি।এই সমস্ত ঘটনার পেছনে দুস্কৃতকারিরা যেমন দায়ি তেমনি যারা ভুক্তভোগী হচ্ছি তারাও সমানভাবে দায়ি। কেন আমরা নারী পুরুষের জৈবিক পার্থক্য ভুলে একই সাথে উম্মাদনায় মেতে উঠছি। এই সংস্কৃতি যে বাঙালির তাই বা কে বললো। তাই যদি হতো তাহলে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা একই দিনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে না কেন? জানি কেউ এর সদোত্তর দিতে পারবে না।

তাই আজ বোনেদের প্রতি অনুরোধ; যাদের কথায় আপনারা অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে নিমজ্জিত হয়ে নিজেদের সম্মান-সম্ভ্রম হারাতে বসেছেন তারা আপনাদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং তারা কখনো নিরাপত্তা দিতে পারবে না। বরং তাদের দ্বারা নারীদের লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনা অহরহ। তাই নিজরো নিজেদের রক্ষা করার জন্য ইসলামী অনুশাসন মেনে চলুন, যা আপনার উপকার ছাড়া ক্ষতি করবে না। ইহকালীন সফলতার পাশাপাশি পরজগতেও পেতে পারেন চূড়ান্ত সফলতা।

অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। ছেলে মেয়েদের ইচ্ছা স্বাধীন অপসংস্কৃতির স্রোতে ছেড়ে দেয়া যাবে না।তাদেরকে অন্তত ব্যক্তিগত উদ্যোগে হলেও ইসলামী শিক্ষা দিন। তাদের উজ্জল ভবিষ্যৎ গড়তে ইসলামি আদর্শে গোড়ে তুলুন। তাহলেই হয়তো আমরা পেতে পারি সুন্দর বাংলাদেশ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×