ছানাটা রাতে ঘুমাতে চায়না। ঘুমাতে ঘুমাতে রাত সাড়ে বারোটা। মাঝে মাঝে তাকে ভয় দেখানো লাগে। জুজু বুড়ির ভয় না , শাকচুন্নীর ভয় না। এইসবে তার ভয় নেই।
বৃষ্টি হলেই বাইরে ঘ্যাঁঙোর ঘ্রাঙ ব্যাং ডাকে। ছানাটা কান খাড়া করে শোনে । আমি বলি - "শোন বীরব্রতী, না ঘুমালে কিন্তু ব্যাঙ এসে তোর "নুনথুন পাখি' খেয়ে নিবে।" বলা বাহুল্য, 'নুনথুন পাখি' নিয়ে সে যথেষ্ট সিরিয়াস! সকালবেলা ঘুম ভাঙ্গার সময় 'নুনথুন পাখি' যখন কাঠি লজেন্সের মত হয়ে যায় তখন কোলের ভেতর ঢুকে 'বাববাব শীশ ' বলতে বলতে আমার কোল ভিজিয়ে দেয়। আমি রেগে বলি (কপট রাগ) , বাববাব এটা কি হলো? সে তখন "নুনটুন পাখি'র দিকে আঙ্গুলের ইশারায় বলে-- শীশ শীশ।
ব্যাঙের 'নুনথুন পাখি" খাওয়া নিয়ে সে বেশ ভয় পায়। মাঝে মাঝে কেঁদেও ফেলে । যখন সে না ঘুমোতে চায় , যখন ব্যাঙ এসে "নুনথুন পাখি' খেয়ে নেবে বলা হয় তখন তড়িৎ গতিতে 'নুনথুন পাখি' হাত দিয়ে ঢাকে, চোখও বন্ধ করে। ঘুমিয়ে যায়।
গত পরশু রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে দেখি একটা ব্যাঙের বাচ্ছা লাফিয়ে লাফিয়ে যাচ্ছে। আমি ছানাটাকে ডেকে বলি, "নিহাল দেখতো এটা কি? " নিহাল চুপ করে তাকিয়ে দেখে। আমি বলি, "এটা হলো ব্যাঙ। " ছানাটা আমার কথা শুনে ব্যাঙের পিছু নেয়। যেন ধরেই ছাড়বে ।
ব্যাঙ চেনানোই কাল হলো। বীরব্রতী নিহালকে ব্যাঙের ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ানো যাচ্ছে না। সে জেনে গেছে, সামান্য ব্যাঙ তার 'নুনথুন পাখি' খাওয়ার 'যোগ্যতা' রাখে না।
পৃথিবীর সমস্ত ছানারা ভালো থাকুন । রাত জাগুক কম বেশি । বকাঝকার দরকার নেই অতো । নিরাপদে থাকুক তাদের 'নুনথুন পাখি' । কারণ ব্যাঙের চেয়ে মানুষ অনেক ভয়ংকর।
বাংলাদেশের মা বাবা কিংবা পরিবার মেয়ে সন্তান নিয়ে খুব চিন্তায় থাকেন। কিন্তু ছেলে সন্তান নিয়ে ততোটা ভাবেন না। ছেলে সন্তানের নিরাপত্তাও খুব জরুরী । সময় থাকতে সচেতন হোন।
শুভরাত্রী।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৯