সাম্যবাদের এক দেশে সূর্য ডুবছিলো, সবাই কাজ কর্ম সেরে ফিরছে ঘরে। পরিবারের কাছে ফিরে যাবার তাড়া সবাইকে ভূলিয়ে দিচ্ছে সারাদিনের সব ক্লান্তি।
পরিবারগুলো যৌথ খামার। তাই বলে কি একান্ত বলে কিছুই নেই? আছে....
ঠিক একথাই ভাবছিলো একচল্লিশ বছরের আসিমভ। সে কারখানা থেকে বের হয়েছে, রাস্তার মানুষ দেখতে দেখতে ভাবছিলো আজ কার বাড়িতে সে খাবার চুরি করতে যাবে!!
ব্যাপারটা আরেকটু খোলাসা করা যাক, আসিমভ চোর কিন্তু নয়। সে একজন ভালো মানুষ, এবং কঠোর পরিশ্রমি। তবুও তাকে খাবার চুরি করতে হয়।
কেননা দেশটা যৌথ খামার হওয়ায় এখানে সবার খাবার, কাপড়, বাসা সমান।কেউ বেশি কেউ কম, এমন নিয়ম নেই এখানে। তার ভাগে যে খাবার পড়ে, তা নিতান্তই তার জন্য অপ্রতুল। কোন বেলাতেই তার পেট ভরেনা ঠিকমত। তিন বেলা চুরি করা সম্ভব নয়, তাই অন্তত রাতের বেলাতে সে চুরি করে।
সে কি অপরাধি? সেটায় পরে আসছি...
এবার পরিচয় করিয়ে দেই কারিমভের সাথে। সে একজন রঙ মিস্ত্রি, এবং তার আবাসও যৌথ খামার। চির কুমার এই লোকটির বয়স ধরে নিলাম সাতচল্লিশ।
একা বাড়িতে সে মাঝে মাঝেই খানিকটা কষ্টে ভোগে। সে একা এজন্য কষ্ট নয়, বরং সে এই ভেবে কষ্ট পায় যে, প্রতি রাতেই তার ভাগের খাবারের
এক তৃতীয়াংশ নষ্ট হয়। সে এতটা খেতে পারেনা। প্রতিরাতে সে তার অতিরিক্ত খাবার ঘরের বাইরে রাস্তায় ফেলে দেয়, শেয়াল-কুকুরে খেয়ে যাক, এই ভেবে।
সে একটু ভাবুক শ্রেনীর আস্তিক মানুষ। সে খেয়ালই করেনি যে তার খাবার ফেলে দেয়া আইনরক্ষিদের নজরে পড়েছে। যথাসময়ে তাকে সরকারের তরফ থেকে তলব করা হলো।
সে মনে মনে ভেবে রেখেছে, বিচারককে বলবে যে সাম্যবাদ মানুষের সাথে, প্রকৃতির সাথে বেখাপ্পা, কারন সকলেরই চাহিদা, রুচি, এবং শারিরিক মানসিক সামর্থ আলাদা।
একই সময়ে খাবার চুরির দায়ে আটক হলো আমাদের কঠোর পরিশ্রমি চোর আসিমভ।
অদ্ভুত ভাবে তাদের দু'জনেরই বিচারের দিন - তারিখ মিলে গেলো...
প্রিয় পাঠক, এবার আপনিই বলুন। আদালতে কি ঘটতে চলেছে...
চলবে......... সত্যি চলবে তো?
এই গল্পের স্থান-কাল-পাত্র সব কাল্পনিক, বাস্তবের সাথে মিলে গেলে তা নিতান্তই কাকতালিয়
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১২ রাত ৯:৩৯